সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

শীর্ষ ১০ কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজার লিমিট নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যার অবসান ক্রমাগত দরপতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ায় গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা ভালো রিটার্ন পেয়েছেন। সপ্তাহজুড়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। পাশাপাশি আলোচ্য সময়ে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে শীর্ষ দশ কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার কোটি টাকার বেশি।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইএক্স সূচকটি আগের সপ্তাহের তুলনায় ৩৩১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ৩১২ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৯৮১ পয়েন্টে। ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১১৯ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়ে হাজার ২৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ১৪৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬৬ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৩০৮ পয়েন্টে।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে হাজার ৫৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ১৬৯ কোটি টাকার। সেই হিসাবে এক্সচেঞ্জটির সাপ্তাহিক লেনদেন হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা বা ৫৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক গড়ে হাজার ১১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল ৬৩৩ কোটি টাকা। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৭৩টির, কমেছে ৭টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৮টির আর লেনদেন হয়নি ৭টি কোম্পানির শেয়ার।

এদিকে গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে লাখ ১৩ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকায়। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে মূলধন ছিল লাখ ৯২ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন বেড়েছে ২১ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা বা দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মধ্যে গত সপ্তাহ শেষে শীর্ষ দশ কোম্পানির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে লাখ ৯২ হাজার ১১ কোটি টাকায়। যেখানে সপ্তাহের শুরুতে দশ কোম্পানির বাজার মূলধন ছিল লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে শীর্ষ ১০ কোম্পানির বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার কোটি টাকা।

ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের দশমিক ৯৬ শতাংশ নিয়ে গত সপ্তাহে শীর্ষে রয়েছে তালিকাভুক্ত টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড। আগের সপ্তাহের তুলনায় সময় কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকায়। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল ৩৮ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে দশমিক ৯০ শতাংশ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ওয়ালটন হাইটেক পার্ক ইন্ডাস্ট্রিজ। গত সপ্তাহ শেষে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৯০১ কোটি টাকায়, যা ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ৩১ হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির মূলধন বেড়েছে হাজার ৫৩২ কোটি টাকা বা দশমিক ৮৯ শতাংশ।

দশমিক ২৬ শতাংশ বাজার মূলধন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিএটিবিসি। গত সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায়। যেখানে আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ছিল ২৭ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৪৬৪ কোটি টাকা বা দশমিক ৬৭ শতাংশ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে গত সপ্তাহে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে দেশের ওষুধ খাতের শীর্ষ কোম্পানি স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। এক্সচেঞ্জটির মোট মূলধনের দশমিক ২৪ শতাংশই ছিল কোম্পানিটির দখলে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল ১৮ হাজার ৬১৮ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৩৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৪৫ শতাংশ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে গত সপ্তাহে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে বহুজাতিক কোম্পানি রবি আজিয়াটা লিমিটেড। গত সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৫২৩ কোটি টাকা বা দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত সপ্তাহ শেষে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭১৩ কোটি টাকায়। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল ১৫ হাজার ১৯০ কোটি টাকা।

বাজার মূলধনের দিক থেকে পরের অবস্থানে রয়েছে ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি রেনাটা লিমিটেড। কোম্পানিটির বাজার মূলধন গত সপ্তাহে ১২১ কোটি টাকা বা দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকায়। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১৩ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ইউপিজিডিসিএল) বাজার মূলধনের দিক থেকে সপ্তম অবস্থানে রয়েছে। গক সপ্তাহে কোম্পানিটির বাজার মূলধন ৪২৩ কোটি টাকা বা দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮০৮ কোটি টাকায়। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল ১৩ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা।

পরের অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের বাজার মূলধন গত সপ্তাহ শেষে ১১ হাজার ২০৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন ছিল ১০ হাজার কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার ২০০ কোটি টাকা বা ১২ শতাংশ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে নবম অবস্থানে রয়েছে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। গত সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে হাজার ৩৬৮ কোটি টাকা। যেখানে আগের সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন ছিল হাজার ৯২০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে বিবিধ খাতের বহুজাতিক কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৪৪৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৬৬ শতাংশ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে শীর্ষ দশ কোম্পানির সর্বশেষে রয়েছে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৭৬৬ কোটি টাকা বা ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়ায় হাজার ১৪১ কোটি টাকায়। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন