একদিনেই সূচক কমেছে ১ শতাংশের বেশি

সপ্তাহের শুরুতেই পুঁজিবাজারে বড় দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে অবনতির কারণে স্নায়ুচাপে ভুগছেন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা। এতে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রতিদিনই শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকালও সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেয়ার বিক্রির চাপে শেষ পর্যন্ত পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন শতাংশের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে সূচক। পাশাপাশি স্টক এক্সচেঞ্জের দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বেশকিছু সূচক চাপে থাকার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। এর মধ্যে গ্যাসস্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি, মুদ্রাস্ফীতির চাপ, টাকার অবমূল্যায়নের মতো বিষয়গুলো বিনিয়োগকারীদের স্নায়ুচাপে ফেলে দিয়েছে। ফলে যখনই সূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে তখনই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। ক্রেতা সংকটের কারণে প্রবণতার মাত্রা আরো তীব্রতর হয়ে উঠছে। এতে ইতিবাচক প্রবণতায় লেনদেন শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত দিনশেষে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে পুঁজিবাজারে লেনদেন শেষ হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর পর মিনিট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। কিন্তু এর পর থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে দরপতন হতে থাকে, যা লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ফলে দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ৭৪ পয়েন্ট কমে হাজার ৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ১২৭ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ৩৩ পয়েন্ট কমে হাজার ১৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২০১ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১৭ পয়েন্ট কমে হাজার ৩২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৩৪৫ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল ৪৭১ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৬৭৭ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ৪২টির, কমেছে ৩১৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২২টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১১ দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। আর ব্যাংক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৯৭ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৬৬৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১০ হাজার ৭৬৪ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৬১ পয়েন্ট কমে ১৭ হাজার ৮০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৭ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৬৯টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টির, কমেছে ২০৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন