মূল্যস্ফীতি ও মন্দার শঙ্কা সত্ত্বেও ঊর্ধ্বমুখী বৈশ্বিক পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়েই মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী। যুদ্ধ আরো দীর্ঘায়িত হলে সামনে বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। অবস্থায়ও গত সপ্তাহে ইউরোপ, আমেরিকা এশিয়ার প্রধান পুঁজিবাজারগুলোতে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেছে। তবে সময় চীনের পুঁজিবাজার ছিল নিম্নমুখী।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। যদিও অনেকেই মনে করেছিলেন এটি ১০০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার প্রত্যাশার চেয়ে কম বাড়ার কারণে পুঁজিবাজারে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া সিটিগ্রুপ প্রত্যাশার চেয়ে ভালো আর্থিক পারফরম্যান্স দেখিয়েছে এবং খুচরা পর্যায়ে বিক্রি বাড়ার বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করে তুলেছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট তা গ্রহণ করেননি। এতে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন দেশটির রাজনৈতিক সংকট হয়তো কেটে যাবে। কভিডের কারণে দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দশমিক শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ১৯৯২ সালের পর সর্বনিম্ন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশটির পুঁজিবাজারে।

ইউরোপের পুঁজিবাজারে যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবারে ১১৯ পয়েন্ট বেড়েছে। জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ৩৪৫ পয়েন্ট এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচকে ১২১ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। ডেনমার্ক, পোল্যান্ড, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, বেলজিয়াম, পর্তুগাল, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, লুক্সেমবার্গ নেদারল্যান্ডসের পুঁজিবাজারও ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ৬৫৮, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৭৩ নাসডাক সূচক ২০১ পয়েন্ট বেড়েছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, কানাডা ভেনেজুয়েলার পুঁজিবাজারও সময়ে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।

এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্সেই ২২৫ সূচক গত শুক্রবার ১৪৫ পয়েন্ট বেড়েছে। সময়ে ভারতের বিএসই সেনসেক্সে ৩৪৫ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। অন্যদিকে চীনের সাংহাই সূচক ৫৪   ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক ৪৫৩ পয়েন্ট হারিয়েছে। এছাড়া হংকং দক্ষিণ কোরিয়ার সূচকগুলোও ছিল নিম্নমুখী। তবে সময় তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর শ্রীলংকার পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের পুঁজিবাজারে নিম্নমুখিতা দেখা গেছে। সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত কাতারের পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারালেও জর্ডান ওমানের পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচকই পয়েন্ট হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪২ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে হাজার ৩২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৩৬৭ পয়েন্টে। সূচকের পতনে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, আইএফআইসি ব্যাংক জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের শেয়ারের। ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত সপ্তাহ শেষে সূচকটি কমে হাজার ২৭৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ২৯৪ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস আগের সপ্তাহের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৬ শতাংশ কমে হাজার ৩৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সমাপ্ত সপ্তাহে যা ছিল হাজার ৩৮৮ পয়েন্টে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন