ঈদুল আজহার বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই পুঁজিবাজারে নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঈদের পরেও গত দুই কার্যদিবস একই ধারায় লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল শেয়ার বিক্রির চাপে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সবগুলো সূচক পয়েন্ট হারিয়েছে। তবে এদিন এক্সচেঞ্জটিতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক কমেছে। তবে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে ৯ মিনিট পর্যন্ত পয়েন্ট যোগ হলেও পরে তা কমতে থাকে। দিন শেষে প্রায় ৩১ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩২৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৬ হাজার ৩৫৫ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, রবি আজিয়াটা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, ফরচুন সুজ, গ্রামীণফোন, সামিট পাওয়ার ও ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ারের।
ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ১১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল ২ হাজার ২৮৪ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে প্রায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল ১ হাজার ৩৮৬ পয়েন্টে।
ডিএসইতে গতকাল ৭০২ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল ৬৭৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৭৭টির, কমেছে ২৫৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৫টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।
খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দখলে নিয়েছে প্রকৌশল খাত। ৯ দশমিক ৭ শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। গতকাল পাট খাতের শেয়ারে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে, দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া জীবন বীমা খাত ও বিবিধ খাত থেকে যথাক্রমে দশমিক ৫ ও দশমিক ৩ শতাংশ হারে ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। বাকি সব খাত থেকেই গতকাল নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে, ১ দশমিক ৬ শতাংশ। এছাড়া সিরামিক খাত থেকে ১ দশমিক ৪ শতাংশ ও বস্ত্র খাত থেকে ১ দশমিক ৩ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে গতকাল। অন্যদিকে সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৪৩ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ১৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ১৯৮ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ৭২ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৭০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬১টির, কমেছে ১৭৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩২টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে মোট ২২ কোটি ৪২ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
