উত্তর আমেরিকা রুট

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইট কভিডপূর্ব স্তরকে ছাড়িয়েছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীতে সব থেকে বিপর্যস্ত হয় উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলো। নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমায় সম্প্রতি ব্যবসা পুনরুদ্ধার শুরু হয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর। অনেক ক্ষেত্রেই ফ্লাইটের সংখ্যা কভিডপূর্ব স্তরকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় উত্তর আমেরিকায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস কভিডপূর্ব স্তরের তুলনায় আরো বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এক্ষেত্রে ফ্লাইটের সংখ্যা প্রতিদ্বন্দ্বী উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা হংকংয়ের ক্যাথে প্যাসিফিককেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। খবর নিক্কেই এশিয়া।

ব্রিটিশ বিশ্লেষক সংস্থা সিরিয়ামের তথ্য বলছে, চলতি বছরের জুনে সিঙ্গাপুর থেকে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের মোট ফ্লাইট ছিল কমপক্ষে ৫৩২টি। এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ ফ্লাইট পরিচালনা করে উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাটি। তবে জুনে ফ্লাইটের সংখ্যা ওই সময়ের তুলনায় শতাংশ বেশি ছিল।

বিষয়ে ডিবিএস ব্যাংকের বিশ্লেষক জেসন সাম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বহু গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে শুধু সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। ২০২০ সালের জানুয়ারির তুলনায় বছর জুনে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাটির যাত্রী সক্ষমতা ১৩ শতাংশ বেশি ছিল। ব্যবসা অবসর উভয় কারণেই ফ্লাইটের চাহিদা বেড়েছে যাত্রীদের মধ্যে।

সিঙ্গাপুরের একমাত্র বৃহত্তম প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের উৎস যুক্তরাষ্ট্র। ডিবিএসের তথ্য বলছে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের মোট কভিডপূর্ব আয়ের ১৫-২০ শতাংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত ফ্লাইটগুলো থেকে। ফলে উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাটির প্রধান বাজার চীনের প্রায় সমপর্যায়ে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র।

জাপানের রাজধানী টোকিও এবং দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের সীমান্তে বিধিনিষেধের ফলে সুবিধা ভোগ করছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। এমন সময়ে উত্তর আমেরিকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান পারাপার মাধ্যম হিসেবে আধিপত্য বিস্তার করছে সংস্থাটি।

দীর্ঘ সময় ধরে হংকংয়ের সঙ্গে তুমুল প্রতিযোগিতা রয়েছে সিঙ্গাপুরের। তবে হংকংয়ের প্রধান উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থা ক্যাথে প্যাসিফিককে টক্কর দিয়ে সর্বোচ্চসংখ্যক ফ্লাইট পরিচালনা করেছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। জুনে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত ১৩০টি ফ্লাইট পরিচালনা করে ক্যাথে প্যাসিফিক।

সিঙ্গাপুর থেকে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৮ ঘণ্টার সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। বছরের মার্চে নিওয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ফ্লাইট পরিষেবা আবারো চালু করে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস। এছাড়া সান ফ্রান্সিসকো লস অ্যাঞ্জেলেস পর্যন্ত সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে উড়োজাহাজ সংস্থাটি। গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন গন্তব্য সিয়াটল যুক্ত হয়। পাশাপাশি গত ১২ বছরে প্রথমবারের মতো ভাঙ্কুভার পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বছরের এপ্রিলে ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের সঙ্গে কোড শেয়ারিং চুক্তি নয়টি থেকে বেড়ে ১৯টি শহরে উন্নীত করা হয়।

এদিকে উত্তর আমেরিকার পাশাপাশি অন্যান্য গন্তব্য পর্যন্তও ফ্লাইট পরিচালন সক্ষমতা কভিডপূর্ব স্তরে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষ্য সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব গন্তব্যের ফ্লাইট সক্ষমতা ২০২০ সালের জানুয়ারির ৬৭ শতাংশে পৌঁছনোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) তথ্য বলছে, বছরের শেষ নাগাদ বৈশ্বিক আকাশ ভ্রমণে যাত্রীসংখ্যা কভিডপূর্ব স্তরের প্রায় ৮০ শতাংশে পৌঁছনোর প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আকাশ ভ্রমণে যাত্রীদের আগ্রহ ফিরলেও উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় ব্যবসা পুনরুদ্ধারে বেগ পেতে হচ্ছে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে। কঠোরভাবে শূন্য কভিড নীতি অনুসরণ করছে চীনা সরকার। জাপানেও রয়েছে সতর্ক ব্যবস্থা। তবে এর মধ্যে পুরোদমে ফ্লাইট পরিষেবা চালু করেছে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন