কোরবানির মৌসুমে ন্যায্য দামে বিক্রির আশায় ১০টি গরু কিনেছিলেন শাহজাদপুরের মোবারক মিয়া। সারা বছর উত্কৃষ্ট মানের সব প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে লালন-পালন করেন গরুগুলো। যার ফলে ঈদুল আজহার আগে গরুগুলো বেশ মোটাতাজা হয়ে ওঠে। কিন্তু যাত্রাপথে নানা রকম সমস্যা ও অনেক হাট ঘুরে দালালের চক্করে পড়ে বেশ আশাহত হতে হয় তাকে। অবশেষে যখন গরুগুলো হাটে রাখার ব্যবস্থা করলেন, ততক্ষণে সারাদিনের ধকলে গরুগুলো বেশ দুর্বল ও রোগাক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। এর ফলে হাটে অনেক ক্রেতাই আর কেনার আগ্রহ দেখান না। শেষে চারটি গরু নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয় তাকে।
সারা বছর পরম যত্নে গরু লালন-পালন করে সঠিক দাম না পেয়ে হতাশ হতে হয় মোবারক মিয়ার মতো অসংখ্য খামারিকে। তাছাড়া জায়গা ভেদে মধ্যস্থতাকারী থাকার কারণে গরু বিক্রির পর লাভ পান অতি সামান্য। বছরের পর বছর এ সমস্যা খামারিদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে।
মোবারক মিয়ার মতো খামারিদের এসব সমস্যা সমাধানে আদর্শ প্রাণিসেবা এনেছে ‘যৌথ খামার প্রকল্প’। এর আওতায় অ্যাপের মাধ্যমেই গবাদিপ্রাণীর লালন-পালন থেকে ক্রয়-বিক্রয় সবকিছুই সম্পন্ন করা সম্ভব।
আদর্শ প্রাণিসেবার কর্মকর্তারা জানান, বিনিয়োগকারীর টাকা দিয়ে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের তত্ত্বাবধানে বাছাই করে গরু কেনে আদর্শ প্রাণিসেবা। আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিতে গবাদি প্রাণীগুলোকে আনা হয় বীমা সেবার আওতায়। স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে ও যেকোনো ধরনের রোগ এড়াতে গরুগুলোকে টিকা ও ওষুধ খাওয়ানো হয়। এরপর পাঁচ-ছয় মাস গরু লালন-পালনের সময় প্রাণিসেবা ভেটের চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।
লালন-পালনের সময় গরুগুলোর চিকিৎসার খরচ বহন করেন খামারি। গরুগুলো যখন বিক্রি করা হয়, তখন লাভের ৬০ শতাংশ দেয়া হবে খামারিকে। এর ফলে প্রান্তিক খামারিরা গরু না কিনেই শুধু লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হতে পারেন। আদর্শ প্রাণিসেবা খামারিদের থেকে সরাসরি আঞ্চলিক হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও ক্রেতাদের কাছে গরু বিক্রি করে থাকে। যার ফলে কোনো মধ্যস্থতাকারী না থাকায় খামারিরা সর্বোচ্চ লাভ পেয়ে থাকেন।
আদর্শ প্রাণিসেবার কর্মকর্তারা বলেছেন, এবারের কোরবানি ঈদে প্রাণিসেবা যৌথ খামার প্রকল্পের আওতায় থাকা গরুগুলো বিক্রি করা হবে প্রাণিসেবা শপের (pranishebashop.com.bd/qurbani_haat) মাধ্যমে।
আদর্শ প্রাণিসেবার এমডি ও সিইও ফিদা হক বলেন, যৌথ খামার প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রান্তিক ক্ষুদ্র খামারিদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রাম পর্যায়ে খামার পদ্ধতিকে সহজ করা। সর্বোপরি আমাদের পল্লী অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি খামারি ভাইদের ভাগ্যোন্নয়নেও কার্যকর ভূমিকা রাখা।