উড়োজাহাজ সরবরাহে বিলম্ব

চাহিদা বাড়লেও এয়ারলাইনস খাতের পুনরুদ্ধার ধীর হবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীর বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে পুনরুদ্ধার হচ্ছে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বাড়ছে ভ্রমণের। অবস্থায় উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জেট সরবরাহে বিলম্ব এয়ারলাইনস খাতের পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত করবে। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) প্রধান কথা জানান। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।

আইএটিএর মহাপরিচালক উইলি ওয়ালশ বলেন, উৎপাদন সমস্যা থাকায় বোয়িংয়ের ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সরবরাহ স্থগিত রয়েছে। অন্যদিকে কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে এয়ারবাসের বিরোধ এ৩৫০ উড়োজাহাজ সরবরাহে প্রভাব ফেলেছে। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণের চাহিদা বাড়লেও এয়ারলাইনগুলো সেগুলোর সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না।

তিনি আরো বলেন, উড়োজাহাজের বিলম্ব সরবরাহ কভিড-১৯ মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত খাতটির পুনরুদ্ধারের গতি কমিয়ে দেবে। কেননা - কারণে চাহিদার তুলনায় উড়োজাহাজ সরবরাহে অসামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে। কারণ, সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশির বিষয়টি পরিষ্কার। চাহিদার তুলনায় প্রয়োজনীয় উড়োজাহাজ না থাকার কারণে এক পর্যায়ে ফ্লাইটগুলোর ভাড়া বাড়ানো হতে পারে।

উইলি ওয়ালশ বলেন, খাতের অন্যান্য সমস্যার মধ্যে পর্যাপ্ত পাইলটের ঘাটতির বিষয়টিও রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে এয়ারলাইনস শিল্প কত দ্রুত সময়ের মধ্যে করোনা-পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে আসতে পারে এবং প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরতে পারে, সেটিও দেখার বিষয়।

ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ক্রমবর্ধমান চাহিদা, অধিকাংশ দেশের বাজারে ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার, কম বেকারত্ব ব্যক্তিগত সঞ্চয় ভ্রমণের চাহিদা অত্যধিক বাড়াবে, যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে ভ্রমণকারীর সংখ্যা নভেল করোনাভাইরাস-পূর্ববর্তী পর্যায়ের ৮৩ শতাংশে উন্নীত হবে।

কভিড-১৯ মহামারীর দুই বছরের প্রভাব শেষে বর্তমানে বিশ্বের এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলো ডলারের উচ্চহার, জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্য, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি কর্মী সংকটের মতো সমস্যার মুখে রয়েছে। ওয়ালশ বর্তমান সময়ের সমস্যাগুলোকে কভিড-১৯ মহামারীকালীন কার্যক্রম পরিচালনার কঠিন পরিস্থিতির তুলনায় স্বাভাবিক বলে মনে করছেন। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এয়ারলাইনসগুলো উড়োজাহাজের সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাই করতেও বাধ্য হয়েছিল।

তিনি বলেন, বর্তমানে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো জটিল হলেও গত দুই বছরে খাত যে পরিস্থিতি পার করে এসেছে তার তুলনায় খুব বেশি প্রভাব সৃষ্টিকারী নয়। তাই আমি বর্তমানের সবকিছুকে প্রেক্ষাপটে রাখছি। জ্বালানি তেলের দাম ১০০ ডলারের বেশি হওয়ায় তা এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ জেট ফুয়েল তাদের মোট ব্যয়ের ২৫ শতাংশ। তবে ওয়ালশ আশা প্রকাশ করে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম খাতের পুনরুদ্ধারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না। জ্বালানি তেলের দাম যখন বেড়েছে তখন শিল্প খাতগুলো আয় করেছে। আবার যখন দাম কমেছে তখন শিল্প খাতগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।

চলতি বছর বিশ্বের এয়ারলাইনস শিল্প লোকসানের পরিমাণ ৯৭০ কোটি ডলার কমিয়ে আনার বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছে। যেখানে ২০২১ সালের অক্টোবরে খাতের লোকসানের পরিমাণ ছিল হাজার ১৬০ কোটি ডলার। ২০২০ সালের ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি ২০২১ সালের হাজার ২১০ কোটি ডলার লোকসানের তুলনায় কম। আইএটিএর সর্বশেষ পূর্বাভাসের তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালে খাতের মুনাফা সীমানার মধ্যে থাকবে।

ওয়ালশ বলেন, এয়ার কার্গোর ব্যাপক চাহিদার কারণে মধ্যপ্রাচ্যের ব্যালান্স শিট খাতজুড়ে চলমান সংকটাবস্থা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। আন্তর্জাতিকের পাশাপাশি দূরপাল্লার ফ্লাইট চালু হওয়ায় অনেক আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে। কিছু এয়ারলাইনস ২০২৩ সালে রেকর্ড মুনাফা অর্জনের পূর্বাভাসও দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন