বুদ্ধিদীপ্ততার জন্যই এখনো কাইজারের চাকরি টিকে আছে

আফরান নিশো, ওটিটি ছোট পর্দার জনপ্রিয় মুখ। টিভি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অভিনয়ে যাত্রা ২০০৩ সালে। ৮০০-এর বেশি নাটক, টেলিফিল্ম ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন। কাইজার নামে একটি ওয়েব সিরিজে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন। গেমে আসক্ত এক গোয়েন্দা চরিত্রে হাজির হচ্ছেন কাইজারে। সম্প্রতি এর ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। কাইজার সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাত্কার নিয়েছেন মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

কাইজারের ট্রেলার মুক্তি পেল। কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

খুবই ভালো। ফার্স্টলুক রিভিলের পর দর্শক সাদরে গ্রহণ করেছে। ট্রেলারটাও সমাদৃত হয়েছে। সর্বোপরি পুরো সিরিজটাই দর্শকের ভালো লাগবে। কাইজার আমার কাছে বেশ নতুন ধরনের একটি চরিত্র। কাজটা আমি বেশ আগ্রহ নিয়ে করেছি। আশা করছি দর্শকও কাজটা উপভোগ করবে।

কবে কোথায় মুক্তি পাচ্ছে কাইজার?

জুলাই সিরিজটি মুক্তি পাবে ওটিটি প্লাটফর্ম হইচইয়ে।

কাইজারের বিশেষত্ব কী?

এডিসি কাইজার চৌধুরী একটি গোয়েন্দা চরিত্র। জেমস বন্ড, শার্লক হোমস যেমন বিদেশী চরিত্র, ফেলুদা, ব্যোমকেশ যেমন বাংলা ভাষায় রচিত পশ্চিমবঙ্গের চরিত্র; কাইজার তেমনি বাংলা ভাষায় রচিত বাংলাদেশের চরিত্র। সে একজন ভিডিও গেমে আসক্ত হোমিসাইড ডিটেক্টিভ। হোমিসাইড ডিটেক্টিভ হলেও সে রক্ত ভয় পায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং ভিডিও গেমে আসক্তির কারণে তার ব্যক্তিগত জীবন বিপর্যস্ত। ডিপার্টমেন্টেও তার সুনাম নেই। কিন্তু ডিটেক্টিভ হিসেবে সে প্রথম শ্রেণীর। বলা যায় বুদ্ধিদীপ্ততার জন্যই এখনো কাইজারের চাকরি টিকে আছে।

তাহলে কি কাইজারের আরো সিজন আসবে?

হ্যাঁ, এটা প্রথম সিজন। দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ সিজন আসতে পারে। এমন চিন্তাভাবনা আছে।

কীভাবে কাইজারে যুক্ত হলেন?

সিরিজটির পরিচালক তানিম নূর। দুই বছর আগে বসুন্ধরার একটি রেস্টুরেন্টে আমাদের নিয়ে কথা হয়। তারপর ব্যাটে বলে মিলে গেলেই কাজে নেমে পড়ি।

কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

নির্মাতা তানিম নূরের সঙ্গে আগে পরিচয় ছিল না। কাজটা করতে গিয়েই পরিচয়। তার টিম খুব গোছানো। কাজের ক্ষেত্রে সবাই ছিল হেল্পফুল। কোথাও তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। কাইজারে কাজের অভিজ্ঞতা দারুণ।

কাইজার কি শুধুই গোয়েন্দা সিরিজ?

না। কাইজারে সবই আছে। গোয়েন্দা আবহের বাইরেও পারিবারিক গল্প আছে। একজন মানুষের ব্যক্তিজীবনের সব ধরনের আশা-হতাশার গল্প আছে। গোয়েন্দা গল্পে চরিত্রের ব্যক্তিজীবনের সমস্যাগুলো দেখাতে চাই না আমরা। কাইজারে তা হচ্ছে না। এখানে আমার চরিত্রের দুর্বলতাগুলোও দেখানো হয়েছে। স্ক্রিপ্ট রাইটার স্বাধীন গল্পগুলোয় দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।

প্রত্যাশা কেমন?

আমরা যারা পর্দার সামনে পেছনে কাজ করি, নিজেদের কাজ নিয়ে প্রত্যাশা স্বভাবতই অনেক বেশি থাকে। যেহেতু গল্পটা আমরা করছি, গল্পের ভেতরের সবকিছুই আমরা জানি। দর্শক জানে না। নতুন একটা গল্প হয়ে আসবে তাদের সামনে। ফলে দর্শক কীভাবে গ্রহণ করবে আগে থেকে বলা যায় না। তবে আমার প্রত্যাশা দর্শকের কাজটা ভালো লাগবে।

আপনাকে ছোট পর্দা আর ওটিটি প্লাটফর্মে বেশি দেখা যাচ্ছে?

আমি ছোট পর্দা, বড় পর্দা, ওটিটি এগুলোকে আলাদা করে দেখি না। কনটেন্ট তো কনটেন্টই। সবকিছুর পেছনে উদ্দেশ্য একটাই থাকে। গল্প বলা। আমি কাজের শুরুতে যখন টেলিভিশন মিডিয়ায় কাজ করতাম, সবাই বলত এটা একটা ইরেজ মিডিয়া। একবার প্রচার হয়ে গেলে আর নেই। এরপর তো ইউটিউব এল। সব টেলিভিশন কনটেন্টই এখন ইউটিউবে আর্কাইভ হচ্ছে। ইরেজের সুযোগ নেই। ফলে মিডিয়ার ধরন বদলাচ্ছে। কোনটা বড় কোনটা ছোট সে চিন্তা করার সুযোগ আর নেই। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে সবই গুরুত্বপূর্ণ। তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভালো গল্পে কাজ করা। আমরা যারা কাজের সঙ্গে জড়িত, আদর ভালোবাসা দিয়ে যে কাজটাই করি, সেটা যে মাধ্যমেই প্রচার হোক, কাজটা আমাদের কাছে সন্তানের মতো। কোন মাধ্যমে প্রচার হলো সেটা আলোচ্য না।

তার পরও বড় পর্দায় কাজের জন্য মুখিয়ে থাকেন শিল্পীরা। আপনাকে দেখা যাবে শুনেছিলাম?

আমি বড় পর্দায় কাজ করতে চাই। তার জন্য কিছু প্রস্তুতির বিষয় আছে। সবকিছু পছন্দমতো হওয়ারও বিষয় থাকে। বলার জন্য বলছি না, আমি সত্যিই ব্যতিক্রধর্মী গল্পে কাজ করতে চাই। একেবারে যে কথাবার্তা হয়নি তা না। আগামী বছর বড় পর্দায় হাজির হতে পারি।

ঈদ আনন্দ মেলায় উপস্থাপনা করছেন, কী কী থাকছে অনুষ্ঠানে?

আমরা বড় হয়েছি বিটিভি দেখে। বিটিভি আমাদের আবেগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ফলে ঈদ আনন্দ মেলার উপস্থাপনার প্রস্তাবটাই ছিল আমার জন্য বড় চমক। দর্শকদের জন্য শুধু উপস্থাপনায়ই নয়, পুরো আনন্দ মেলাজুড়ে থাকছে বিভিন্ন চমক। বিটিভিতে অনুষ্ঠানটি প্রচার হবে ঈদের দিন রাত ১০টার ইংরেজি সংবাদের পর।

শৈশবের ঈদ কেমন ছিল?

খুবই আনন্দের ছিল। কোরবানির ঈদে আমি কোরবানি দেখতে পারতাম না। ভয় করত। বাবা আমাকে চাকুর হাতলের কোনা ধরিয়ে কোরবানি দিতেন। সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন