প্রস্তাবিত বাজেটকে পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব বলতে পারছি না

ফজলুল হক প্লামি ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০০৪-১০ পর্যন্ত ছিলেন নিট পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সভাপতি। কাজ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশনের (আইএএফ) পর্ষদ সদস্য হিসেবে। এছাড়া এফবিসিসিআই, সার্কের সিসিআই, আইসিসি বাংলাদেশসহ অন্য ব্যবসায়িক সংগঠনেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার নিট  পোশাক শিল্পের প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সম্মেলন, সেমিনার ফোরামে অংশ নিয়েছেন। প্রস্তাবিত বাজেটের নানা দিক নিয়ে তিনি বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা 

সবাই বলছে, প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসাবান্ধব। আপনার কাছে কতটা ব্যবসাবান্ধব মনে হয়?

আপাতভাবে মনে হচ্ছে ব্যবসাবান্ধব। কিন্তু বিস্তারিতভাবে দেখলে তা মনে হয় না। পোশাক খাতের প্রতিনিধি হিসেবে আমি প্রস্তাবিত বাজেটকে পুরোপুরি ব্যবসাবান্ধব বলতে পারছি না। কারণ উৎসে কর শতাংশ করা হয়েছে। এটা এমন সময়ে করা হয়েছে, যখন আমরা একটু খারাপ সময় শুরু করতে যাচ্ছি। গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমরা যে একটা ভালো সময় পার করেছি তা এখন শেষ হয়ে গেছে। দুটো কারণে। এক. করোনাকালীন যে গ্যাপ তৈরি হয়েছিল তা কমানোর জন্য চাহিদা বেড়েছিল। ক্রেতাদের স্টক খালি হয়েছিল, সবাই সেটি পূর্ণ করতে চেয়েছিল। পূর্ণ হওয়ার পর এখন তেমন চাহিদা নেই। দুই. রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। এর প্রভাবে সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। আমরা যেহেতু তৈরি পোশাক রফতানি করি তা আমাদের জন্য আশঙ্কাজনক। কারণ মূল্যস্ফীতি বেশি হলে মানুষ যেসব জিনিসে ব্যয় কাটছাঁট করবে তার মধ্যে পোশাক অন্যতম। এটা একটা বিষয়। আবার সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানির দাম বাড়বে বলে শোনা যাচ্ছে। এমন এক সময়ে উৎসে কর বাড়ানো হয়েছে। অনেক কারখানা লোকসানে চলছে। এর মধ্যে উৎসে কর বাড়ানো মানে সরাসরি খরচ বৃদ্ধি। কাজেই বাড়তি দশমিক শতাংশ উৎসে কর পোশাক খাতে রফতানির জন্য খুব একটা ব্যবসাবান্ধব এটা বলা যাবে না। সব মিলিয়ে বাজেট দৃশ্যত ব্যবসাবান্ধব। কিন্তু কতটা ব্যবসাবান্ধব তা বুঝতে হলে আরো গভীরে যেতে হবে। অর্থবিল প্রকাশ কিংবা বিভিন্ন গোষ্ঠীর দাবিদাওয়া বাজেটে সংযোজিত হলে আরো কাটছাঁট হবে, তখন মনে হয় বাজেট আরেকটু ব্যবসাবান্ধব হবে।

রফতানিকারকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, টাকার মান কমানো। এখন সেটি  হয়েছে। এটা কী রফতানিকারকদের বিশেষ সুবিধা দেবে?

অর্থনীতির একটা গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি হলো, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন হলে তা রফতানিকে সাপোর্ট দেয়, আমদানিকে সাপোর্ট দেয় না। আমরাও হয়তো উপকার কিছু পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের উপকার ততটা না। এটি কারণে যে, আমাদের প্রতিযোগী দেশ চীন, ভারত, পাকিস্তান তিনটি দেশ সব কাঁচামাল-উপকরণ তাদের স্থানীয় মুদ্রায় কেনে। ফলে ডলারের মূল্যমানের যে অগ্রগতি তার শতভাগ সুফল তারা পায়। আমরা কিন্তু পাই না। আমাদের সিস্টেমটা এমনভাবে ডেভেলপ করেছে যে উপকরণ-কাঁচামাল আমাদের ডলারে কিনতে হয়। আমাদের ৮০-৮২ শতাংশ পেমেন্ট ডলারে হয়। যেহেতু ডলারে পরিশোধ করি সেহেতু সেটি কমেছে কি বেড়েছে তার কোনো প্রভাব নেই। ব্যালান্সের মাত্র ১৫-২০ শতাংশ নগদায়ন করি। তাতে আমাদের কিছু লাভ হয়। ডলারের দাম টাকা বাড়লে আমরা টাকার লাভ পাই না। আমরা ২০ পয়সার লাভ পাই। সেদিক থেকে আমাদের কিছুটা লাভ হয়েছে। কিন্তু এখানে আমার একটা ভিন্ন মত রয়েছে। সেটা বাজারে চালু মতগুলোর একটু বিপক্ষে। তা হলো, ডলারের দামটা বাজারমূল্যের সঙ্গেই সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা উচিত। তা না হলে আমাদের ফরেন রেমিট্যান্সপ্রবাহ ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। ফরেন রেমিট্যান্স সরকার যে নিয়ন্ত্রণ করে তার কারণ আমদানি মূল্য যেন খুব বেশি না বাড়ে। যেহেতু আমাদের পণ্য আমদানি রফতানির চেয়ে বেশি, সেজন্য জায়গায় সরকারের একটা বাড়তি নজর থাকে। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না। কিন্তু সমস্যা হলো, ব্যাংকে ডলারের দর কম থাকলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স হুন্ডিতে পাঠিয়ে দেন। যার জন্য সরকার আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিয়ে সেটি কভার আপ করার চেষ্টা করছে। আমরা দেখেছি তার কিছু সুফল সরকার পেয়েছে। বাজারদরের সঙ্গে যদি ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয় তাহলে খারাপ কিছু দেখি না। কিন্তু এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নজরদারি না থাকলে এর বড় সুফলভোগী হয়ে যায় ব্যাংক। ব্যাংকের অতিমুনাফাপ্রবণতার কারণে রফতানিকারক আমদানিকারক উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কারণ যখন মূল্য নির্ধারণ করা থাকে না তখন ব্যাংকাররা ইচ্ছামতো রফতানি আমদানিকারকদের মধ্যে ডলার বিক্রি করেন। কখনো কখনো ডলারের দাম ক্রয় বিক্রয়মূল্যের মধ্যে ব্যবধান ১০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এতে ব্যাংক ব্যাপক লাভবান হলেও রফতানিকারক আমদানিকারক উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হন।

স্বল্প কর দিয়ে অর্থ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্পর্কে আপনার কী মত?

আমি এর বিরোধিতা করি। পদক্ষেপের আসলে কোনো উপকারিতা আছে বলে আমার মনে হচ্ছে না। বরং একটা খারাপ কাজকে বৈধতা দেয়া হচ্ছে। বৈধতা দেয়া হচ্ছে কারণে যে কর ফাঁকির চেয়েও অনেক বড় অপরাধ এটা। কেউ হয়তো কর ফাঁকি দিয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টাকাটা হয়তো অবৈধভাবে উপার্জিত। কর ফাঁকি দুই রকম। বৈধভাবে আয় করে কর দেয়নি। আরেকটা হলো, টাকাটাই অবৈধ (যেমন ঘুষ, চুরি) আমার ধারণা, যেসব টাকা পাচার হয়েছে তার বেশির ভাগই অবৈধভাবে উপার্জন করা। কর দেয়নি আবার পাচার হয়েছে। এখানে অনেক অপরাধ জড়িত। অবৈধ উপার্জন, কর ফাঁকি অর্থ পাচারএখানে তিনটা অপরাধ হয়েছে। তিনটা অপরাধকে শতাংশ কর দিয়ে যে ক্ষমা করা হচ্ছে, তাতে ভালো বার্তা যাচ্ছে না। তাছাড়া এতে খুব একটা কাজও হবে। আমি বিশ্বাস করি, শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি অর্থমন্ত্রী প্রত্যাহার করবেন।

করোনার পর সবচেয়ে বড় ইস্যু মূল্যস্ফীতি। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ঠিকভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে কী?

ভালো দিক হলো, পাঁচটি চ্যালেঞ্জ অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেছেন। তার মধ্যে মূল্যস্ফীতি একটা। নিঃসন্দেহে মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি টার্গেট দশমিক শতাংশ। চলতি অর্থবছর তা সরকারি হিসাবে এরই মধ্যে দশমিক ৪২ শতাংশ। বাস্তবে মূল্যস্ফীতি আরো অনেক। সবচেয়ে বড় কথা, মূল্যস্ফীতি . শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্য কীভাবে অর্জন করা হবে তার সুস্পষ্ট কৌশল দিকনির্দেশনা বাজেটে নেই।

আর কয়েক বছর পরেই বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশে যোগ দেবে। অনেকে বলছেন, তখন আমাদের পোশাক শিল্প বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে, বিশেষ করে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। আপনার কী মনে হয়, বাজেটে সেটা যথাযথ গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয়েছে?

অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় চ্যালেঞ্জের কথা যেখানে বলেছেন, সেখানে কিছুটা আছে। শুধু বক্তৃতায় থাকলে হবে না, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় খুব কার্যকর প্রচেষ্টা নেয়া দরকার। খুব দক্ষতার সঙ্গে এগোনো দরকার। এসব বিষয় আমাদের ডব্লিউটিওর মতো বহুপক্ষীয় সংস্থায় তুলতে হবে। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয়ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের একটা ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করা যায় কিনা তা ভাবনাচিন্তা করতে হবে। সেটা বাজেট বক্তৃতায় আছে। শুধু থাকলে হবে না, এক্ষেত্রে কার্যকরভাবে এগোতে হবে। সময় কিন্তু বেশি নেই। ভিয়েতনাম এরই মধ্যে করে ফেলেছে। দেশটি এক অর্থে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী। এখন ভিয়েতনাম শুল্কমুক্ত সুবিধা পায় না, আমরা পাই। এভাবে চলতে থাকলে উল্টোটা হতে পারে। শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধার মেয়াদ না বাড়লে সেটি আমাদের জন্য বিপর্যয়কর হবে। তাই এখনই এটা নিয়ে জোরালোভাবে কাজ শুরু করা প্রয়োজন।

জ্বালানির দাম বৃদ্ধির চাপ কতটা নিতে পারবেন আপনারা?

প্রশ্ন আসলে সরকারকে করা উচিত। আমাদের মতামত তো তেমন প্রতিফলিত হচ্ছে না। গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। আবার যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়, জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়, সব বাড়ানো যদি একসঙ্গে হয় তাহলে তো মুশকিল। হয়তো আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের মানতে হবে। কিন্তু চূড়ান্তভাবে এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। এটা মাথায় রাখতে হবে।

এবারের বাজেটে ৮০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি হিসেবে রাখা হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এত টাকা কেন ভর্তুকি দিতে হবে। সেক্ষেত্রে সরকার আসলে কী করতে পারে?

বাজেটের দু-এক সপ্তাহ আগে এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, যে সিস্টেম লস বা অপচয় আছে তা রোধ করেই ভর্তুকির টাকা কমানো যায়। বারবার বলি, আমাদের আসলে সুশাসনের দিকেই মনোযোগ দেয়া দরকার।  খরচটা আর কোথায় কমানো যায়, সেটি দেখতে হবে। অপচয়ের মাধ্যমে বলা হয়, অনেকে অবৈধ আয় করছে। ভোক্তারা সেটার জন্য বাড়তি অর্থ দিচ্ছে কিনা, সে প্রশ্নও আছে। যেটা এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্টও বলেছেন। তিনি অন রেকর্ড বলেছেন। রকম একটা ধারণা জনসাধারণের মধ্যেও আছে। কাজেই প্রশ্নটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।

এবারের বাজেটে ব্যয়ের প্রায় ৪৫ শতাংশই ঋণ পরিশোধ জনপ্রশাসন ঘিরে। বেড়ে চলা জনপ্রশাসন ব্যয়কে আপনি কীভাবে দেখেন?

প্রশাসন মাথাভারী হয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখছি পদ নেই কিন্তু পদোন্নতি হচ্ছে। বাজেট কম হলে কীভাবে তার সদ্ব্যবহার করতে হবে সেদিকে নজর দিতে হবে। দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে এগুলোও দেখা দরকার। যেমন বেসরকারি ব্যাংকের তুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সেবা অনেক দুর্বল। কিন্তু জনবল দেখলে দেখা যাবে বেসরকারি ব্যাংকের জনবল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ে কম। এর পরও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপকরা বলেন তাদের পর্যাপ্ত লোকবল নেই। কাগজপত্রে দেখাবেন, ১৫-২০ শতাংশ কম জনশক্তি দিয়ে চালাতে হচ্ছে। কাজেই এখানে আসলে দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টাটাই নেই। সবখানে সুশাসন দক্ষতা নিশ্চিত করা গেলে বিদ্যমান বাজেট বা আয় দিয়েই আমরা অনেক ভালো ম্যানেজ করতে পারব।

করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি, সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?

প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা যে বাড়ানো হয়নি, তাতে মধ্যবিত্তের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। এটা বাড়ানো উচিত ছিল। এতে জনগোষ্ঠীর প্রকৃত ব্যয় কমে গেছে।

প্রতিবারই বলা হয় কর্মসংস্থানের বাজেট। আসলেই কি কর্মসংস্থান হচ্ছে?

আসলে কর্মসংস্থান বা মানবসম্পদ উন্নয়নের বাজেট কতটা হলো কি না হলো তার চেয়ে বড় কথা এটা কীভাবে খরচ হচ্ছে। বিষয়টি আমার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি আমাদের পোশাক শিল্পের উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিল্প এবং কর্মসংস্থানের বড় জায়গা এখানে। শিল্পে বিপুলসংখ্যক বিদেশী কাজ করছেন। তাদের আমরা বেশি টাকা দিয়ে নিয়ে আসছি। প্রচুর ঝামেলা করে আনতে হয়। বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন দিতে হয়। এটা আমাদেরও ক্ষতি, দেশেরও ক্ষতি। সবচেয়ে বড় বিষয়, জায়গায় একজন বাংলাদেশী চাকরি পেতে পারতেন। যদি পাঁচ লাখ বিদেশী নাগরিক এখানে চাকরি করেন, সবই হয়তো আমরা রিপ্লেস করতে পারতাম না। কিন্তু চার লাখ লোককে চাকরি দিতে পারলে এখানে ওইসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ-যুবক চাকরি পেতেন। এতে আমাদের কয়েক বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হতো। বৈদেশিক মুদ্রাও বাঁচত। আমাদের শিক্ষা দক্ষতা বাড়ানোর যে টার্গেট তা আমার কাছে খুব ফোকাসড ফলাফলমুখী মনে হয়নি। আমাদের জায়গায়গুলো দ্রুততার সঙ্গে অ্যাড্রেস করতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ দেয়া মূল বিষয় নয়। মানবসম্পদ উন্নয়নে যে বরাদ্দ আছে তা সুষ্ঠু পরিকল্পনামাফিক ব্যবহার হচ্ছে না। কাজেই প্রতি বছর শুধু বরাদ্দ দিলে হবে না, সেগুলো যথাযথভাবে ব্যয় হচ্ছে কিনা, সেটিও দেখতে হবে।

অনেক মেগা প্রকল্প অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। সেগুলোয় ব্যবসা-বাণিজ্যের কি কোনো সুবিধা হবে?

অল্প কিছু প্রকল্প করে প্রথমে তার ফল দেখে প্রকল্প নেয়া দরকার ছিল এতগুলো প্রকল্প একসঙ্গে না নিয়ে। অর্থনীতির জন্য এগুলো খুব বেশি সুফলপ্রদায়ী বলে মনে হচ্ছে না। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো কাজে লাগবে। ধরা যাক পোশাক শিল্পকে একটা অর্থনৈতিক অঞ্চল দেয়া হলো, সেটা ভালো। জাপানি, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের একেকটা দেয়া হলো, সেটা ভালো। রকম সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে ভালো হতো। এতগুলো অর্থনৈতিক অঞ্চল একসঙ্গে চালু হলে সেটা আবার মাথাব্যথার কারণ হয় কিনা তা নিয়েও সংশয় আছে। জায়গাটা আরেকটু সুপরিকল্পিতভাবে এগোলে ভালো হবে।

 

শ্রুতলিখন: হুমায়ুন কবির

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন