ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে শক্তিশালী করছে পরিষেবা খাত

বণিক বার্তা ডেস্ক

মহামারীর কারণে সৃষ্ট ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে ভারতের অর্থনীতি। গত মে মাসে বেশ প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। মূলত নভেল করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার কারণে উৎপাদন বেড়েছে। কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে পরিষেবা খাতে। খাতই দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে শক্তিশালী করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর দ্য প্রিন্ট।

সম্প্রতি বেশকিছু সূচকে উন্নতি করেছে ভারত। যার প্রভাবও পড়েছে অর্থনীতিতে। মূলত পরিষেবা খাতে কার্যক্রম সম্প্রসারিত হওয়ায় এবং অর্থনীতির চালিকাশক্তি যে প্রতিষ্ঠানগুলো সেগুলোতে গতি ফিরে আসায় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে এবং চাহিদা সরবরাহের মধ্যে কিছু সংকট তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। কারণে প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হওয়ার শঙ্কাও রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে খাদ্য, জ্বালানি, শ্রম পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। একইভাবে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াও ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে সুদের হার বাড়িয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে এটি আরো বাড়ানো হতে পারে বলেও ঘোষণা দিয়ে রাখা হয়েছে।

আবহাওয়া-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা এবং নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিয়ে যথেষ্ট শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত মাসের তুলনায় বর্তমানে প্রতিদিন শনাক্তের হার ছয় গুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।

পারচেজিং ম্যানেজারের জরিপ অনুযায়ী, ভারতের বাজারে কর্তৃত্ব করে যে খাতটি অর্থাৎ পরিষেবা খাতে মে মাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি গত ১১ বছরে সর্বোচ্চ। যেখানে উৎপাদন খাতের প্রবৃদ্ধি এখনো বেশ স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি খাতের প্রবৃদ্ধিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয় ব্যাপকহারে বেড়ে গিয়েছে। যদিও এখনো সে ধরনের কোনো ইঙ্গিত মেলেনি।

অন্যদিকে ভারতে বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। মূলত উচ্চমূল্যের স্বর্ণ পেট্রোলিয়াম আমদানির কারণে মে মাসে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ হাজার ৪৩২ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। দেখা গিয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে টানা তৃতীয় মাসের মতো হাজার কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করতে হয়েছে। কিন্তু ভূরাজনৈতিক কিছু কারণে সেই হারে রফতানি বাড়ানো যায়নি।

অন্যদিকে, ভারতের গাড়ি নির্মাণ শিল্প বা অটোমোবাইল খাতে মে মাসে বেশ পতন হয়েছে। তবে কিছু ধরনের ক্ষেত্রে আবার আগের মাসের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। যেমন কার টু-হুইলার ধরনের যানের ক্ষেত্রে।

শিল্প খাতের কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির অন্য দুটি সূচক আবার মে মাসের থেকে এপ্রিলে ভালো ছিল। এছাড়া ভারতে কলকারখানা খাতের কর্মকাণ্ডে গত আট মাসে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় খাতে কর্মকাণ্ড বেড়েছে। একই সঙ্গে উৎপাদন খনিসংশ্লিষ্ট কাজেও বেশ স্থিতিশীল উন্নতি হয়েছে। অবকাঠামো খাতের প্রবৃদ্ধিকেও স্থিতিশীল বলছেন বিশ্লেষকরা। সব মিলিয়ে তারা ভারতের অর্থনীতি মুহূর্তে বেশ গতিশীল রয়েছে বলেই মনে করছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন