যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যবসা বাণিজ্যে প্রসার ঘটে —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে দেশের শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। বর্তমানে বাংলাদেশে রেল যোগাযোগ পুনরুজ্জীবিত করা হচ্ছে, নতুন নতুন রেলপথ স্থাপন এবং সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদী খননকাজও পরিচালিত হচ্ছে। এসব উদ্যোগের ফলে দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে।

গতকাল বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানে দেশের ৪১টি ব্যাংক, একটি বিশেষায়িত ব্যাংক তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান মোট ৩০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা অনুদান দেয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার মুখ্য সচিব . আহমদ কায়কাউস এসব অনুদান গ্রহণ করেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আপনারা বন্যাকবলিত মানুষকে সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছেন। এভাবে আপনারা যখন মানুষের পাশে দাঁড়ান, তখন আর আমাদের চিন্তা থাকে না। দেশকে এগিয়ে নিতে সবারই সচেতন থাকা প্রয়োজন।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশেরই এক ব্যক্তির প্ররোচনায় বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়, পাশাপাশি অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীও সরে দাঁড়ায়। সে সময় আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। তখন দেশের জনগণের পাশাপাশি আপনারাও অনেকে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেজন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণই আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। তাদের সাহস সহযোগিতার মাধ্যমে তারা পাশে থাকায় আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। দীর্ঘদিনের অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলে এখন শিল্পায়নের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অঞ্চলের মানুষের আর্থিক উন্নতি হবে। সেখানে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার একটি ক্ষেত্র তৈরি হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে এবং অঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়ে যাবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিলেট বিভাগে পরপর তিনবার বন্যা হলো। সেখানে যেমন ফসলের ক্ষতি হয়েছে তেমনি ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি যখন নেমে আসছে তখন নেত্রকোনা, কুড়িগ্রাম লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দেশের এমন দুর্যোগ দুর্বিপাকে মানবিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসায় এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধন্যবাদ জানাই।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে দেশের জনগণের দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো এবং সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধিশালী করে গড়ে তোলা, যাতে বিশ্বদরবারে আমরা মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলতে পারি। আমাদের উন্নয়নও করতে হবে আবার মানুষের খাদ্যনিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য যেখানে সেখানে শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠে যেন কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, সমস্যা এলে সেটি মোকাবেলা করে পথ চলতে হবে। করোনাকালে সরকার যেমন সব মানুষের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছে তেমনি চলমান বিশ্বমন্দার মধ্যে শিল্প-কলকারখানা চলমান রাখতে নানা রকম আর্থিক প্রণোদনাও দিয়েছে। কোনোভাবেই যাতে অর্থনীতির গতি ব্যাহত না হয় সেজন্য কৃষক, শ্রমিক, সাধারণ মানুষসহ সবাইকে সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে আবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ায় এর প্রভাবও অর্থনীতির ওপর পড়েছে। তার ওপর যুক্ত হয়েছে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে সমস্যা আসবে এবং সেই সমস্যা মোকাবেলা করেই আমাদের পথ চলতে হবে।

সময় নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আবারো বেড়ে যাওয়ায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন