কেন্দ্রীয় সরকারের পরিবর্তে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে বাজেট তৈরি হলে তা জনগণের স্বার্থে বেশি কাজে আসবে বলে মনে করছেন ৭৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। আর ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ মনে করেন, রাজধানীতে বসে বা কেন্দ্রীয়ভাবে তৈরি বর্তমান বাজেট প্রক্রিয়ায় স্থানীয় সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ নিয়ে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের (ডিবিএম) এক মতামত জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাজেটোত্তর মতবিনিময় সভায় এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
জরিপে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, উন্নয়নকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মোট ১১৪ জন অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে পুরুষ ৮৩ জন ও নারী ৩১ জন। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শহরে বসবাস করেন ৯৬ জন ও গ্রামে ১৮ জন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন ছয়জন ও আদিবাসী সাতজন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৬ শতাংশ মনে করেন, বাজেটে তাদের মতামত দেয়ার প্রয়োজন আছে। আর ৬৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ বাজেটে প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রতিফলন পান না বলে মতামত দিয়েছেন।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বাজেটে যেসব প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমবে না বলে মনে করেন ৮৫ দশমিক ১ শতাংশ। সারে ভর্তুকি বাড়লেও কৃষকের জন্য সরাসরি ভর্তুকি না থাকায় ক্ষুদ্র কৃষকরা উপকৃত হবেন না বলে মনে করেন ৭৬ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া কভিড ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র মানুষের জীবন ও জীবিকার ঝুঁকি মোকাবেলায় বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ। এদিকে প্রস্তাবিত বাজেট শিক্ষার সুযোগ ও মান বৃদ্ধি করতে অবদান রাখবে না বলে মনে করেন ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য আয়করের চাপ কমানো উচিত বলে মনে করেন ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেট কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করতে অবদান রাখবে না বলে মনে করেন ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ। এ বছর বাজেটে ব্যবসায়ী ও বড় কোম্পানিগুলোকে সরকার আয়করে যে ছাড় দিয়েছে তা সমর্থন করেন না বলে জানান ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ।
সভায় গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা ও সহসভাপতি আমানুর রহমান, সেফটি অ্যান্ড রাইটসের নির্বাহী পরিচালক সেকান্দার আলী মিনা, জিটিভির বার্তা সম্পাদক রাজু আহমেদ এবং এসএ টিভির বিজনেস এডিটর সালাউদ্দিন বাবলু উপস্থিত ছিলেন।