চলতি বছর বৈশ্বিক জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়বে ৮%

বণিক বার্তা ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে বিপর্যস্ত বিশ্ব। এর জের ধরে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ছে। চলতি বছর বৈশ্বিক জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ শতাংশ বেড়ে লাখ ৯৬ হাজার কোটি ইউরোতে ( লাখ ৪০ লাখ কোটি ডলার) উন্নীত হবে। বিনিয়োগের বড় একটি অংশ যাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।

জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে আগামী বছরগুলোয় নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা (আইইএ) বিদ্যমান জ্বালানি সংকট মোকাবেলা করতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট বলে মনে করছে সংস্থাটি। এর মাধ্যমে টেকসই নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিনিয়োগ সম্পর্কে দেশগুলোর আরো সচেতনতা বাড়ানো দরকার। প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি চীন। এদিকে ভূরাজনৈতিক সংকটের কারণে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম অব্যাহতভাবে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। একই সঙ্গে দেখা দিয়েছে জ্বালানি নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তাও। ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দাম জ্বালানি নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা মেটাতে পাল্টা জীবাশ্ম জ্বালানিতেই বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলছে বহু দেশ। এর মধ্যে কয়লায় বিনিয়োগ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

আইইএর ওয়ার্ল্ড এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট ২০২২ প্রতিবেদনে বলা হয়, অঞ্চলভেদে প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন খাতের পর্যবেক্ষণ করে আমাদের তথ্য বলছে বছর বৈশ্বিক জ্বালানি বিনিয়োগ শতাংশ বেড়ে লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলারে উন্নীত হবে, যা কভিডপূর্ব সময়ের বিনিয়োগের তুলনায় অনেক বেশি। জ্বালানি খাতের সব অংশেই বিনিয়োগ বাড়ছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে বিদ্যুৎ খাত থেকে। বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রিডে বিনিয়োগ বেড়েছে। শুধু জ্বালানি তেল, গ্যাস কম কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানি সরবরাহ খাতে গড় বিনিয়োগের পরিমাণ ২০১৯ সালের কভিডপূর্ব সময়ের তুলনায় কম। সত্ত্বেও চলতি বছর জ্বালানি তেল গ্যাস উৎপাদকদের নিট আয় দ্বিগুণ বেড়ে লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরল বলেন, জ্বালানি জলবায়ু সংকটের একমাত্র দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হলো জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্পে বিনিয়োগ বাড়ানো। বর্তমানে বিদ্যমান জ্বালানি জলবায়ু সংকটকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে সুখবর হলো, একই সঙ্গে সংকটগুলোর মোকাবেলা করা সম্ভব। এর জন্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এরই মধ্যে খাতে বিনিয়োগ ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে জীবাশ্ম জ্বালানির দাম কমাতে ভোক্তাদের ওপর চাপ কমাতে আরো দ্রুত সংশ্লিষ্ট খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাশালী দেশগুলো প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর করে। এতে করে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিনিয়োগ পরবর্তী পাঁচ বছরে বার্ষিক শতাংশ বাড়ে। ২০২০ সালে কভিড-১৯ মহামারীর সময়ে সরকারি সহায়তাও পেয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এর জের ধরে ২০২০ সাল থেকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে বিনিয়োগ বেড়েছে ১২ শতাংশ।

এদিকে কার্বন নিঃসরণ রোধে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (্ইভি) তৈরির দিকে ঝুঁকেছে গাড়ি নির্মাতারা। পাশাপাশি বিনিয়োগ বেড়েছে সৌরবিদ্যুতেও। ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণ নিট জিরোতে পৌঁছনোর প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে মাঝে বাদ সেধেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরবরাহ সংকট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন