সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির আলোচনা

দক্ষ জনশক্তি গড়তে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল ‘বাজেট ২০২২-২৩: শিক্ষা ও কর্মসংস্থান’ শীর্ষক আলোচনায় অতিথিরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বাংলাদেশের জন্য সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। শিক্ষা কর্মসংস্থান হচ্ছে সংকট মোকাবেলার অন্যতম চাবিকাঠি। তবে শিক্ষা কর্মসংস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য যে বরাদ্দ বাজেটে থাকা দরকার সেটি অনুপস্থিত। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হলে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। শিক্ষার মাধ্যমে বাকি সংকটগুলোও দূর করা সম্ভব। এজন্য মাস্টারপ্ল্যান করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির আয়োজনে বাজেট ২০২২-২৩: শিক্ষা কর্মসংস্থান শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির পরিচালক . এম আবু ইউসুফ। মূল আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক . মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক . রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।

এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক . এএসএম মাকসুদ কামাল এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক . জিয়া রহমান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শবনম আযীম।

মূল প্রবন্ধে উপস্থাপনকালে . এম আবু ইউসুফ বলেন, প্রত্যেক বছর শিক্ষা প্রযুক্তি মিলে একসঙ্গে বাজেট দেয়া হয়। আমরা স্বতন্ত্র শিক্ষা বাজেট চাই। শিক্ষায় হাজার ৫০০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। জিডিপির পরিপ্রেক্ষিতে দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগে ছিল, যা বাজেটের ১২ শতাংশ। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আকারে বেড়েছে। কিন্তু ইউনেস্কো শিক্ষা খাতে একটি স্ট্যান্ডার্ড ঘোষণা করেছে যে, বাজেটের ২০ শতাংশ থাকতে হবে এবং জিডিপির - শতাংশ। অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম।

অধ্যাপক . রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এর কারণে দরিদ্র মানুষের ওপর একটি অভিঘাত এসেছে। সেটা সমানভাবে পড়েনি। কারো ওপর কম পড়েছে, কারো ওপর বেশি। করোনার কারণে দরিদ্র মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ৩০ বছরে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, করোনা তাতে একটি ধাক্কা দিয়েছে। দক্ষতার মাধ্যমে কীভাবে কর্মসংস্থান তৈরি করা যায় আমাদের সেটি ভাবতে হবে।

অধ্যাপক . মাহবুবুল মোকাদ্দেম আকাশ বলেন, যেকোনো বাজেটে আয় ব্যয়ের দিক থাকে। প্রশ্ন হচ্ছে, আয় যতটা দরকার ততটা হচ্ছে কিনা। আবার ব্যয় কোয়ালিটি অব এক্সপেনডিচার মেনে হচ্ছে কিনা। আয়ের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা রয়েছে। আর ব্যয়ের ক্ষেত্রে অসংখ্য ছিদ্র আছে। যেখানে ব্যয় করার কথা সেখানে হচ্ছে না।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দর্শন হচ্ছে কল্যাণমূলক রাষ্ট্র তৈরি করা। এর জন্য শিক্ষা স্বাস্থ্য খাত গুরুত্বপূর্ণ। কোয়ালিটি এক্সপেনডিচার না হলে লক্ষ্যপূরণ হবে না। শিক্ষা বাজেটে যে ৮১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ আছে তা শুধু শিক্ষায়। শিক্ষার অনেক বরাদ্দ খাতে সংযুক্ত নেই। এজন্য মনে হয় শিক্ষায় বরাদ্দ হচ্ছে না। কিন্তু আসলে হচ্ছে।

অধ্যাপক . এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, শিক্ষা কর্মসংস্থান দুটো ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যত দিন আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে বের হওয়া না যাবে তত দিন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব না।

অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতি বছরই বলা হয় শিক্ষায় বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। বরাদ্দ কম দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। করোনা আমরা ভালোভাবে ওভারকাম করেছি। তবে একটা জায়গায় আমরা ব্যর্থ। গবেষণা না থাকার কারণে আমরা ভ্যাকসিন অন্য দেশ থেকে বিপুল ব্যয়ে কিনেছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন