দেশে সংক্রমক রোগ কলেরার জন্য গণপরিসরে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজধানীর পাঁচটি এলাকায় এ কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। গতকাল দুপুরে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশে (আইসিডিডিআর,বি) এক অনুষ্ঠানে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। দেশে এ পর্যন্ত এটিই সর্ববৃহৎ কলেরার টিকাদান কর্মসূচি বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআর,বি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকার ওই পাঁচটি এলাকার ২৪ লাখ বাসিন্দাকে গতকাল শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচিতে আগামী ২ জুলাই পর্যন্ত মুখে খাওয়া টিকা খাওয়ানো হবে। চলমান কভিড-১৯ সংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন করে এসব এলাকার বাসিন্দাদের কলেরার টিকাদান কার্যক্রমকে সহায়তার অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রথম ডোজ কলেরা টিকাদান কর্মসূচি চলবে। যাত্রাবাড়ীর প্রায় পাঁচ লাখ, সবুজবাগের প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, দক্ষিণখানের প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার, মিরপুরে প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার ও মোহাম্মদপুরের প্রায় চার লাখ বাসিন্দাকে কলেরার টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রায় ৭০০ টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
কমপক্ষে ১৪ দিন থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে দ্বিতীয় ডোজ নেয়া যাবে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইউবায়োলোজিক্স কোম্পানি লিমিটেডের তৈরি ইউভিকল প্লাস নামের কলেরার এ টিকা এক বছর থেকে তদূর্ধ্ব বয়সীদের দেয়া হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত এ টিকা অন্তঃসত্ত্বা নারী ও যারা ১৪ দিনের মধ্যে অন্য কোনো টিকা গ্রহণ করেছে তারা ব্যতীত সবাই গ্রহণ করতে পারবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে একসময় ডায়রিয়া ও কলেরা অনেক বিপজ্জনক রোগ ছিল। বহু মানুষের মৃত্যু হতো। বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার ও স্যানিটারি ল্যাট্রিনের ব্যবহার নিশ্চিত করায় এ রোগের ভুক্তভোগী কমেছে। ভ্যাকসিন নিলে এটির প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানটির হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ২০-২৫ শতাংশ কলেরায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে ১০ শতাংশ আসে ঢাকার বাইরে থেকে। সম্প্রতি রাজধানীতে ডায়রিয়ার যে প্রকোপ ছিল তার ৫০ শতাংশই ছিল পুরান ঢাকার। চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত দৈনিক ১ হাজার ২০০ রোগী এসেছিল আইসিডিডিআর,বির হাসপাতালে।