বোয়িংয়ের পূর্বাভাস

২০২৪ সালের মধ্যে কভিডপূর্ব স্তরে পৌঁছবে উড়োজাহাজের বৈশ্বিক চাহিদা

বণিক বার্তা ডেস্ক

ওয়াশিংটনের সিয়াটলে গ্রাউন্ডেড করা বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ছবি: রয়টার্স

কভিড-১৯ মহামারীতে সব থেকে বিপর্যস্ত হয় উড়োজাহাজ ব্যবসা। নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা স্তিমিত হলে ব্যবসা পুনরুদ্ধারে নামে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুই দশকে প্রতি বছর আকাশ ভ্রমণে বার্ষিক শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছে বোয়িং। মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা জায়ান্টটি বলছে, আগামী দুই বছরের মধ্যে আকাশ ভ্রমণের চাহিদা কভিডপূর্ব স্তরে পৌঁছবে। খবর আরব নিউজ।

বোয়িংয়ের মধ্যপ্রাচ্য আফ্রিকার বাণিজ্যিক বিক্রি বিপণন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওমর আরেকাত বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যেই উড়োজাহাজের চাহিদা কভিডপূর্ব স্তরে পৌঁছবে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ ভ্রমণের চাহিদা আগের বছরের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি হবে।

ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) বার্ষিক সাধারণ সভায় ওমর আরেকাত জানান, বাজার ক্রমে সম্প্রসারিত হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা বা জিসিসিভুক্ত দেশগুলোতেই তিন হাজার কার্গো মালবাহী উড়োজাহাজের চাহিদা রয়েছে।

তবে পুনরুদ্ধার সত্ত্বেও বোয়িংয়ের ব্যবসা এখনো কভিডপূর্ব স্তরে পৌঁছেনি। বিশেষ করে আঞ্চলিক স্থানীয় ব্যবসা পুনরুদ্ধার প্রত্যাশার থেকে বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থানীয় পরিবহনের ক্ষেত্রে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সক্ষমতা প্রায় শতভাগ ছিল।

উড়োজাহাজ পরিবহন ব্যবসা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বিশ্বের বাকি দেশগুলোর তুলনায় এগিয়ে আছে জিসিসিভুক্ত দেশগুলো। বোয়িংয়ের জন্য জিসিসি অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার বলে জানান ওমর আরেকাত।

এদিকে ৫০টি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ বিক্রিতে কাতার এয়ারওয়েজের সঙ্গে চলতি বছর একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওই) সই করেছে বোয়িং। চুক্তির আওতায় ২০২৪ সালের মধ্যে উড়োজাহাজগুলো সরবরাহ করা শুরু হবে।

বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বেশকিছু ইস্যুতে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জোরদার করছে বোয়িং। সৌদিতে ব্যবসা সম্প্রসারণ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ওমর আরেকাত। এদিকে টেকসই প্রকল্প হাতে নিয়েছে বোয়িং। আগামী বছরের মধ্যে বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজ টেকসই প্রকল্পে যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ সংস্থাটির। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বহরে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিচালিত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স। অন্যদিকে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের বহরে রয়েছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিচালিত বোয়িং ৭৮৭ গ্রিনলাইনার। জ্বালানি পরীক্ষা প্লাটফর্ম সম্প্রসারণের তাগিদে ব্যাপক পরিমাণে বিনিয়োগ করছে বোয়িং।

ওমর আরেকাত জানান, বর্তমানে এটি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই এর চাহিদা বাড়বে। তবে মুহূর্তে দাম সাশ্রয়ী করাটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি বিপুল পরিমাণে উৎপাদন সহজলভ্য করাটাও আমাদের উদ্দেশ্য।

গত বছর মার্কিন উড়োজাহাজ সংস্থাটির বার্ষিক আয় দাঁড়ায় ৬২ হাজার ২৮৬ কোটি ডলার। সে হিসেবে বার্ষিক আয় ২০২০ সালের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেশি ছিল। কভিড মহামারীর ধাক্কায় ২০২০ সালে বিরাট লোকসানের মুখোমুখি হয়েছিল মার্কিন উড়োজাহাজ সংস্থাটি। পাশাপাশি মহামারীর অভিঘাত এড়ানোর অন্যতম উপায় হিসেবে কয়েক হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছিল বোয়িং। ওই বছর ২০১৯ সালের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির আয় কমেছিল ২৪ দশমিক শূন্য শতাংশ। মহামারীর প্রকোপ কমলে ব্যবসা পুনরুদ্ধারে নামে বোয়িং। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিষ্ঠানটির আয় দাঁড়ায় ১৪ কোটি ডলার। গত বছর একই সময়ে উড়োজাহাজ সংস্থাটির আয় ছিল ১৫০ কোটি ডলারেরও বেশি। সে হিসেবে বছরের শুরুতে বোয়িংয়ের আয় তুলনামূলক কম ছিল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন