ড. মো. খালেকুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের লক হ্যাভেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক। তিনি একাধারে পরিবেশবিজ্ঞানী ও গবেষক উপকূলীয় ভূতত্ত্ব, টেকসই উন্নয়ন, পানি সম্পদ এবং জিআইএস বিশেষজ্ঞ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে তিনি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের আজারবাইজানে পড়তে যান। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেলাওয়ার থেকে উপকূলীয় ভূতত্ত্ব বিষয়ে মাস্টার্স এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার আগ্রহের ক্ষেত্র আন্তঃনদী ব্যবস্থাপনা, পানি, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য। সিলেট ও সুনামগঞ্জে সাম্প্রতিক বন্যা, হাওরে সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ বিতর্কসহ নানা বিষয়ে তিনি বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা
বাংলাদেশে বর্ষার শুরুতেই সিলেট-সুনামগঞ্জ-উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা
দিয়েছে, এ
বন্যার কারণ
কী?
এ
বন্যা
খুবই
অস্বাভাবিক,
মোটেই
স্বাভাবিক
নয়।
কারণ
এ
বছর
তিনবার
বন্যা
হয়েছে
সিলেট
ও
সুনামগঞ্জ
অঞ্চলে।
৫-৬
এপ্রিলের
দিকে
ছোটখাটো
বন্যা
হয়েছিল
সুনামগঞ্জে।
এর
পর
মে
মাসের
মাঝামাঝি
১৬-১৭
তারিখ
থেকে
শুরু
করে
২২
তারিখ
পর্যন্ত
বেশ
বড়
বন্যা
হয়েছে।
তারপর
এখন
আবার
হচ্ছে।
তিনটা
বন্যা
হয়ে
গিয়েছে
প্রায়
এক-দেড়
মাসের
ব্যবধানে।
এটা
মোটেই
স্বাভাবিক
নয়।
বন্যার মাত্রা
বাড়ছে,
ঘন
ঘন
হচ্ছে।
এটা
ধীরে
ধীরে
বেড়েই
যাচ্ছে।
এখনকার
বন্যার
বড়
কারণ
প্রচুর
বৃষ্টিপাত,
যা
অস্বাভাবিক
ধরনের
বেশি।
মেঘালয়ের
চেরাপুঞ্জিকে
পৃথিবীর
সবচেয়ে
বেশি
বৃষ্টিপ্রবণ
অঞ্চল
বলা
হয়।
সে
অঞ্চলে
এ
মাসে
(১৯ জুন
পর্যন্ত)
৪
হাজার
১০০
মিলিমিটারের
বেশি
বৃষ্টিপাত
হয়েছে।
গত
তিনদিনে
(১৫-১৭
জুন)
২
হাজার
৫০০
মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত
হয়েছে।
যদিও
বৃষ্টিপ্রবণ
অঞ্চল
কিন্তু
এত
বৃষ্টিপাত
এর
আগে
হয়নি।
জুন থেকে
সেপ্টেম্বর
পর্যন্ত
মনসুন
সিজন
ধরা
হয়,
এ
সময়টায়
চেরাপুঞ্জি
অঞ্চলে
চার
হাজার
মিলিমিটারের
বেশি
বৃষ্টিপাত
হয়
তিন
মাসের
ব্যবধানে।
কিন্তু
এবার
তিনদিনেই
২
হাজার
৫০০
মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত
হয়েছে।
এ
বৃষ্টির
পানি
ধারণ
করার
সক্ষমতা
আমাদের
নদী-নালাগুলোর
নেই।
এখন
যে
বন্যা
হচ্ছে
তা
মূলত
অতিবৃষ্টি
এবং
ধারাবাহিকভাবে
হওয়ার
কারণে।
সমপরিমাণ
বৃষ্টিও
যদি
বিরতি
দিয়ে
হতো
তাহলে
এর
মাঝের
সময়টায়
পানি
নেমে
যেত।
কিন্তু
বৃষ্টি
যখন
ধারাবাহিকভাবে
হতে
থাকে
তখন
মাঠ-ঘাট
সব
স্যাচুরেটেড
হয়ে
যায়।
তখন
মাটি
পানি
চুষতে
পারে
না।
ভূ-উপরিস্থ
পানির
প্রবাহ
বন্যার
সৃষ্টি
করে।
এখনকার
বন্যার
কারণ
অতিবৃষ্টি।
এটা কি
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব?
কোনো
সন্দেহ
নেই
যে
এটা
জলবায়ু
পরিবর্তনের
কারণে
হচ্ছে।
১২২
বছর
ধরে
ইন্ডিয়ান
মেট্রোরেজিক্যাল
সার্ভে
মেঘালয়,
অরুণাচলসহ
উজানের
অঞ্চলগুলোর
বৃষ্টির
রেকর্ড
রাখে।
সেখানে
দেখা
গেছে,
গত
১২২
বছরে
নয়বার
একদিনে
৮০০
মিলিমিটার
বৃষ্টিপাত
অতিক্রম
করেছে।
সেই
নয়বারের
মধ্যে
এ
মাসেই
দুবার
সেই
সংখ্যা
পার
হয়েছে।
১৫
ও
১৭
জুন
এটা
হয়েছিল।
এর
কাছাকাছি
গিয়েছে
অনেকবার।
আমাদের
উজানে
১০
দিন
ধরে
বৃষ্টি
হয়েছে।
এই
যে
বৃষ্টিপাত
হওয়ার
ধরন
ও
লক্ষণ
তাতে
অবধারিতভাবে
মনে
হয়
জলবায়ু
পরিবর্তনের
কারণেই
হচ্ছে।
সবচেয়ে ভয়ের
ব্যাপার
হলো,
জলবায়ু
পরিবর্তনের
কারণে
যে
হচ্ছে
তা
তো
আর
রাতারাতি
হয়নি;
রাতারাতি
চলেও
যাবে
না।
এ
বছর
যে
এটাই
শেষ
বন্যা
তাও
বলা
যাচ্ছে
না।
শুধু কি
জলবায়ু পরিবর্তন এই বন্যার জন্য দায়ী?
অনেকটাই।
মূলত
তিনটি
কারণ
বন্যার
জন্য
দায়ী।
একটা
হচ্ছে
বৈশ্বিক
কারণ।
সেখানে
বাংলাদেশের
হাত
নেই।
সেটি
হলো
জলবায়ু
পরিবর্তন।
দ্বিতীয়
কারণটি
হচ্ছে
আন্তঃদেশীয়
কারণ।
অববাহিকাভিত্তিক
যেসব
দেশের
ভেতর
দিয়ে
বাংলাদেশের
নদীগুলো
প্রবাহিত
হয়েছে,
এক্ষেত্রে
মেঘনা
অববাহিকা
মূলত
ভারত
ও
বাংলাদেশ
শেয়ার
করে,
এখানে
তৃতীয়
কোনো
দেশ
সেভাবে
নেই।
প্রশ্ন
হলো,
আন্তঃদেশীয়
যে
পানি
ব্যবস্থাপনা,
যা
পুরো
পদ্ধতি
অর্থাৎ
প্রতিটি
নদীর,
প্রতিটি
খালের,
প্রতিটি
নালার
শুরু
থেকে
শেষ
পর্যন্ত,
এটাকে
একটি
পদ্ধতিতে
ধরে
নিয়ে
একটা
ব্যবস্থাপনার
আওতায়
এনেছি
কিনা।
এটা
আনছি
না,
কারণ
ভারত
তাদের
মতো
করে,
বাংলাদেশ
তার
মতো
করছে।
এটা
হচ্ছে
দ্বিতীয়
কারণ।
তৃতীয়
কারণটা
হচ্ছে
অভ্যন্তরীণ।
অর্থাৎ
মেঘনা
অববাহিকার
যতগুলো
নদী-নালা—মেঘালয়,
মিজোরাম,
নাগাল্যান্ড,
মণিপুর
কিংবা
আসাম
থেকে
বাংলাদেশের
গ্রেটার
সিলেট-গ্রেটার
ময়মনসিংহে
প্রবেশ
করছে,
এগুলোই
বন্যা
সৃষ্টি
করছে।
এগুলোর
৪৩
শতাংশ
অংশ
বাংলাদেশের
ভেতরে
আর
৫৭
শতাংশ
ভারতের
মধ্যে।
ভারত
তাদের
মতো
করে
পানি
ও
নদী
ব্যবস্থাপনা
করছে।
যৌথ
নদী
কমিশনের
মাধ্যমে
কিছু
নদী
তালিকাভুক্ত
করা
হয়েছে
বটে।
কিন্তু
তার
বাইরেও
আরো
অনেক
নদী
আছে,
যেগুলো
আন্তঃনদী।
এগুলো
ছোট
ছোট
নদী।
সব
মিলিয়ে
একটা
গবেষণায়
আমি
দেখেছি
তার
বাইরেও
৩০টার
মতো,
সব
মিলিয়ে
৪৬টি
নদী
ভারত
থেকে
বাংলাদেশের
গ্রেটার
সিলেট
ও
গ্রেটার
ময়মনসিংহের
হাওর
অঞ্চলে
প্রবেশ
করেছে।
প্রায় প্রতিটা
নদীতে
ভারত
নিজের
মতো
করে
পানি
ব্যবস্থাপনা
করছে।
হয়তো
বাঁধ
দিয়েছে,
জলবিদ্যুৎ,
সেচ
প্রকল্প
করেছে।
তারা
নিজেদের
সুবিধামতো
করেছে।
কিন্তু
এটা
নিয়ে
বাংলাদেশের
পক্ষ
থেকে
এখন
পর্যন্ত
কোনো
আলোচনাই
শুনিনি,
যেমনটা
তিস্তা,
গঙ্গা
ও
ব্রহ্মপুত্র
নিয়ে
আলোচনা
শুনি।
মেঘনা
অববাহিকা
যৌথ
নদী
কমিশনের
ন্যূনতম
আলোচনায়
পর্যন্ত
আসে
না।
বাংলাদেশের ভেতরে
প্রবাহিত
হওয়া
৪৩
শতাংশ
নদীর
অংশ
আমরা
ঠিকভাবে
ব্যবস্থাপনার
আওতায়
নিয়ে
আসছি
না।
সেগুলো
রক্ষণাবেক্ষণ
ঠিকভাবে
করছি
না।
সেই
নদী-খালগুলো
বাংলাদেশের
অভ্যন্তরেও
ভরাট
হয়ে
যাচ্ছে।
দখল
হয়ে
যাচ্ছে।
এ
নদীগুলোর
অববাহিকায়
(নদীর দুই
পারের
অঞ্চলকে
অববাহিকা
বলে),
অর্থাৎ
দুই
পারে
আমরা
কী
করছি
তার
ওপর
নির্ভর
করছে
নদীতে
পানির
ধারণক্ষমতা
কতটা
হবে।
আমরা যদি
নদীর
দুই
পারের
গাছপালা
সব
কেটে
ফেলি
তাহলে
তো
পানি
আর
ধরে
রাখবে
না।
বৃষ্টি
হলেই
তা
খালে
বা
নদীতে
গিয়ে
পড়বে,
সেটা
উপচে
গিয়ে
বন্যা
হবে।
আমরা
যে
কৃষিকাজ,
মাইনিং
বা
বালি
উত্তোলনের
মাধ্যমে
সেডিমেন্ট
বা
পলি
কিংবা
মাটি
নরম
করে
দিচ্ছি,
তা
বৃষ্টির
পানির
সঙ্গে
এসে
নদীর
তল
ভরাট
হয়ে
যাচ্ছে।
ভরাট
হয়ে
ধারণক্ষমতা
কমে
যাচ্ছে।
এটা
অভ্যন্তরীণ।
বৈশ্বিক,
আন্তঃসীমান্তীয়
ও
অভ্যন্তরীণ
কারণেই
বন্যার
প্রকোপ
এবং
বন্যার
দীর্ঘসূত্রতা
বাড়ছে
বাংলাদেশে।
নদী ভরাট
কিছুটা প্রকৃতির নিয়মে হচ্ছে,
কিছুটা আমরাও
করছি। আমরা
অবকাঠামো নির্মাণ করছি, দখল
করে ভবন
বানাচ্ছি ইত্যাদি এগুলোর প্রভাব কেমন?
এর
প্রভাব
ব্যাপক।
প্রাকৃতিক
নিয়মে
কিছুটা
হবে।
কারণ
আমাদের
অঞ্চলে
উজানে
প্রচুর
পাহাড়
রয়েছে।
তারপর
আমরা
কৃষিকাজ
করি।
কৃষিকাজ
করলে
মাটি
একটু
নরম
করতেই
হয়।
তখন
তার
কিছু
অংশ
নদীবক্ষে
গিয়ে
পড়বে,
এটা
প্রাকৃতিক।
কিন্তু
আমরা
যখন
যত্রতত্রভাবে
পাহাড়
কেটে
ফেলি
বা
টিলা
কাটি
অথবা
বালি
উত্তোলন
করি
তখন
সেটি
গড়িয়ে
নদীবক্ষ
আরো
ভরাট
করে
দেয়।
২০০৪
সালে
সিলেট
অঞ্চলে
একটা
জায়গায়
যাদুকাটা
নদীর
প্রস্থ
ছিল
১৬৮
মিটার।
এটা
স্যাটেলাইট
ইমেজ
থেকে
দেখা
যায়।
২০১৭
সালে
একই
সময়ে
একই
জায়গার
ইমেজে
দেখা
যাচ্ছে
এটি
৪০
মিটার
কমে
এসেছে।
এটা
একটা
উদাহরণ।
আরেকটা
উদাহরণ
ছাতক
ও
জয়ন্তিয়া
২০০৪
থেকে
২০১৭
সালের
মধ্যে
অনেকটা
সংকুচিত
হয়ে
পড়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ
এলাকায়
পিয়ান
নদী
আছে,
সেটারও
গভীরতা
ও
প্রস্থ
সময়ের
ব্যবধানে
অনেক
কমেছে।
মানুষ
বালি
উত্তোলন
ও
কৃষিকাজের
মাধ্যমে
নদী
পরিবর্তন
করে
ফেলেছে।
প্রতিটি
নদীর
গভীরতা
ও
প্রশস্ততা
সময়ের
ব্যবধানে
কমেছে।
এজন্য
বাংলাদেশের
নদীর
পানি
ধারণক্ষমতা
কমে
যাচ্ছে।
এভাবে আমরা
দেশের
অভ্যন্তরের
নদীগুলোর
ধারণক্ষমতা
অনেক
কমিয়ে
দিচ্ছি।
এর
বাইরেও
অনেক
কারণ
রয়েছে।
যেমন
অবকাঠামো
নির্মাণ।
আমাদের
হাওর
অঞ্চলে
কিছু
মহাসড়ক
বানানো
হয়েছে
এবং
কিছু
বাঁধ
দেয়া
হয়েছে
সেচের
জন্য।
এতেও
পানির
স্বাভাবিকপ্রবাহ
বাধাগ্রস্ত
হচ্ছে।
অষ্টগ্রাম-মিঠামইন-ইটনায়
৩০
কিলোমিটার
লম্বা
মহাসড়কের
মাধ্যমে
আমাদের
হাওর
অঞ্চলকে
দুই
ভাগে
বিভক্ত
করা
হয়েছে।
বর্ষাকালে
হাওরে
যখন
পানি
বেড়ে
ওঠে,
তখন
এক
নদীর
পানি
অন্য
নদীতে
গিয়ে
পড়ে।
তাতে
পানি
একটু
প্রসার
হয়ে
যায়।
পানি
প্রসার
হলে
বন্যার
প্রবণতা
একটু
কমে
আসে।
কারণ
হাওরে
বর্ষাকালে
সব
নদী
একটা
বড়
অঞ্চল
হয়ে
যায়,
বড়
একটা
সাগরের
মতো
হয়ে
যায়।
বাঁধ দিয়ে
কিংবা
মহাসড়ক
বানিয়ে
সেটাকে
খণ্ডিত
করা
হলে
পানিপ্রবাহ
বিঘ্নিত
হয়।
হাওরের
যে
মহাসড়কের
কথা
বলছি
সেটিকে
যদি
হাওরের
বৈশিষ্ট্য
বজায়
রেখে
করা
হতো
বা
উড়াল
সেতুর
মতো
নির্মাণ
করলে
এর
নিচ
দিয়ে
পানি,
মাছ,
নৌকা
সব
যাতায়াত
করতে
পারত
এবং
হাওরের
বৈশিষ্ট্য
বজায়
থাকত।
আমি
মহাসড়কের
বিরোধিতা
করছি
না।
কারণ
যোগাযোগের
জন্য
এটা
আমাদের
প্রয়োজন।
এই
৩০
কিলোমিটার
মহাসড়কে
মাত্র
২
শতাংশ
খোলা
রাখা
হয়েছে,
অর্থাৎ
সেতু
রাখা
হয়েছে।
এর
ন্যূনতম
৩০
শতাংশ
অংশ
খোলা
রাখা
প্রয়োজন
ছিল।
সেচের জন্য
অনেক
বাঁধ
নির্মাণ
করা
হয়।
সে
বাঁধগুলোও
ততটা
কার্যকর
হয়েছে
বলে
মনে
হয়
না।
প্রতি
বছর
বন্যা
হলে
এ
বাঁধগুলো
টেকে
না,
ভেঙে
যায়।
হয়
এটার
গুণগত
মান
ভালো
না
অথবা
এটা
যে
মাটি
দিয়ে
তৈরি
করা
হয়,
তা
যথেষ্ট
পরিমাণ
শক্ত
না;
যা
পানির
চাপ
সহ্য
করতে
পারে
না।
তাহলে
মানুষকে
নিরাপত্তার
মিথ্যা
আশ্বাস
দেয়া
হচ্ছে
যে
বাঁধ
তোমাদের
রক্ষা
করবে,
আসলে
তা
করছে
না;
বরং
উল্টো
বন্যাকে
প্রলম্বিত
করছে।
হাওর অঞ্চলের
বন্যার
পানি
বের
হয়
ভৈরবের
সেতুর
নিচ
দিয়ে।
ভৈরবের
মহাসড়কে
রেলওয়ে
সেতুর
পাশে
আরো
দুটি
মহাসড়ক
সেতু
করা
হয়েছে।
তিনটা
সেতু
মিলিয়ে
পানিপ্রবাহে
প্রচণ্ড
বাধার
সৃষ্টি
করে
এবং
নদীটা
উজানের
তুলনায়
এখানে
অনেক
সংকুচিত।
আমাদের যেটা
করতে
হবে,
হাওর
অঞ্চলের
প্রতিটা
নদী
সার্ভে
করে
এগুলোর
পানির
ধারণক্ষমতা
কত
হওয়া
জরুরি,
এর
সঙ্গে
মিল
রেখে
উজান
থেকে
ভাটি
পর্যন্ত
নদী
খনন
করতে
হবে।
বৃষ্টিপাত আসামে
হয়েছে, ওখানকার পানি আমাদের এখানে প্রবেশ করেছে। বিষয়টি বাংলাদেশ ও
ভারত সমন্বিতভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যেত
না?
অবশ্যই
নেয়া
যায়
এবং
নেয়াটা
জরুরি।
এটাই
সমাধানের
একটা
রূপরেখা
হতে
পারে।
পুরোপুরি
বন্যা
সরিয়ে
দেয়া
যাবে
না।
কারণ
বন্যা
একটি
প্রাকৃতিক
প্রক্রিয়া,
সেটা
ঘটবে
এবং
জলবায়ু
পরিবর্তনের
কারণে
এটা
বাড়বে।
অর্থাৎ
তাপমাত্রা
যদি
আগের
তুলনায়
দেড়
ডিগ্রি
বেড়ে
যায়
কিংবা
দুই
ডিগ্রি
সেলসিয়াস
বাড়ে
তাহলে
আমাদের
ব্রহ্মপুত্র
অববাহিকায়
বৃষ্টিপাতের
পরিমাণ
প্রায়
৪০
শতাংশ
বেড়ে
যাবে।
বাড়তি
যে
বৃষ্টি
হবে
তা
বন্যার
প্রবণতা
আরো
বাড়িয়ে
দেবে
ভবিষ্যতে।
মেঘনা
অববাহিকায়ও
বৃষ্টির
পরিমাণ
বাড়বে
আগামী
৫০-৬০
বছরে।
তার
জন্য
আমাদের
প্রস্তুতি
নিতে
হবে।
ভারতের
সঙ্গে
যৌথ
সমন্বিত
প্রকল্প
নেয়া
ছাড়া
কোনো
বিকল্পই
নেই।
ভারত তাদের
নিজেদের
মতো
করেই
কাজ
করছে।
তাদের
যখন
পানির
প্রয়োজন
নেই,
তাত্ক্ষণিকভাবে
তারা
সব
গেট
খুলে
দেয়া
হয়।
বাংলাদেশে
ভাটির
ব্যাপারে
তারা
ন্যূনতম
কোনো
চিন্তাও
করে
না।
কারণ
আমাদের
কোনো
চুক্তি
নেই,
সমন্বিত
কোনো
প্রকল্প
নেই।
এজন্য
উজান
থেকে
ভাটি
পর্যন্ত
নদীগুলোকে
দুই
দেশের
যৌথভাবে
ব্যবস্থাপনার
আওতায়
আনতে
হবে।
তাহলে
অভিশাপটা
সম্পদে
পরিণত
করা
যাবে
এবং
বন্যার
প্রবণতাও
কিছুটা
কমিয়ে
আনা
যাবে।
সমন্বিত নদী
ও
পানি
ব্যবস্থাপনার
জন্য
ভারতের
সঙ্গে
বাংলাদেশের
এক
ধরনের
দীর্ঘমেয়াদি
চুক্তি
থাকতে
হবে।
উজানে
যেকোনো
ধরনের
পানি
কিংবা
ভূমিরূপের
পরিবর্তন
আনতে
হলে
বাংলাদেশের
সঙ্গে
আলোচনা
করতে
হবে।
পানিতে
যেন
আমাদের
কোনো
ক্ষতি
না
হয়,
সেভাবে
ব্যবস্থাপনা
করতে
হবে।
এ
প্রকল্পগুলোর
জন্য
যদি
অর্থ
শেয়ার
করার
প্রয়োজন
হয়,
তাহলে
বাংলাদেশের
রাজি
থাকা
দরকার।
এটা
শুধু
বর্ষাকালীন
সমস্যা
না,
শীতকালেও
আমাদের
বোরো
ধানের
যখন
পানি
প্রয়োজন
তখন
তারা
পানি
আটকে
দেয়।
যদ্দূর
জানা
যায়,
আসামে
ফুলেরতল
সেচ
প্রকল্প
করা
হয়েছে।
সেখানে
১৪
হাজার
স্কয়ার
কিলোমিটার
জায়গার
সেচ
প্রকল্পের
পানি
ধরে
রাখে।
একটা
যৌথ
নদীতে
তারা
একতরফাভাবে
পানি
নিয়ন্ত্রণ
করতে
পারে
না।
এজন্য
ভারতের
সঙ্গে
আমাদের
আলোচনা
শুরু
করা
দরকার।
বন্যা নিয়ন্ত্রণে আমরা নেদারল্যান্ডসের মতো কোনো
পরিকল্পনা নিতে
পারি কিনা?
নেদারল্যান্ডসের
পানি
ব্যবস্থাপনার
রূপ
কিছুটা
ভিন্ন।
কারণ
তাদের
দেশে
আমাদের
দেশের
১০
ভাগের
এক
ভাগও
বৃষ্টিপাত
হয়
না।
১০
ভাগের
এক
ভাগও
পলি
সেই
নদীগুলো
দিয়ে
প্রবাহিত
হয়
না।
সারা
বছর
ধরে
তাদের
সমানভাবে
বৃষ্টিপাত
হয়
না।
আমাদের
যেমন
জুন
থেকে
সেপ্টেম্বরে
৮০
শতাংশ
পানিপ্রবাহ
হয়।
দুটো
দেশের
নদী
ও
পানিপ্রবাহের
বৈশিষ্ট্যের
ভিন্নতা
রয়েছে।
এটা
বিবেচনায়
রাখলে
নেদারল্যান্ডসের
পরিকল্পনা
সরাসরি
বাংলাদেশে
প্রযোজ্য
হবে
না;
বরং
এটা
ক্ষতির
কারণ
হয়ে
দাঁড়াবে।
২০২২
সালে
এটাই
শেষ
বন্যা
নাও
হতে
পারে।
এটা
মাত্র
বর্ষাকালের
শুরু।
আমাদের
দেশে
বন্যা
আগস্টে
ও
সেপ্টেম্বরে
হয়।
সেজন্য
আমাদের
সুদূরপ্রসারী
পরিকল্পনা
নিতে
হবে।
খরচ
যা-ই
হোক,
আমাদের
টিকে
থাকতে
হবে।
আমাদের বন্যার পূর্বাভাস আসলে
কেমন, এটা
কি নতুন
করে সাজানো দরকার?
আমাদের
পূর্বাভাস
দেয়া
হয়
দেশের
জিওগ্রাফিক
অঞ্চলের
ডাটার
ওপর
ভিত্তি
করে।
কিন্তু
আমাদের
প্রত্যেকটা
নদীর
উত্পত্তি
বাইরে
থেকে।
সেখানে
কী
পরিমাণ
বৃষ্টি
হচ্ছে
এবং
সেখানে
পানি
প্রবাহের
পরিমাণ
কী—এ
ডাটাগুলো
যদি
যারা
পূর্বাভাস
দেন
তাদের
হাতে
এসে
না
পড়ে
তাহলে
তারা
পূর্বাভাস
সঠিকভাবে
দিতে
পারবেন
না।
এজন্যই
অববাহিকাভিত্তিক
সমন্বিত
পানি
ব্যবস্থাপনা
দরকার।
আমাদের
ডাটার
অনেক
ঘাটতি
রয়েছে।
হাওর
অঞ্চলসহ
প্রতিটি
উপজেলায়
আবহাওয়া
কেন্দ্র
থাকা
দরকার।
সেখানে
প্রতিক্ষণ
কত
পরিমাণ
বৃষ্টি
হচ্ছে,
বাতাসের
বেগ
কত,
আর্দ্রতা
কত,
সেখানকার
নদীগুলোয়
পানি
প্রবাহ
কত—এগুলো
ইন্টারনেটের
মাধ্যমে
নিয়মিত
গবেষক
ও
অন্যান্য
মানুষের
জন্য
উন্মুক্ত
করা
উচিত।
তাহলে
সরকারি
অফিস-আদালতের
বাইরে
গিয়েও
অনেক
গবেষক
এটা
নিয়ে
গবেষণা
করতে
পারবেন।
উত্তরবঙ্গে প্রতি
বছর বন্যা
হয়। এটাকে
কীভাবে সামলানো যায়?
অববাহিকাভিত্তিক
পানি
ব্যবস্থাপনা,
পলি
ব্যবস্থাপনা,
ভূমিরূপ
ব্যবস্থাপনায়
যেতে
না
পারলে
বন্যা
কমিয়ে
আনা
যাবে
না।
বরং
ভবিষ্যতে
বন্যার
প্রকোপ
ও
প্রবণতা
আরো
বাড়বে।
তার
জন্য
আমাদের
নদীগুলোর
পানি
ধারণক্ষমতা,
তথ্য-উপাত্ত
সংগ্রহ
জোরদার
ও
আশ্রয়কেন্দ্র
বাড়াতে
হবে।
আমাদের
দেশ
যদি
টিকিয়ে
রাখতে
হয়,
আমাদের
জনসম্পদ
ও
কৃষিকে
রক্ষা
করতে
হয়,
আমাদের
বেঁচে
থাকতে
হয়,
তাহলে
নদীগুলো
সংস্কার
করতে
হবে।
নদী
বাঁচলেই
বাংলাদেশ
বাঁচবে।
শ্রুতলিখন: লাইছ ত্বোহা