প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে এমসিসিআইয়ের প্রস্তাব

রফতানি পর্যায়ে উৎসেকর দশমিক ৫% বহাল রাখার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন বাজেটে রফতানি পর্যায়ে উৎসেকর কর্তন দশমিক শতাংশ থেকে শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উৎসেকর আগের মতো দশমিক শতাংশে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, উৎসেকর বহাল রাখার মাধ্যমে কোম্পানির করহার উৎসেকর কর্তনের ব্যবধান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোম্পানির করহার হ্রাসের সুবিধা ভোগ করা যাবে এবং বাজেট বৃদ্ধি পাবে।

কোম্পানির করহারের শর্ত শিথিল করার দাবি জানিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিকলি ট্রেডেট কোম্পানির করহার ২০ শতাংশ (১০ শতাংশের অধিক শেয়ার আইপিওর মাধ্যমে হস্তান্তর), এক ব্যাক্তি কোম্পানির করহার ২২ দশমিক শতাংশ এবং নন-পাবলিকলি ট্রেডেট কোম্পানির করহার ২৭ দশমিক শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে দশমিক শতাংশ কম। তবে সুবিধা পেতে সব আয় এবং গ্রহণ অবশ্যই ব্যাংকিং ট্রান্সফারের মাধ্যমে লেনদেন করতে হবে এবং সব ধরনের খরচ বিনিয়োগ (বার্ষিক ১২ লাখ টাকা নগদ লেনদেন ব্যতীত) ব্যাংকিং ট্রান্সফারের মাধ্যমে করতে হবে বলে শর্ত দেয়া হয়। বিষয়টিকে অবাস্তবায়নযোগ্য উল্লেখ করে এমসিসিআই জানায়, মাঠ পর্যায়ে নিজস্ব বিক্রয়কর্মীর মাধ্যমে দোকানে-দোকানে পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পণ্য বিক্রয়কারী রিটেইল বিজনেস সুপারশপের ক্ষেত্রে আয় প্রাপ্তি ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে নেয়ার শর্ত প্রত্যাহার করা হোক।

এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী মুনাফায় শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল (ডব্লিউপিপিএফ) খরচ আয়কর অধ্যাদেশের ধারা ৩০ (কিউঅনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য না হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে এমসিসিআই বিষয়টিকে শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে ডব্লিউপিপিএফের ক্ষেত্রে খরচগুলো পূর্বাবস্থা অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য করার প্রস্তাব দেয়া হয়। এমসিসিআই জানায়, শ্রম আইনের বিধান অনুযায়ী কর-পরবর্তী মুনাফার ওপর শতাংশ ডব্লিউপিপিএফ পেমেন্ট করা হয়। শ্রম আইনের ধারা ২৪৪ অনুযায়ী কোম্পানির করযোগ্য আয় হিসাব করার সময় ডব্লিউপিপিএফ পেমেন্টকে করযোগ্য আয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। অর্থাৎ ডব্লিউপিপিএফ পেমেন্ট অনুমোদনযোগ্য খরচ। তাই ফাইন্যান্স বিল ২০২২- প্রস্তাবিত ৩০ (কিউ) ধারাটি শ্রম আইনের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।

পণ্য পরিবহন ট্রান্সপোর্ট সেবার ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে শতাংশ হারে আয়কর কর্তনের বিষয়ে সর্বোচ্চ শতাংশ হারে আয়কর কর্তনের প্রস্তাবনা দিয়েছে এমসিসিআই। এমসিসিআই জানায়, ক্ষুদ্র সরবরাহকারীদের সরবরাহের বিষয়াদি বিবেচনায় রেখে একটিমাত্র ফ্ল্যাট হার না রেখে বিভিন্ন স্ল্যাব-ভিত্তিক হার পরিগণনা করা হলে ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।

প্রস্তাবিত বাজেটে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার প্রমাণ প্রদর্শন করার কথা বলা হয়েছে। এর ফলে প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধি পাবে উল্লেখ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে রিটার্ন জমা দেয়ার প্রমাণ প্রদর্শনের পরিবর্তে আগের মতো ১২ ডিজিটের কর প্রদানকারী শনাক্তকরণ নম্বর প্রদর্শন করার দাবি জানানো হয়। সুদের ওপর উৎসেকর কোম্পানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ কর্তনের প্রস্তাবের বিপরীতে এমসিসিআই শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া আয়কর রিটার্ন জমাদানের রসিদের পরিবর্তে ১২ ডিজিটের টিআইএন ব্যবস্থা পুনর্বহাল এবং কর কর্তন, সংগ্রহ ইত্যাদিতে ব্যর্থতার পরিণতির ক্ষেত্রে জরিমানার প্রস্তাবিত বিধানটি বাতিলের প্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে কর কর্তন বা সংগ্রহ, যাচাই আইনগত বাধ্যবাধকতা প্রয়োগ করার ক্ষমতা-সংক্রান্ত বিষয়টির মাধ্যমে প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা দেখা যাবে উল্লেখ করে এমসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে ১১৭() ধারাটি বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণপূর্বক সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়।

এছাড়া বাজেটে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার প্রমাণপত্র প্রয়োজন হবে, যে ব্যক্তির কাছে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ পেশ হয়েছে তাকে বোর্ড কর্তৃক নির্দিষ্ট কর পদ্ধতিতে এর সত্যতা যাচাই করা এবং ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস কর্তৃক ১০ লাখ টাকার বেশি অর্থদণ্ডের প্রস্তাব দেয়া হয়। এতে প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা দেখা যাবে উল্লেখ করে এমসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে এসব বাধ্যবাধকতা বাতিলের প্রস্তাব দেয়া হয়।

এদিকে বাজেটে করমুক্ত আয়কর সীমা লাখ টাকার পরিবর্তে লাখ টাকা রাখার প্রস্তাব করেছে এমসিসিআই। এছাড়া ন্যূনতম কর-সংক্রান্ত ৮২ (সি) এবং অর্থবিল ২০২২-এর ১৪৩ (সি) ধারা বিলোপ করার প্রস্তাব দেয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন