আরো বেশি সময় ব্যাটিং করায় জোর সিডন্সের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দক্ষিণ আফ্রিকা সফর, এরপর শ্রীলংকার বিপক্ষে হোম সিরিজবাংলাদেশের ব্যাটিং নিয়ে ছিল নিত্য হাহাকার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও তা পিছু ছাড়ছে না। অ্যান্টিগায় ১০৩ রান করা বাংলাদেশ সেন্ট লুসিয়ায় খানিকটা উন্নতির আভাস দিলেও আলোর রেখা দ্রুত মিলিয়েও যায়। ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রথম দিন দুই উইকেটে শতরান পেরিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত অলআউট হয় ২৩৪ রানে। ব্যাটাররা ভালো শুরুর পরও উইকেটে টিকে থাকতে না পারায় দিনের খেলা শেষে হতাশা ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্স। তিনি চান, বাংলাদেশ দলের ব্যাটাররা আরো বেশি সময় উইকেটে টিকে থাকুক, বেশি সময় ব্যাট করুক।

৫৩ রান করে টপ স্কোরার লিটন দাস। যদিও নম্বরে নামা এবাদত হোসেনকে স্ট্রাইকে না পাঠাতে যে তাড়া ছিল তা- কাল হয় লিটনের জন্য, মিডঅনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। তামিম দ্রুতগতিতে রান তুলছিলেন, অল্প সময়ে ৯টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। যদিও মধ্যাহ্নভোজের আগ মুহূর্তে আলজারি জোসেফের এক্সট্রা বাউন্সের শিকার হন তিনি।

একই উইকেটে ক্যারিবিয়ানরা নির্বিঘ্নে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে নেয়। শিষ্যদের ব্যাটিং কৌশল নিয়ে সিডন্স বলেন, আজ (শুক্রবার) ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগ্রাসী ব্যাটিং করেছে, যদিও আমাদের বোলাররা খুব ভালো বল করেনি। তামিমও আগ্রাসী ছিল। এটা হয়তো পিচ সম্পর্কে বার্তা দেবে। তবে আপনি যখন কিছু বল খেলবেন তখন তো অস্বস্তি থাকার কথা নয়, বরং সবকিছু আয়ত্তে আসার কথা। তামিমও পিচে মানিয়ে নিয়েছিল, যদিও সে এমন একটি বলে আউট হলো যেটি কিনা খানিকটা বাউন্স করল।

তিনি আরো বলেন, তামিম লিটন দারুণ ব্যাটিং করেছে, কিন্তু ফিফটিজ কিংবা ফোরটিজ আপনাকে বোর্ডে যথেষ্ট রান এনে দেবে না। তাদের আরো অনেকটা সময় ব্যাটিং করার প্রয়োজন ছিল। কয়েকজন তরুণও মুগ্ধ করেছে, কিন্তু তারা আবারো আউট হওয়ার মিছিলে যোগ দিয়েছে। আম্পায়ারের কিছু সিদ্ধান্ত খুব কাছাকাছি ছিল, যদিও এগুলো আমাদের পক্ষে যায়নি। ২৩০ রান করেও আমরা কিন্তু স্বস্তিদায়ক অবস্থানে নেই।

প্রথম টেস্টের চেয়ে টেস্টে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে যে উন্নতি দেখেন সিডন্স তা হলো বলের মেধা যাচাই করে খেলা। তিনি মনে করেন, এবার অফ স্টাম্পের বল বিচার করে খেলতে সমর্থ হন ক্রিকেটাররা এবং তাদের মধ্যে শৃঙ্খলাও ছিল। যদিও অতিথিরা উইকেটে ১০৫ রান থেকে পরের ৬০ রানের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বসে। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার দলের ১৬৫ রানের সময় আউট হয়ে যান। এরপর টেলএন্ডের লড়াইয়ে ২৩৪ রান তুলতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন পর টেলএন্ড হাসল বাংলাদেশের, দলকেও এনে দিল সম্মানজনক সংগ্রহ।

নিয়ে সিডন্স বলেন, আজ (শুক্রবার) আমরা অপেক্ষাকৃত ধৈর্যশীল ছিলাম। এদিন আমরা বেশ ভালোভাবেই বল ছেড়ে দিয়েছি। সপ্তাহখানেক ধরে নিয়ে কাজ করা হয়েছে। প্রথম টেস্টে আমরা খুব বেশি বল খেলেছি। তারা সত্যিই অনেক ভালো বোলিং করেছে, কিন্তু আমরা যতটা বেশি সময় ব্যাটিং করতে চেয়েছি তা পারিনি। আমি মনে করি না, এই উইকেটে ২৩০ ভালো কোনো সংগ্রহ।

বাংলাদেশের সাবেক এই হেড কোচ বলেন, আগে ব্যাটিং করতে গেলে কিছুটা চাপ থাকেই, ম্যাচটিকে মসৃণভাবে এগিয়ে নেয়ার চাপ। আমরা কিন্তু তা ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছি। আমাদের সংগ্রহ ছিল ১০০/, যা কিন্তু ৪০০ সংগ্রহের সূচনা। কিন্তু এদিন আমরা যা অর্জন করতে পারতাম, ২৩০ রান তা থেকে অনেক দূরে।

লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করার ওপর জোর দেন সিডন্স, যদিও ২০২২ সালে মাত্র একটি ম্যাচ ছাড়া আর কোনোটিতেই তিনি তা পাননি। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে বছরের মধ্যে প্রথম তিনশোর্ধ্ব সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ, ওই টেস্টে মুমিনুল হকের দল জয়ও ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া ২০১৪ সাল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে ইনিংসে তিনশোর্ধ্ব সংগ্রহ গড়তে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ।

সিডন্সের কথায়, আমাদের আরো বেশি সময় ধরে ব্যাটিং করতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট মানেই আপনাকে লম্বা সময় ধরে ব্যাট করতে হবে। আপনাকে দিনের শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হবে। এমনকি আমাদের আগামীকাল পর্যন্ত ব্যাটিং করার কথা ভাবতে হবে। মুহূর্তে আমরা সেই কাজটি করতে ব্যর্থ হচ্ছি বারবার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন