রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ ও মূল্যস্ফীতির মাঝেও ২০২২ সালে বিশ্বে বিলাসী পণ্যের বিক্রি ৫ শতাংশ বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নাগরিকদের দামি ঘড়ি, অলংকার ও জুতা কেনার হার বাড়ায় বিক্রি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানেজমেন্ট কনসাল্টিং প্রতিষ্ঠান বাইন এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।
একটি সাক্ষাত্কারে বাইনের অংশীদার ক্লাউডিয়া ডি আরপিজিও জানান, নাগরিকদের কেনাকাটায় এখনো কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। বাইনের ধারণা, চলতি বছর ব্যক্তিগত বিলাসী পণ্যের বিক্রি ৩০ হাজার ৫০০ কোটি ইউরো বা ৩২ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে। আরো বেশি হিসাব করলে ৩৩ হাজার কোটি ইউরোতে পৌঁছবে। কভিড-১৯ মহামারী পরবর্তী সময়ে প্রথম পুনরুদ্ধার পদক্ষেপ এটি। যেখানে এর আগে ৩১ হাজার কোটি ইউরোর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল।
ডি আরপিজিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাইন বিক্রি বাড়ার বিষয়ে ইতিবাচক পূর্বাভাস দিয়েছে। বর্তমানে যে অস্থিতিশীল ও অশান্ত পরিবেশ বিদ্যমান সে বিষয়ে আমরা অবগত। ইউক্রেনে মস্কোর সামরিক আগ্রাসনের পর রুশ ধনকুবেরদের কেনাকাটার চাহিদা অনেকটা কমে যাওয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আগ্রাসনের আগে রুশ ধনকুবেররা দেশে ও দেশের বাইরে ৭০০ কোটি ডলারের বেশি বিলাসী পণ্য কিনেছে। এটি বৈশ্বিক বাজারের ২ থেকে ৩ শতাংশ।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার পর্যটকরা ইউরোপ ও রাশিয়ার অধিকাংশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারেননি। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের লেনদেন অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হয়। বাইনের গবেষকরা জানান, গত বছর পোশাক, প্রসাধনী সামগ্রী থেকে শুরু করে অলংকার ও অন্যান্য বিলাসী পণ্যের বিক্রি ২৮ হাজার ৮০০ কোটি ইউরোতে পৌঁছেছিল। ছুটির মৌসুমে অধিক ক্রয়ের কারণে ২৮ হাজার ৩০০ কোটি ইউরোর পূর্বাভাস ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
চীনের মূল ভূখণ্ডে মূল্যস্ফীতি ও কভিড-১৯ মহামারীর কারণে আরোপিত লকডাউনের মধ্যেও বিলাসী পণ্য উৎপাদনকারীরা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় চাহিদা পূরণে কাজ করেছে। ডি আরপিজিও বলেন, মূল্যস্ফীতি সত্ত্বেও কেনাকাটার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের যে আগ্রহ দেখা গিয়েছে তাতে আমরা বিস্মিত। বাইনের তথ্যানুযায়ী, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে চীনের গ্রাহকদের ব্যয় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। প্রতিবেদনে দক্ষিণ কোরিয়াকে অন্যতম উদীয়মান বাজার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এর আগে বাইন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, বিলাসী পণ্যের বড় বাজার হিসেবে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের জায়গা দখলে নিয়েছিল।