
অ্যান্টিগায় ৭ উইকেটের পরাজয়ে দুই টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ ড্র করতে চাইলে সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের বিকল্প নেই সাকিব আল হাসানের দলের সামনে। সফরকারীদের জন্য বাঁচা-মরার এই ম্যাচটি শুরু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার। গ্রস আইলেটের ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। সম্প্রচারের অনিশ্চয়তা কেটেছে। এই ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশি স্পোর্টস চ্যানেল টি-স্পোর্টস।
প্রথম টেস্টের পর দলে একাধিক পরিবর্তন আসছে।
চোটের কারণে ইয়াসির আলী প্রথম টেস্টে খেলতে পারেননি। তার জায়গায় ডাক পাওয়া এনামুল
হক বিজয় কাল থাকতে পারেন একাদশে। উল্লেখ্য, আট বছর আগে
এই সেন্ট লুসিয়ায় নিজের শেষ শেষটি খেলেন বিজয়। সেবার দুই ইনিংসে যথাক্রমে ‘৯’ ও ‘০’ করেছিলেন, বাংলাদেশ
হেরে যায় ২৯৬ রানের বড় ব্যবধানে। মাঝে জাতীয় দলে জায়গা হারিয়েছেন। তাতে টেস্ট ক্যারিয়ারটাও আটকে আছে মাত্র চার টেস্টে। এবার ঘরোয়া
ক্রিকেটে অনবদ্য পারফর্ম করে তিনি ফিরেছেন জাতীয় দলে।
প্রথম টেস্টে ইয়াসিরের জায়গায় নেমে
হাফসেঞ্চুরি করে একাদশে জায়গা পাকা করেছেন নুরুল হাসান সোহান। তাই সব ঠিক থাকলে
নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গা নেবেন বিজয়। রানখরায় থাকা মুমিনুল আরেকটি সুযোগ পাবেন
হয়তো। আর পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের জায়গা নিতে পারেন শরিফুল ইসলাম।
সাদা জার্সিতে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ।
গত ছয় মাসে বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে ছবিটাই সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হলো, ব্যাটিং ধস। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার ক্লান্তিকর ছবি অন্য সব অর্জনকে
বিবর্ণ আর ম্লান করে দেয়। নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইতে পাওয়া ঐতিহাসিক টেস্ট
জয়ের পর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ভালো খবর কমই এসেছে। চিরাচরিত পেসবান্ধব উইকেটের
দেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় স্পিনে কুপোকাত বাংলাদেশ। সম্প্রতি ঘরের মাঠে শ্রীলংকার
বিপক্ষে ব্যাটিং ধস পেস বোলিংয়ের সামনে। অ্যান্টিগা টেস্টেও কেমার রোচদের পেস
বোলিংয়ের মুখে প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে শেষ বাংলাদেশ। এই ধ্বংসস্তুপ থেকে জেগে উঠে
স্বাগতিকদের আর চ্যালেঞ্জ জানানো যায়নি, যদি বোলারদের
দুর্দান্ত প্রচেষ্টা ছিল।
২০২২ সালে সবচেয়ে খারাপ ব্যাটিং গড়টা
বাংলাদেশেরই। তারা ১২টি সম্পন্ন ইনিংসে পাঁচবারই দুশর নিচে অলআউট হয়েছে। দক্ষিণ
আফ্রিকায় ৮০ ও ৫৩ রানের দুটি লজ্জাজনক ইনিংসও রয়েছে।
অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের ২০ উইকেটের সবগুলোই
নিয়েছেন ক্যারিবিয়ান পেসাররা। এর মধ্যে ১৩টি আবার ক্যাচ নিয়েছেন উইকেটকিপার কিংবা
স্লিপে দাঁড়ানো ফিল্ডরারা। মাহমুদুল হাসান জয়, শান্ত আর
মুমিনুল ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। স্লিপে মুমিনুলরা উইকেট
বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন, আবার সেই
জায়গায় দাঁড়িয়ে একের পর এক ক্যাচ ছেড়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডররা।
প্রথম ইনিংসে ১০৩ রানে অলআউট হওয়ার পরও
বাংলাদেশ যে খানিকটা লড়াই করেছে তার অবদান বোলারদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ইনিংসে
২৬৫ রানে অলআউট করে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। ১৬২ রানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়
ইনিংসে সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহানের লড়াইয়ে ২৪৫ রান তুলতে সমর্থ হয়। যদিও
প্রথম ইনিংসে ঘাটতিটা যেন পেছন থেকে টেনে ধরছিল টাইগারদের। তাতে স্বাগতিক দলটি
মাত্র ৮৪ রানের সহজ টার্গেট পায়।
ছোট টার্গেটেও ক্যারিবিয়ানদের সহজে পৌঁছতে
দেননি বাংলাদেশ বোলাররা। খালেদ আহমেদ ভয়ংকর এক স্পেলে স্বাগতিকদের তিন উইকেট তুলে
নেন। যদিও এত অল্প রানের পুঁজি নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিপদে ফেলা যায়নি। তারা ঠিকই
আর কোনো উইকেট না হারিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে যায়।