বিআইসিএমের সেমিনার

তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহার শর্তহীন রাখার প্রস্তাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর করপোরেট করের হার বেশকিছু শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এটি শর্তহীন থাকা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) উদ্যোগে আয়োজিত বাজেট ২০২২-২৩: পুঁজিবাজারের ওপর প্রভাব শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা কথা বলেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট . মাহমুদা আক্তার বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন সরকারের ঘোষিত বাজেট নীতিগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ, করের হার, করমুক্ত বিনিয়োগের সীমার মতো চলকগুলো পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে ভূমিকা রেখে থাকে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিআইসিএমের রিসার্চ ফেলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক . সুবর্ণ বড়ুয়া প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলেন, পুঁজিবাজারকে নিরুৎসাহিত করার মতো তেমন কোনো বিষয় বাজেটে নেই। এখানে পুঁজিবাজারের জন্য প্রত্যক্ষ প্রণোদনা কম। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য প্রস্তাবিত ২০ শতাংশ করহার শর্তহীন হওয়া উচিত। বাজার মধ্যস্থতাকারীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা থাকা উচিত, যাতে বাজারের উন্নয়নে তারা আরো সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে। পেনশন ফান্ডকে পেশাদার সম্পদ ব্যবস্থাপকদের মাধ্যমে বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কভিডের প্রভাব এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। তার ওপর মুদ্রাস্ফীতি তো রয়েছেই। এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পুঁজিবাজারের ওপর সরকার মনোযোগ কম দিয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা অনুসারে প্রণোদনা কম এসেছে। ব্রোকারদের ওপর কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছিল, যাতে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ধরনের আরো বেশকিছু সুপারিশ আমরা করেছিলাম। এবারের বাজেটের মূল দর্শন হলো অর্থনীতিকে কভিডের আগের অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। দেশের অর্থনীতি সে অবস্থানে পৌঁছালে পুঁজিবাজারও গতিশীল হবে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক . মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বাজেটে সরকার সঠিকভাবে বৈশ্বিক যে ফ্যাক্টরগুলো রয়েছে সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছে। পুঁজিবাজারে যেখানে চাহিদা কমে গেছে সেখানে জোগান বাড়ানো উচিত নয়। বাজেটে যে বিষয়গুলো এসেছে তা পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক। অপ্রদর্শিত অর্থ পুঁজিবাজারে আসার সুযোগ দেয়া এমন কোনো বিষয় নয়, যা বাজারকে প্রভাবিত করবে। অর্থনীতির বাইরের যে ঢেউ এসেছে সেটাকে সামলাতে হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) জোগান নীতির দিকটিও ভাবা উচিত। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক টার্গেট করে পুঁজিবাজারকে নিম্নমুখী করার নীতি গ্রহণ করছে তা কিন্তু নয়।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম তার বক্তব্যে বলেন, এবারের বাজেটে কভিড মহামারীর অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারায় ফেরা বহির্বিশ্বের অর্থনৈতিক দিকগুলো বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। যেখানে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তার পরও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাজেটে আরেকটু নজর দেয়া প্রয়োজন ছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত লাভজনক কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনা প্রয়োজন। কিন্তু এর জন্য বাজেটে কোনো উদ্যোগ নেই। এসএমই খাতের কোম্পানিগুলোর তালিকাভুক্তির জন্য কিছু বিষয় বাজেটে থাকলে ভালো হতো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন