তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানি

করপোরেট করে ১০ শতাংশ ব্যবধান চায় ডিএসই

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করপোরেট করের ব্যবধান সাড়ে শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ব্যবধান বাড়িয়ে ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব জানিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জে আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে প্রস্তাব জানিয়েছে ডিএসই।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান। ডিএসইর উপমহাব্যবস্থাপক শফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান শরিফ আনোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) সাইফুর রহমান মজুমদার।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার সাড়ে ২৭ শতাংশ প্রস্তাবের বিপরীতে সব ধরনের প্রাপ্তি আয় অবশ্যই ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে গৃহীত হতে হবে এবং ১২ লাখ টাকার অতিরিক্ত ব্যয় বিনিয়োগ অবশ্যই ব্যাংক স্থানান্তরের মাধ্যমে সম্পাদন করার শর্ত দেয়া হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারের উন্নয়ন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে হস্তান্তর করা হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য বিদ্যমান করহার আড়াই শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএসই চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান প্রস্তাবিত বাজেটকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, পুঁজিবাজারে এখন পর্যন্ত যতটুকু উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে, তা সরকারের নীতিগত সহায়তার জন্যই সম্ভব হয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহার আড়াই শতাংশ কমানোর প্রস্তাবও পুঁজিবাজারের জন্য ভালো দিক। তবে পুঁঁজিবাজারে ভালো কোম্পানিগুলোকে আনতে অতালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট করহারের ব্যবধান বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছি।

তিনি বলেন, করপোরেট বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলাম আমরা। প্রস্তাবিত বাজেটে যা ৫০ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সীমা ন্যূনতম লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি আমরা। পাশাপাশি লভ্যাংশ থেকে উৎসেকর চূড়ান্ত করদায় হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, কোম্পানিগুলো কর-পরবর্তী মুনাফা থেকে লভ্যাংশ প্রদান করে। লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর প্রকৃতপক্ষে দ্বৈত কর। এজন্য করপোরেট শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ আয়ের ওপর কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে করপোরেট করদাতাদের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ আয়ের ওপর চূড়ান্ত করহার ১০ শতাংশ করার দাবি করছি।

সময় ডিএসইর এমডি তারিক আমিন ভূঁইয়া বলেন, সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর অগ্রিম আয়করের বিদ্যমান হার দশমিক শূন্য শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক শূন্য ১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলাম আমরা। যা পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। যেখানে আমরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লেনদেনের ওপর দশমিক শূন্য ২৫ শতাংশ নিয়ে থাকি, সেখানে সরকারের দশমিক শূন্য শতাংশ অগ্রিম আয়কর কর্তন বিনিয়োগকারীদের জন্য অবশ্যই বোঝাস্বরূপ। যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের থেকে ভিন্নও বটে। অগ্রিম আয় কমানো উচিত বলে মনে করছি।

সংবাদ সম্মেলনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জন্য পুঁজিবাজারের স্বার্থে মোট ছয়টি প্রস্তাব পুুনর্বিবেচনার দাবি জানানো হয়। অন্য প্রস্তাবগুলোর মধ্যে স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে আগ্রহ বাড়াতে ন্যূনতম পাঁচ অর্থবছরের জন্য বিশেষ ছাড় দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানিগুলোকে ন্যূনতম বছরের জন্য ১০ শতাংশ হারে কর দেয়ার সুযোগ প্রদানের দাবি জানিয়েছে ডিএসই। এছাড়া জিরো কুপন বন্ডের মতো সকল প্রকার করপোরেট বন্ডের সুদ আয়কে বিনিয়োগকারী নির্বিশেষে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট। একটি সময়োপযোগী নীতিসহায়তার মাধ্যমে কার্যকর বন্ড মার্কেট তৈরি করা গেলে দেশের পুঁজিবাজার তথা সমগ্রিক অর্থনীতি উপকৃত হবে বলে মনে করছে স্টক এক্সচেঞ্জটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন