এমইবি গ্রুপের পাঁচ পরিচালকের খেলাপি ঋণ

আসামি গ্রেফতারে সিএমপিকে আদালতের বিশেষ নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের আলোচিত শিল্প গ্রুপ মেসার্স ইলিয়াস ব্রাদার্স (এমইবি) দেশের ভোগ্যপণ্য খাতের আদি ব্যবসায়ী পরিবারের পাঁচ পরিচালককে গ্রেফতারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল ডিক্রিদার ব্যাংকের করা অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ৩৪ () ধারায় দায়িকদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দেওয়ানি আটকাদেশের আবেদনে অর্থঋণ আদালত, চট্টগ্রামের যুগ্ম জেলা জজ মুজাহিদর রহমান আদেশ দেন।

অভিযুক্তরা হলেন এমইবি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামসুল আলম, চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার, পরিচালক মো. নুরুল আলম, পরিচালক কামরুন নাহার বেগম, পরিচালক তাহমিনা বেগম।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ন্যূনতম ২০টি মামলা বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান রয়েছে। মামলাগুলোয় বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দাবি করা খেলাপি ঋণের পরিমাণ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ঋণের বিপরীতে পর্যাপ্ত সহায়ক জামানত না থাকায় দেওয়ানি কারাগারে আটক ছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়ের বিকল্প কোনো পথ নেই। দায়িকদের বিরুদ্ধে আদালতের চলমান জারি মামলা নং-৭৭/১৩, ৯৩/১৫, ৭৩/১২সহ বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও দীর্ঘদিন ধরে ওই পরোয়ানাগুলো চান্দগাঁও কোতোয়ালি থানা তামিল না করে ধরে রেখেছে বলে মনে করছেন আদালত। ওয়ারেন্ট তামিল না হওয়ায় পুলিশি কার্যক্রমের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

শীর্ষ ঋণ খেলাপিরা গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হওয়ায় ব্যাংকিং খাতের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ অনাদায়ী হয়ে পড়েছে এবং আদালতে মামলার জট সৃষ্টি হয়েছে। তাই উল্লিখিত দায়িকদের অবিলম্বে গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনার, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।

আদালতের নথি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, খাতুনগঞ্জ শাখার দায়ের করা মূল অর্থঋণ মামলা নং-২৩৪/২০১৩। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের ডিক্রি থেকে জারি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৬ দশমিক ৪৯ টাকার ওপর আদায়ে ১২ শতাংশ হারে সুদের ডিক্রি দেয়া হয়। ডিক্রিকৃত সমুদয় টাকা ৬০ দিনের মধ্যে ডিক্রিদার বরাবর পরিশোধে দায়িকদের নির্দেশ দেয়া হলেও দায়িকরা তা পরিশোধ করেননি। একই বছরের নভেম্বর ব্যাংক দায়িকদের বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি ১৩ লাখ ৫৩ হাজার ৩৯৮ দশমিক ৭৬ টাকা আদায়ের দাবিতে জারি মামলা করা হয়।

কিন্তু বর্তমানে দায়িকদের কাছে ব্যাংকের মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ৬১ কোটি ৯৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৫৬ দশমিক ৬৯ টাকা।

দায়িকরা কর্তৃক গৃহীত ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বন্ধক বা সহায়ক জামানত হিসেবে ছিল না। ক্রোকযোগ্য কোনো সম্পত্তির সন্ধান ডিক্রিদার পায়নি। তাই অর্থঋণ আইনের ৩৪ () ধারা মোতাবেক ন্যূনতম একবার নিলাম করার বাধ্যবাধকতা মামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন