ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং সব নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিতে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ আজীবন কাজ করে গেছেন। গতকাল তার দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মারক বক্তৃতায় এ কথা উঠে আসে।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, প্রশাসক, পরিবেশবিদ এবং সুশাসন ও নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেতা অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়। এতে বিষয়বস্তু ‘অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের শিক্ষা ও অর্থনীতিচর্চার প্রাসঙ্গিকতা’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অর্থনীতির ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং বাকৃবির সাবেক উপাচার্য ও বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য ড. এমএ সাত্তার মন্ডল। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড. আহরার আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর ও অধ্যাপক আহমদের সন্তান মোমতাজুল করিম নাজির আহমদ।
স্মারক বক্তৃতায় ড. এমএ সাত্তার মন্ডল বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি, শিক্ষা ও ডিজিটাল ডিভাইসের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, হঠাৎ করেই সমগ্র বিশ্বে খাদ্য পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। খাবারের দাম বাড়ছে। আমাদের দেশেও তার প্রভাব পড়েছে। বর্তমান খাদ্য পরিস্থিতি বিবেচনায় সার ও ডিজেলের দাম যাতে না বাড়ে সেদিকটা বিবেচনা করতে হবে। কারণ আমাদের দেশের কৃষি এটার সঙ্গে জড়িত।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, খাদ্যোৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের কৃতিত্ব রয়েছে। তবে গবেষকদের কৃতিত্বও অস্বীকার করলে চলবে না। তাদের গবেষণার ফলেই দেশে উৎপাদন বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর বলেন, শিক্ষক হিসেবে ক্ষমতাকে ব্যবহার করতেন না অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ। এখন পর্যন্ত এমন শিক্ষক আর দ্বিতীয়জন খুঁজে পাইনি। বাজার ও রাষ্ট্র বুঝতে হয় রাজনৈতিক অর্থনীতি দিয়ে, ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক জ্ঞান না থাকলে সেটা পারা যায় না। বিষয়টি স্যারের কাছ থেকে শিখেছি।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আহমদের সহধর্মিণী রওশন জাহানের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়। লিখিত বক্তব্যে রওশন জাহান বলেন, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং সব নাগরিকের সমঅধিকার নিশ্চিতে মোজাফ্ফর আজীবন কাজ করে গেছেন। তার সেই বিশ্বাসে আপনারাও উজ্জীবিত বলে আমি বিশ্বাস করি। এ বিশ্বাস আমাকে শক্তি জোগায়। নানা ঝুঁকি এবং সমস্যা সত্ত্বেও আপনারা অগ্রসর হচ্ছেন এটা এক বিরাট সান্ত্বনা।