বাজেট তৈরির সময় দলিত জনগোষ্ঠীর দাবি শুনতে হবে, চা শ্রমিকসহ দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষকে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সম্প্রতি ঢাকার লালমাটিয়ায় নাগরিক উদ্যোগের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট সংলাপে দলিত নেতা ও সংগঠকরা এসব কথা বলেন। দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন (ডিবিএম), বিডিইআরএম, নাগরিক উদ্যোগ, সেফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলনের (বিডিইআরএম) সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার ভক্ত দলিত ও চা শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এরপর বিভিন্ন সেক্টরের দলিত নেতারা ও অংশগ্রহণকারীরা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।
বিডিইআরএমের উপদেষ্টা ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন সমানুপাতিক বাজেট বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া সংলাপে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা বলেন, দেশের নাগরিক হিসেবে দলিতদের অধিকার রয়েছে সঠিক বরাদ্দ পাওয়ার। তিনি পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরেন।
সভায় সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে দলিত ও চা শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তি ও বাজেটসহ জাতীয় পরিকল্পনায় জন অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং বাজেটে ‘দলিত ও চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি’ বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।
সুপারিশগুলো: দলিত কর্মীদের জন্য জেলায় জেলায় কলোনি তৈরি করতে হবে; দলিত শ্রমিকদের পেশাগত সুরক্ষাসামগ্রী দিতে হবে, সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলিত কোটা বাস্তবায়ন করতে হবে, দলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে, দলিত পরিবারগুলোর জন্য বিশেষ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে, খাসজমি বরাদ্দে দলিতদের অগ্রাধিকার দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, শহুরে দলিত পেশাজীবীদের কাজের জন্য ছাউনি বানিয়ে দিতে হবে, জাত-পাতভিত্তিক বৈষম্যকে অপরাধ সাব্যস্ত করে আইন করতে হবে, শহরে শহরে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ও কর্মজীবী হোস্টেল দরকার।
সংলাপে বিডিইআরএম সভাপতি বিভূতোষ রায়, সহসভাপতি রাজেন্দ্র কুমার দাস, সহসাধারণ সম্পাদক বনানী বিশ্বাস, শিপন কুমার রবিদাস, সাংগঠনিক সম্পাদক ভীমপাল্লী ডেভিড রাজু, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক গগন লাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক তামান্না সিং বাড়াইক, নাগরিক উদ্যোগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাদিরা পারভিনসহ আরো অনেকেই উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।