হিলি স্থলবন্দর

অর্থবছরের ১০ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, হিলি

রাজস্ব বোর্ডের উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা, কভিড মহামারীর প্রভাব বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় দেশের বন্দরগুলোতে রাজস্ব আয়ের চিত্র সন্তোষজনক নয়। চলতি অর্থবছরে বন্দরগুলোতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ কমে এসেছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সময়ে বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তবে অর্থবছরের বাকি সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব বলে আশা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে হিলি স্থলবন্দরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বাড়তি ৮৭ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ হয়। যার কারণে চলতি অর্থবছরে বন্দরটি থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৪৫৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে এনবিআর। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। আগস্টে ৪৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ২৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে ৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা। অক্টোবরে ৩৯ কোটি লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। নভেম্বরে ৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে ৩০ কোটি ২৪ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। জানুয়ারিতে ৩৪ কোটি ১২ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ফেব্রুয়ারিতে ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। মার্চে ৪২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এপ্রিলে ৪২ কোটি ৮১ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৩৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে বন্দর থেকে মোট রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৩৫৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আহরণ হয়েছিল ৩৫০ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কোটি ৪৫ লাখ টাকা বেশি আহরণ হয়েছে, যা দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম নুরুল আলম খান বলেন, গত অর্থবছরে রেয়াতি হারে চাল আমদানির সুযোগ দেয়ায় বন্দর দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে চাল আমদানি হয়েছিল। কারণে সেই সময় বাড়তি রাজস্ব আহরণ হয়েছিল। বর্তমানে চাল আমদানিতে শুল্কহার বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দর দিয়ে চাল আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। বিগত অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪২ হাজার ৮৯০ টন চাল আমদানি হয়, যা থেকে রাজস্ব আসে ২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কিন্তু চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৩৬ টন চাল আমদানি হয়েছে, যা থেকে রাজস্ব এসেছে ২৪ লাখ ৬১ হাজার টাকা। একইভাবে গত অর্থবছরের মার্চে ৫৫ হাজার ৪০ টন চাল আমদানি হয়, যা থেকে রাজস্ব আসে ৩০ কোটি লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরের মার্চে কোনো চাল আমদানি হয়নি। গত অর্থবছরের এপ্রিলে ৫৬ হাজার ৫৫১ টন চাল আমদানির বিপরীতে ২৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা রাজস্ব আসে। চলতি অর্থবছরের এপ্রিলে চাল আমদানি হয় মাত্র ৩২ টন, যা থেকে রাজস্ব এসেছে ২২ লাখ টাকা। অর্থবছরের শেষ দুই মাসে বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্যের আমদানি বাড়ে। সেই ধারা যদি চলতি অর্থবছরের বাকি দুই মাসে অব্যাহত থেকে বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানি বাড়ে তাহলে রাজস্ব আহরণ বাড়বে। তাছাড়া রেয়াতি হারে চাল আমদানির সুযোগ বর্তমান অর্থবছরেও প্রদান করা হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন