আইসিবির আমানতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি ডিএসই

নিজস্ব প্রতিবেদক

তারল্য সংকটের পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেয়া মেয়াদি আমানতের অর্থ পরিশোধ করা নিয়ে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) অবস্থায় তারল্য সংকট দূর করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কাছে ৫০০ কোটি টাকার আমানত চেয়েছে আইসিবি। পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংক দুই প্রতিষ্ঠানকে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া আমানত পুনরায় নবায়নের জন্যও অনুরোধ জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটি। তবে আমানত রাখার বিষয়ে এখনো ডিএসইর পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বছরের ২৭ এপ্রিল একক গ্রাহক ঋণসীমার অতিরিক্ত ৫৬৫ কোটি টাকার আমানত সমন্বয়ের জন্য আইসিবিকে চিঠি দেয় সোনালী ব্যাংক। পাশাপাশি কর্মসংস্থান ব্যাংকসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের আমানতের অর্থ পরিশোধ করতে হবে আইসিবিকে। সব মিলিয়ে মাসের মধ্যেই প্রায় ৭০০ কোটি টাকার অর্থ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। অবস্থায় তহবিল সংগ্রহের জন্য নিম্নমুখী বাজারেও শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করে আইসিবি। এতে বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয় এবং সূচক লেনদেনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সংকটের সমাধানে গত সপ্তাহে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি সঙ্গে বৈঠক হয় আইসিবির। বৈঠকে জানানো হয় ডিএসইকে ৫০০ কোটি টাকার মেয়াদি আমানত প্রদানের অনুরোধ জানিয়ে আইসিবির পক্ষ থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আইসিবির কাছে বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংরক্ষিত মেয়াদি আমানত নবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি পাঠানোর কথা জানানো হয়।

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ডিএসইর কাছে থাকা নগদ অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এফডিআর হিসেবে সঞ্চিত থাকে। এফডিআর থেকে প্রাপ্ত সুদ এক্সচেঞ্জটির আয়ের অন্যতম উৎস। সর্বশেষ গত বছরের জুন শেষে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডিএসই গচ্ছিত আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী, জনতা, রূপালী সোনালী ব্যাংকের কাছে রয়েছে ৪৯৪ কোটি টাকার আমানত।

আইসিবির পক্ষ থেকে আমানত চেয়ে দেয়া চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুর রহমান মজুমদার বণিক বার্তাকে বলেন, আইসিবির চিঠিটি আমরা পেয়েছি। বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমাদের আমানত রাখা আছে। এগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে রাখা হবে নাকি একই প্রতিষ্ঠানে পুনর্নবায়ন করা হবে সে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

বছরের মার্চ শেষে আইসিবির কাছে মেয়াদি আমানত বাবদ সোনালী ব্যাংকের সংরক্ষিত অর্থের পরিমাণ ছিল সবচেয়ে বেশি হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটি ৭৯ কোটি টাকা কল মানি ঋণও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। এর মধ্যে একক গ্রাহক ঋণসীমার অতিরিক্ত ৫৬৫ কোটি টাকা মেয়াদি আমানত নবায়নের আগেই সমন্বয়ের জন্য চিঠি দিয়েছে সোনালী ব্যাংক। এর বিপরীতে অর্থ পরিশোধের জন্য সময় চেয়েছে আইসিবি।

বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান বণিক বার্তাকে বলেন, আইসিবিতে রাখা আমানতের আরো আগেই একক গ্রাহক ঋণসীমা পেরিয়েছে। এরই মধ্যে বেশকিছু পরিমাণ অর্থ সমন্বয় করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকেও এটি ক্রমেই কমিয়ে আনার নির্দেশনা রয়েছে। আইসিবির পক্ষ থেকে অর্থ পরিশোধের জন্য সময় চাওয়া হয়ে থাকলে সেটি পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন