জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিতে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে বিষয়টি বেশ সামনের দিকে ছিল পানি স্যানিটেশন ব্যবস্থা। তবে জলবায়ু নিয়ে যে চাপ তৈরি হয়েছে তার মুখে প্রয়োজনীয় পানির সহজলভ্যতার বিষয়টি অনুপস্থিত থাকতে দেখা যাচ্ছে প্যান ইউরোপীয় অঞ্চলে। জাতিসংঘের ইকোনমিক কমিশন ফর ইউরোপ (ইউএনইসিই) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপের আঞ্চলিক অফিস তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।

চলতি সপ্তাহে জেনেভায় অনুষ্ঠিত ইন্টারগভর্নমেন্টাল আলোচনায় উঠে এসেছে, অঞ্চলের ৫৬টি দেশজুড়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খাওয়ার পানি, স্যানিটেশন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।

ইউএনইসিইর মুখপাত্র থমাস ক্রল নাইট বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এরই মধ্যে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পানি স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। পানির সহজলভ্যতা কমে আসার পাশাপাশি পয়োনিষ্কাশন অবকাঠানোর ক্ষতি হওয়ায় পানিতে দূষণও বাড়ছে। যদি দেশগুলো এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এসব ঝুঁকি বাড়তেই থাকবে।

হিসাব বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের তিন ভাগের এক ভাগ দেশ ২০৭০ সালের মধ্যে পানি নিয়ে বড় আকারের দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়বে। অর্থাৎ ২০০৭ সালের সঙ্গে তুলনা করলে সময়ের মধ্যে আরো ভুক্তভোগী হবে কোটি ৬০ লাখ থেকে কোটি ৪০ লাখ মানুষ।

যেহেতু সারা বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। তাই প্রতি ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার অর্থ পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানিসম্পদ ২০ শতাংশ করে কমে যাওয়া। তার মানে নতুন করে আরো শতাংশ জনগণের বিপদের মুখে পড়া।

বিভিন্ন দেশের সরকার এখন নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৭-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। সেই সঙ্গে জাতিসংঘের ২০২৩ পানিবিষয়ক সম্মেলনেরও প্রস্তুতি চলছে। এমন সময়ে ইউএনইসিই ইউরোপের কিছু অংশে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য ভয়ংকর দৃশ্য নিয়ে আলোচনা করছে।

সেখানে পানি সরবরাহ থেকে শুরু করে, পয়োনিষ্কাশনের অবকাঠামোগত ক্ষতি নিয়ে ভাবনা চলছে। তাতে যেমন পানির মান খারাপ হচ্ছে তেমনি পয়োনিষ্কাশনেও প্রভাব এরই মধ্যে অনুভব করা যাচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, জ্বালানির চাহিদা বাড়ায় এবং হাঙ্গেরিতে ট্রিটমেন্ট প্লান্টে ব্যাঘাত ঘটার কারণে বর্জ্য পানি ব্যবস্থাপনায় উল্লেখযোগ্য অতিরিক্ত পরিচালন খরচ ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

সেই সঙ্গে নেদারল্যান্ডসে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য চ্যালেঞ্জ বেড়ে গিয়েছে। স্পেনও খরার মৌসুমে ন্যূনতম সুপেয় পানি সরবরাহ ঠিক রাখতে গিয়ে সংকটে পড়ছে।

প্যারিস চুক্তির অধীনে অনেক ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (এনডিসি) এবং ন্যাশনাল অ্যাকশন প্রোগ্রামের (এনএপির) পানি ব্যবস্থাপনার অভিযোজনের উদ্যোগ সত্ত্বেও জল জলবায়ুকে একীভূত করার জন্য সরকারের পদ্ধতি প্রয়োগ অনুপস্থিত। এসব কারণে সুপেয় পানি, স্যানিটেশন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিষয়গুলো উদ্বেগজনকভাবে অচিহ্নিত থেকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পর্যাপ্ত সরকারি পদ্ধতি এবং পানি স্বাস্থ্য প্রটোকলের অধীনে কিছু পদক্ষেপ নেয়া ছাড়াই ইউএনইসিই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপের নেয়া অনন্য বহুপক্ষীয় চুক্তি এক্ষেত্রে কাজ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেটা এনডিসি এনএপির পানি, স্যানিটেশন স্বাস্থ্যের অন্তর্ভুক্তি হিসেবে আরো বেশকিছু বিকল্প তৈরিতে সমর্থন দিতে পারে।  

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন