অর্থনৈতিক দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার অনুমোদন করেছে লেবাননের বিদায়ী সরকার। সম্প্রতি দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় এ খবর নিশ্চিত করেছে। খবর এপি।
সম্প্রতি লেবাননে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার আগে মন্ত্রিসভা পর্যায়ের এক বৈঠক করা হয়। বৈঠকে লেবাননের বিদায়ী সরকার দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশা কাটিয়ে উঠতে একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার অনুমোদন দেয়। তবে সংসদে এখনো প্রস্তাবটি পাস হয়নি।
ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে লেবানন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে এ সংকটের উত্পত্তি। এতে করে কয়েক দশক ধরে চলমান দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে ওঠে দেশজুড়ে।
অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে লেবাননের বিদায়ী সরকারের পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে দেশের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক খাতের পুনর্গঠন। পাশাপাশি কয়েক দশক পুরনো ব্যাংকিং গোপনীয়তা আইনের সংশোধনও পরিকল্পনা প্রস্তাবের অন্তর্ভুক্ত।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) আগেই লেবাননের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে। কয়েকশ কোটি ডলারের ঋণের দায় থেকে মুক্তি পেতে আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো লেবাননের অর্থনৈতিক সংশোধনীর দাবি করে আসছে। গত মাসে লেবানন সরকার আইএমএফের সঙ্গে একটি বিস্তীর্ণ অর্থনৈতিক নীতির চুক্তি স্বাক্ষর করে। সংকটাপন্ন দেশের জন্য যা কিছুটা উপশম হিসেবে কাজ করবে বলে ধারণা করেছিল বিশ্লেষকরা।
এ বিষয়ে লেবাননের তথ্যমন্ত্রী জিয়াদ মাকারি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি পরিকল্পনাটি অনুমোদন করেছেন। তবে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ দলের সঙ্গে সম্পর্কিত কয়েকজন মন্ত্রী এ প্রস্তাবে আপত্তি তুলেছেন। নাজিব মিকাতি জানান, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সুরক্ষা করাই এ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য। বর্তমানে লেবানন যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তার জন্য দক্ষ প্রশাসক ও সব পক্ষের মধ্যে সহযোগিতা প্রয়োজন। পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রয়োগ না করা পর্যন্ত প্রতিটি দিন আরো বেশি কঠিন হয়ে পড়বে।
২০২০ সালের মার্চে লেবানন নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করে বড় অংকের ঋণ পরিশোধে অপারগতা স্বীকার করে। সে সময় দেশটির ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৯ হাজার কোটি ডলার, যা দেশটির মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ১৭০ শতাংশ। এতে করে লেবানন হয়ে ওঠে বিশ্বের সব থেকে বেশি ঋণ গ্রহণকারী দেশ। তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে লেবাননিজ পাউন্ডের মান।
ক্যান্সার রোগীদের এক মাসের ওষুধ ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের চার মাসের ওষুধের জন্য ৩ কোটি ৫০ লাখ তহবিলের অনুমোদন দিয়েছে মিকাতি সরকার। আবার চলতি বছরের জুলাই থেকে টেলিযোগাযোগের জন্য দাম বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ।