যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি কাজে জালিয়াতি ও উন্নয়নকাজ সম্পন্ন না করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সাবেক কর্মস্থল যবিপ্রবির প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালীন এসব দুর্নীতি করার অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৯ মে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোর।
প্রজ্ঞাপনে ১৬ মে’র মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মোশাররফ হোসেনের কাছে সব নির্মাণকাজের ডিপিপি, প্ল্যান, ডিজাইন, টেন্ডার কমিটি, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, সিএস, নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, ঠিকা চুক্তি, কার্যাদেশ বিল ভাউচারসহ এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজ সরবরাহ করার জন্য বলা হয়।
এছাড়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবন, জগদীশ চন্দ্র একাডেমিক ভবন, বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল, ওয়ার্কশপ, ১ হাজার ৬০০ কেভিএ সাবস্টেশন নির্মাণ, হ্যাচারি নির্মাণ ও জিমনেশিয়াম কাজের প্ল্যান, ডিজাইন, টেন্ডার কমিটি, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, সিএস, নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, ঠিকা চুক্তি, কার্যাদেশ বিল ভাউচারসহ এ-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র ও এ কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ও পদবিসহ বর্তমান কর্মস্থল, রেহনুমা ইভেন্টস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানের প্রতি প্রদত্ত সব কাগ, গত ১০ বছরে প্রকৌশল দপ্তরের অডিট আপত্তি, আপত্তি নিষ্পন্নকরণসংক্রান্ত প্রতিবেদনসহ কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।
হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারীর মূল পদবি ইউনিভার্সিটি ইঞ্জিনিয়ার (গ্রেড-৪) হলেও তিনি প্রধান প্রকৌশলী পদ ব্যবহার করে গ্রেড-৩-এ বেতন-ভাতা তুলতেন।
এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, অভিযোগ এসেছে, আগে সত্য-মিথ্যা যাচাই করুক। তারপর আমি এ বিষয়ে বক্তব্য দেব। আমাকে দুদক থেকে ডাকা হয়েছে, আমি গিয়ে দেখা করব।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, দুদক সরকারি প্রতিষ্ঠান, তারা তথ্য চাইলে আমরা দিতে বাধ্য। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব অফিসের তথ্য চাওয়া হয়েছে, সেসব জায়গা থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে রেজিস্ট্রার দপ্তরের কাগজ সংশ্লিষ্ট স্থানে পাঠানো হবে। আইনগত সমস্যা দেখিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ও ডেপুটি ডিরেক্টর হায়াতুজ্জামান মুকুলের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলার অনুরোধ করেন।
হায়াতুজ্জামান মুকুল ছুটিতে আছেন জানিয়ে বলেন, আমি অফিসে ছিলাম না। এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। চিঠি এসেছে রেজিস্ট্রার অফিসে। আপনি রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলেন।
শারীরিক অসুস্থ থাকায় ছুটিতে রয়েছেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপপরিচালক (ডিডি) আল আমিন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি আমাদের তথ্য দেবেন। তা জমা দেয়ার শেষ সময় ছিল ১৬ মে। তিনি তা পাঠিয়েছেন কিনা, এ মুহূর্তে বলতে পারছি না।
তদন্ত কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, কাগজপত্র সব এখনো আসেনি। চাহিদা মোতাবেক তারা চেষ্টা করেছেন। আমি মোটামুটি পেয়েছি, যাচাই কাজ এগোনো যাবে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের চাহিদা অনুযায়ী বাকি কাগজপত্র জমা দেবে। আর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে বক্তব্য বলার জন্য ডাকা হয়েছে।