সাড়ে ৪ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়েছে ডিএসইএক্স

চারদিনে বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মুদ্রার অবমূল্যায়ন নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এতে গত সপ্তাহজুড়েই বিনিয়োগকারীদের মাঝে শেয়ার বিক্রি করে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। যার প্রভাবে সর্বশেষ সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সব সূচকেই বড় পতন হয়েছে। এর মধ্যে সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স কমেছে সাড়ে শতাংশের বেশি। আর লেনদেন কমেছে ৪০ শতাংশ। সূচক লেনদেনের পাশাপাশি গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসে এক্সচেঞ্জটির বাজার মূলধন কমেছে ২১ হাজার কোটি টাকার বেশি। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচক লেনদেন দুটোই কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। চার কার্যদিবস লেনদেনের পর সপ্তাহ শেষে মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে লাখ হাজার কোটি টাকায়। সেই হিসাবে চারদিনের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির মূলধন কমেছে ২১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা বা দশমিক ৯৮ শতাংশ।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে হাজার ২৩৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির লেনদেন কমেছে ৪০ দশমিক শূন্য শতাংশ। টাকার অংকে যার পরিমাণ হাজার ১৬২ কোটি। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক গড়ে ৮০৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ৭৯ কোটি টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এক্সচেঞ্জটির দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২৫ শতাংশের বেশি। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির। কমেছে ৩৬০টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ৬টির। লেনদেন হয়নি ৭টির।

এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইর সব সূচকে বড় পতন হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩০৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে হাজার ২৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৫৬৫ পয়েন্টে। সূচকের পতনে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিএসআরএম লিমিটেড, অলিম্পিক ওরিয়ন ফার্মার শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৯০ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৫ শতাংশ। গত সপ্তাহ শেষে সূচকটি কমে হাজার ৩১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের শেষ সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৪০৭ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ কমে হাজার ৩৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সমাপ্ত সপ্তাহে যা ছিল হাজার ৪৩২ পয়েন্টে।

গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে ছিল বিবিধ খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক শতাংশ ছিল খাতটির দখলে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ রসায়ন খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের ১৩ শতাংশ। দশমিক শতাংশ নিয়ে লেনদেনের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে খাদ্য আনুষঙ্গিক খাত। দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত। শতাংশ নিয়ে পরের অবস্থানে রয়েছে ব্যাংক খাত। পরের অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশ। এছাড়া সপ্তম অবস্থানে থাকা সিরামিক খাতের দখলে ছিল দশমিক শতাংশ। এছাড়া তালিকায় বাকি খাতগুলো হলো যথাক্রমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ জ্বালানি, সাধারণ বীমা, আইটি সেবা খাত। 

ডিএসইতে গত সপ্তাহে সব খাতেই ঋণাত্মক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল সেবা খাতে, ১১ দশমিক শতাংশ। ১০ দশমিক শতাংশ নিয়ে পরের অবস্থানে রয়েছে সাধারণ বীমা খাত। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভ্রমণ খাতে রিটার্ন এসেছে ১০ শতাংশ। একই হারে রিটার্ন এসেছে পেপার খাতেও। আর দশমিক শতাংশ রিটার্ন এসেছে জীবন বীমা খাতে। এছাড়া ঋণাত্মক রিটার্নের তালিকায় থাকা বাকি খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে আইটি, সিরামিক, পাট, বস্ত্র, খাদ্য আনুষঙ্গিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান।  

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ২০ শতাংশ কমে ১৮ হাজার ৪৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৯ হাজার ২৪৮ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে দশমিক ২০ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৬৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৫৫০ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে ১২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল প্রায় ১৬৭ কোটি টাকা। সময়ে এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৫১টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ৩১২টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির সিকিউরিটিজের দর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন