সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি,সিলেট:

টানা বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। সুরমা, কুশিয়ারা, সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমার পানি এরইমধ্যে সিলেট নগরীতে প্রবেশ করেছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর কোম্পানীগঞ্জসহ সিলেট সদরের ৪টি ইউনিয়নে গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। অনেক এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যায় কোম্পানীগঞ্জে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লোকজন।  সিলেটের সঙ্গে কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগও বন্ধ রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, সুরমা নদীর তীর উপচে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে নগরের উপশহর, সোবহানিঘট, কালিঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা।নগরীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালিঘাটেও পানি প্রবেশ করেছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা বাণিজ্য।

কালিঘাট এলাকার ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাশ টুকু বলেন, সকালে এসে দেখে নদী উপচে দোকানের সামনে পানি এসে গেছে। দুপুর গড়ানোর আগেই দোকানের ভেতর পানি ঢুকে পড়ে। এখন পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

এছাড়া গোয়াইনঘাটের সকল ইউনিয়ন পানিতে তলিয়ে গেছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে সড়ক যোগাযোগ। ইমরান আহমদ ডিগ্রী কলেজের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় কোমর পানি হয়ে গেছে। কানাইঘাট উপজেলা সদরের প্রধান বাজার গত তিনদিন থেকে কোমর পানি রয়েছে। লোভা নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জৈন্তাপুরেও একই অবস্থা। কোম্পানীগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আঞ্চলিক সড়কগুলোতে পানি উঠে গেছে। ফলে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। 

সিলেট পাউবো সূত্রে জানা যায়, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে আজ সোমবার দুপুরে বিপৎসীমার ১.২৮ সেন্টিমিটার, সিলেট পয়েন্টে ১০.৬৬ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার,  ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৮.৭৪ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ৬.৯৬ সেন্টিমিটার, গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানি বিপৎসীমার ০.৮ সেন্টিমিটার, কানাইঘাটের লোভা নদীর পানি ১৪.৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, বৃষ্টিপাত কমেছে। তবে উজানে বৃষ্টি হচ্ছে, একারণে ঢল নামছে। ফলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের খোঁজ খবর রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবকটা উপজেলা কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন