বিশ্ব বাজারে গমের সংকটের মধ্যেই এর রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। দেশটির এমন ঘোষণার পর দিনাজপুরের হিলিতে আজ শনিবার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে গম আমদানি। তবে আগের টেন্ডার হওয়া এলসির বিপরীতে গম রফতানি করায় দুপুরের পর আবার আমদানি শুরু হয়। পুরানো এলসির বিপরীতে গম রফতানির দাবি জানিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। পণ্যটির আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে দাম বাড়ার আশংকা করছেন পাইকাররা।
আমদানিকারকরা জানান, দেশের ফ্লাওয়ার মিলগুলোতে গমের চাহিদা মিটতো ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে আমদানি করে। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর সেখান থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প হিসেবে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু করেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা। এসব গম ঢাকা, বগুড়া, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফ্লাওয়ার মিলগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল শুক্রবার নিজ দেশে গমের সরবরাহ বৃদ্ধি ও মুল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে বাংলাদেশে গম রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত।
হিলি স্থলবন্দরের গম আমদানিকারক ললিত কেশেরা বলেন, দেশের গমের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে আমদানি করে আসছি। কিন্তু আজ সকালে ভারতীয় রফতানিকারকরা বাংলাদেশে গম রফতানি বন্ধ করে দেন। তবে ভারতে যেসব গম আগে থেকে কেনা রয়েছে এগুলোর আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন এলসিতে গম আমদানি না করা গেলে দেশের গমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। তবে বাংলাদেশ সরকার যদি ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলে তাহলে হয়তো একটা ইতিবাচক ফলাফল আসতে পারে।
হিলি স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভারত সরকারের গম রফতানি বন্ধের নির্দেশনায় সকাল থেকে বন্দর দিয়ে গম রফতানি বন্ধ রেখেছিল ভারতীয় কাস্টমস। পরবর্তীতে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে শুধুমাত্র যেসব এলসির বিপরীতে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে সেগুলোই রফতানি করার সিন্ধান্ত নেয়া হয়।
হিলি স্থলবন্দরে গম কিনতে আসা মনিরুল ইসলাম বলেন, গমের বাজার তুলনামুলক অনেক বেড়ে গেছে। যে গম গত বৃহস্পতিবার কেনাবেচা হয়েছে ৩৫ টাকা, সেই গম এখন ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা। কেউ কেউ ৩৮ থেকে ৩৯ টাকা করেও বিক্রি করছেন।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, এতদিন পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক করে গম আমদানি হতো। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে ৫২টি ট্রাকে ১ হাজার ৯৫৯ টন গম আমদানি হয়েছে। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বন্দর দিয়ে কোনো গম আমদানি না হলেও দুপুর দেড়টার পর থেকে বন্দর দিয়ে আবারো গম আমদানি শুরু হয়েছে।
