ফের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার ইঙ্গিত

রেকর্ড উচ্চতা থেকে নিম্নমুখী হয়েছে মার্কিন মূল্যস্ফীতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরির একটি সুপার মার্কেট ছবি: রয়টার্স

প্রায় এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে গ্যাস, খাদ্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। কয়েক মাস ধরেই রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে মূল্যস্ফীতি। কভিডজনিত প্রভাবের পাশাপাশি ইউক্রেন যুদ্ধ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে তুলতে অবদান রেখেছে। তবে এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা ধীর হয়েছে। যদিও এখনো সেটি চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতার কাছাকাছি রয়ে গেছে। ফলে লাখ লাখ মার্কিন পরিবারের জন্য ক্রমবর্ধমান দামের সঙ্গে জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠেছে। খবর এপি।

সম্প্রতি মার্কিন সরকার একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এপ্রিলে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়েছে। হার মার্চে দশমিক শতাংশের তুলনায় কিছুটা কম। মূল্যস্ফীতির হার ১৯৮১ সালের পর সর্বোচ্চ ছিল। বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে মাসভিত্তিক হিসাবে এপ্রিলে পণ্যের দাম আগের মাসের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়েছে। বৃদ্ধির হার গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম।

এদিকে এপ্রিলের প্রতিবেদনে কিছু সতর্কমূলক লক্ষণও রয়েছে যে মূল্যস্ফীতি আরো প্রবল হয়ে উঠতে পারে। বাজারে সর্বদা অস্থিরতার মধ্যে থাকা খাদ্য জ্বালানি বাদ দিয়ে মাসভিত্তিক কোর মূল্যস্ফীতি এপ্রিলে আগের মাসের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এয়ারলাইনস টিকিট, হোটেল রুম নতুন গাড়ির দাম বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়ার খরচও ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এবির মার্কিন অর্থনীতিবিদ এরিক উইনোগ্রাড বলেন, এগুলো স্পষ্ট করে দেয় যে মূল্যস্ফীতি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে ফিরে আসার ক্ষেত্রে এখনো দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হবে।

এমনকি এটি কিছুটা ধীর হলেও মূল্যস্ফীতি ২০২৩ সাল পর্যন্ত রেকর্ড উচ্চপর্যায়ে থাকবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। অনেক মার্কিন নাগরিকের মূল্যবৃদ্ধির বোঝা তাদের বেতন বাড়ার হারকে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মার্কিন নাগরিকরা জীবনযাত্রার উচ্চব্যয় মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছেন। কৃষ্ণাঙ্গ হিস্পানিক পরিবারগুলো গড়ে তাদের আয়ের বড় একটি অংশ গ্যাস, খাবার বাসা ভাড়ার পেছনে ব্যয় করছেন।

এপ্রিলে গ্যাসের দামের পতন সামগ্রিক মূল্যস্ফীতিকে ধীর করতে সহায়তা করেছে। গত মাসে দেশটিতে এক গ্যালন গ্যাসের গড় দাম ডলার ১০ সেন্টে নেমে এসেছে। মার্চেও দাম ডলার ৩২ সেন্ট ছিল। তবে এরপর গ্যাসের দাম পুনরায় রেকর্ড ডলার ৪০ সেন্টে উন্নীত হয়েছে।

এছাড়া নিত্যপণ্যের দামও ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। কারণ ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন গম অন্যান্য শস্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এপ্রিলে খাবারের দাম আগের মাসের তুলনায় শতাংশ এবং এক বছর আগের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। বার্ষিক বৃদ্ধির হার ১৯৮০ সালের পর সর্বোচ্চ। ধরনের মূল্যস্ফীতি অনেক মার্কিন নাগরিককে ব্যয় কমিয়ে দিতেও প্ররোচিত করেছে। তাদেরই একজন প্যাটি ব্ল্যাকমন। লাস ভেগাসে গ্যাসের দাম ডলার ৮৯ সেন্ট হওয়ার পর তিনি তার নাতি-নাতনি নিয়ে গাড়িতে করে ক্রীড়া ইভেন্টে যাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। অর্থ বাঁচাতে ৬৮ বছর বয়সী ব্ল্যাকমন ১৮ মাস ধরে হেয়ারড্রেসারে যাননি। এছাড়া চলতি বছরের মাঝামাঝিতে গ্রীষ্মের ছুটিতে গাড়ি চালিয়ে তিনি আরকানসাসে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার বিষয়টিও পুনর্বিবেচনা করছেন।

তিনি বলেন, অর্ধ গ্যালন অর্গানিক দুধের দাম ডলারে পৌঁছতে দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি। খরচ কমাতে আমি মাংস খাওয়াও কমিয়ে দিয়েছি। পরিবর্তে সালাদ টিনজাত স্যুপের মতো খাবার খাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন