
হাইকোর্টের রায় অমান্য করে সাতক্ষীরা সদরের বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অপরূপ কুমার সাহা নিশ্চিত করেছেন, গত ২৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ে এ
নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় নবগঠিত ম্যানেজিং কমিটির কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন হাইকোর্ট বিভাগ। সে আদেশ উপেক্ষা করেই অনুষ্ঠিত হয় নিয়োগ পরীক্ষা।
সদর উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের এরশাদুল হক জানান, আদালতে মামলা চলমান থাকার পরও জিয়াউর বিন সেলিম ওরফে যাদুকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে গত ১৬ মার্চ অনুমোদন দেন যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. শাহীন বিশ্বাস। এ কমিটির পক্ষ থেকে গত ১০ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক ও ১২ এপ্রিল সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে স্থানীয় পত্রিকায় এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। তিনি অভিযোগ করেন, মোটা অঙ্কের বিনিময়ে সহকারী শিক্ষক জামিল উজ জামানকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বলে স্থানীয়ভাবে প্রচার করা হয়েছে।
এরশাদুল হক আরো জানান, এ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর কোনো প্রতিকার না পেয়ে গত ১৬ এপ্রিল তিনি বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। এতে শিক্ষাসচিব, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়াউর বিন সেলিম ওরফে যাদুসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়।
রিট পিটিশনের শুনানি শেষে মহামান্য হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাফর আহম্মেদ ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গত ১৬ মার্চ যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. শাহীন বিশ্বাস স্বাক্ষরিত জিয়াউর বিন সেলিম ওরফে যাদুকে বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনোনীত সম্পর্কিত আদেশের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। একই আদেশে ওই কমিটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জিয়াউর বিন সেলিম ওরফে যাদুর প্রতি রুল জারি করা হয়।
বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অপরূপ কুমার সাহার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে জানান, হাইকোর্টের রুল জারি হয়েছে আমি জানি। তার কপিও হাতে পেয়েছি। কিন্তু আমি অফিসিয়ালি কপি পাইনি বলে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি। বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি জিয়াউর বিন সেলিম ওরফে যাদুর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনের মুঠোফোনে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।