তালিকাভুক্ত আইপিপির আয় ও মুনাফা

ভালো করেছে বারাকা পতেঙ্গা ডরিন ও ইউপিজিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদক (আইপিপি) কোম্পানিগুলোর আয় মুনাফায় মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। সময়ে চারটি কোম্পানির আয় বাড়ার বিপরীতে কমেছেও চারটির।  একইভাবে চারটি কোম্পানির নিট মুনাফা বাড়ার বিপরীতে তিনটির কমেছে এবং লোকসান হয়েছে একটি কোম্পানির।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আটটি আইপিপির মধ্যে আয় মুনাফা দুটোই বেড়েছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার, ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ইউপিজিডি)

চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আয় হয়েছে হাজার ৫২৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৩৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে প্রায় ২৯০ শতাংশ। নয় মাসে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৯৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৮৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

বারাকা পাওয়ারের আয় চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে ১৪০ কোটি ২৬ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৪০৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ৬৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। নয় মাসে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ২১ দশমিক ১৪ শতাংশ।

বারাকা পাওয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের পরিচালক মো. ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বারাকা পাওয়ারে খুচরা যন্ত্রাংশ সংযোজন করতে হয়েছে এবং বাবদ কোম্পানির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে। কারণে বারাকা পাওয়ারের আয় মুনাফা কমে গেছে। অন্যদিকে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ার কারণে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের আয় মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এছাড়া আমরা কোনো ধরনের জ্বালানি ছাড়াই শিকলবাহা কেন্দ্র থেকে মেগাওয়াট পতেঙ্গা কেন্দ্র থেকে মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। এতে কোম্পানির ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি মুনাফায় ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

ডরিন পাওয়ার চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে ৮৪১ কোটি ১৭ লাখ টাকা আয় করেছে। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৪৬৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৮০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১৩৪ কোটি লাখ টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৫৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে ইউনাইটেড পাওয়ারের আয় হয়েছে হাজার ৩২৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে আয় ছিল হাজার ৪৮৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। নয় মাসে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে হাজার ২২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৮৭৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে আয় মুনাফা দুটোই কমেছে জিবিবি পাওয়ারের। এর মধ্যে প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৫০ কোটি ৩৯ লাখ টাকায়। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ২৪ শতাংশ।

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ থাকায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে আয় কমার পাশাপাশি লোকসান গুনতে হয়েছে খুলনা পাওয়ারকে। ২০২১-২২ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ১৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৪৮২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ৯৭ দশমিক ২২ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কোটি ৩৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে ১০৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা নিট মুনাফা হয়েছিল।

শাহজিবাজার পাওয়ারের আয় কমলেও চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে। তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে ৫৬৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৬৮৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১০৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৮০ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ২৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জের ১০২ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সাড়ে আট মাস, চান্দিনার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আড়াই মাস মাধবদীর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেড় মাস বন্ধ থাকায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে সামিট পাওয়ারের আয় বাড়লেও নিট মুনাফা কমেছে। চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে কোম্পানিটির আয় হয়েছে হাজার ৩২০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল হাজার ৩৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সময়ের ব্যবধানে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে দশমিক ২৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৫০২ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৬৬৫ কোটি ২৩ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন