দেশে প্রথমবারের মতো পণ্য বেচাকেনার জন্য কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। প্রথমে স্বর্ণ ও কিছু কৃষিপণ্য দিয়ে শুরু করতে চায় এক্সচেঞ্জটি। এজন্য অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরামর্শ সেবা নেয়ার জন্য ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জের (এমসিএক্স) সঙ্গে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএসই। আজ বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এর আগে এ চুক্তির বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকে অনুমোদন নিয়েছে সিএসই।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর উদ্দেশ্যে এমসিএক্সের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে গতকাল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে সিএসই। এতে এক্সচেঞ্জটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল
ইসলাম, মো. লিয়াকত হোসেন চৌধুরী, মো. রেজাউল ইসলাম ও মো. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম ফারুকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর বিষয়ে গত বছরের অক্টোবরে বিএসইসির কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন পায় সিএসই। এর পর থেকেই এক্সচেঞ্জটি এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য ভারতের এমসিএক্স ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ (এনএসই), বুর্সা
মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া কমোডিটি এক্সচেঞ্জ (আইসিডিএক্স), প্রাইস
ওয়াটারহাউজ কুপারস (পিডব্লিউসি), রাশিয়ান
ইনভেস্টমেন্ট ফেডারেশন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রাইড গ্রুপ ও প্রকাশ চতুর্বেদীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। আর্থিক দিক, পারস্পরিক সম্পর্ক ও ব্যবহারিক অভিজ্ঞতার বিষয়টি বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত এমসিএক্সের সঙ্গে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নেয় সিএসই। এক্ষেত্রে দুই প্রতিষ্ঠান যেসব বিষয় নিয়ে কাজ করবে তার মধ্যে রয়েছে কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর জন্য এ মুহূর্তে সহজলভ্য সম্পদ ও পণ্য, কমপক্ষে তিনটি চুক্তি চালু, বিজনেস রুল স্পেসিফিকেশন (বিআরএস) উন্নয়নে সহায়তা, সচেতনতা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, পণ্য ও মূল্য নির্ধারণ কমিটি গঠন, মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি, বাজার পরিচিতি, অভিজ্ঞতা বিনিময়, বিক্রয়োত্তর সেবা, ব্যবসার বিধিমালা, বাইলজ, পাঁচ বছরের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, ট্রেডিং ও মার্কেট সার্ভিল্যান্স, ক্লিয়ারিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট, জামানত ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, গুদাম, সরবরাহ কাঠামো ও অংশীদারির ধরন, অংশীজনদের জন্য প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সম্পৃক্ততা, রেফারেন্স মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি ও স্পট মূল্য নির্ধারণ এবং মূল্য ও পণ্যসংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি গঠন।
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ চালুর ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে সিএসই। এর মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ও তৃতীয় পক্ষ থাকায় অনুমোদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হতে পারে। দেশে কাঠামোগত স্পট এক্সচেঞ্জ না থাকার কারণে রেফারেন্স মূল্য ওঠানোর প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে। আর্থিক ডেরিভেটিভস লেনদেনের সুযোগ থাকলেও এ ধরনের কাঠামো ও বাজার পরিচিতি না থাকা। ফিউচারস ট্রেডিংয়ের জন্য গুদাম ও অন্যান্য বাজার কাঠামো নেই। সমন্বিত সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতে তৃতীয় পক্ষের সেবা প্রদানকারীর অনুপস্থিতি। ভালো রিটার্ন ও সার্বিক সফলতার জন্য বহুমুখী সচেতনতা ও সময়মতো পরিচালনা পর্ষদের সহায়তা প্রয়োজন। নতুন সম্পদের শ্রেণী বাস্তবায়নে একটি সিস্টেম গড়ে তুলতে হবে এবং এজন্য হার্ডওয়ার আপগ্রেড করার পাশাপাশি সিস্টেমকে সেভাবে কাস্টমাইজ করতে হবে।