গ্যাস সংকট

বিবিয়ানা কূপ সংস্কার শেষে স্বাভাবিক হবে পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্যাসক্ষেত্র বিবিয়ানায় গ্যাসকূপ সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ করায় রাজধানীতে হঠাৎ গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ গ্যাসকূপের সংস্কারকাজ শেষ হওয়ায় আজ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। সংস্কারকাজ পুরো শেষ হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এজন্য সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে।

শনিবার দিবাগত রাত থেকে রাজধানীতে হঠাৎ তীব্র গ্যাস সংকট শুরু হয়। পরিস্থিতি চলতে থাকে সকাল ৮টা পর্যন্ত। এরপর বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কিছুটা নিভু নিভু আকারে গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বললেও বিকাল কিংবা সন্ধ্যাবেলায়ও গ্যাস পাননি অনেকে।

মিরপুর- এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বাবু জানান, সাহরির কিছু সময় পর থেকে গ্যাস নেই। এরপর সারা দিন আর গ্যাসের চুলা জ্বালানো যায়নি। ইফতার রাতের রান্নার জন্য প্রস্তুতি নেয়া হলেও সন্ধ্যা নাগাদ তা করা যায়নি। হঠাৎ করে রমজানের শুরুতে কোনো ধরনের নোটিস ছাড়াই ধরনের ভোগান্তি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস বলছে, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণ মেরামতকাজে গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। যে কারণে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আজ নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। তিতাস গ্যাসের পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া বণিক বার্তাকে বলেন, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রে উন্নয়ন মেরামত কার্যক্রমের জন্য গ্যাস সংকট তৈরি হয়েছে। তবে আজ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সব মিলিয়ে সংকট নিরসনে তিন-চারদিন সময় লাগতে পারে।

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম বিবিয়ানা। ক্ষেত্রের গ্যাসকূপ থেকে গ্রিড লাইনে অর্ধেকের বেশি গ্যাস সরবরাহ করা হয়। বর্তমানে গ্যাসক্ষেত্রের ছয়টি কূপ বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের জরুরি মেরামত সংরক্ষণকাজের জন্য গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এতে কোনো কোনো এলাকায় সাময়িকভাবে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। অসুবিধার জন্য মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো এক সপ্তাহ লাগবে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা। বিষয়টি জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বিবিয়ানায় মোট ছয়টি গ্যাস কূপ মেরামতের কাজ চলছে। একটি কূপের মেরামত কাজ শেষ হয়েছে। আজ আরো তিনটি কূপ উৎপাদনে আসবে। এরপর আরো একটি কূপ চালু হবে। তবে একটি কূপের কাজ করতে সপ্তাহখানেক লেগে যাবে। ফলে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাসের ঘাটতি থেকে যাবে। এর মধ্যে এপ্রিল একটি কার্গো দেশে আসবে। আশা করছি তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় উৎস এলএনজি দিয়ে দেশে দৈনিক গ্যাসের সরবরাহ ২৮০ কোটি ঘনফুটের মতো। এর মধ্যে বিদেশী কোম্পানিগুলো থেকে আসছে অর্ধেক। এছাড়া দৈনিক ১১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ আসছে বিবিয়ানা থেকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন