দেশে চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। দেশে স্বাস্থ্য খাতে অব্যবস্থাপনা-অনিয়ম বেড়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোয় সাধারণ মানুষের বৈষম্যও বেড়েছে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ আয়োজিত ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর: বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের বিকাশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলেন, চিকিৎসা খরচের ৬৭ ভাগের বেশি ব্যক্তির পকেট থেকে যাচ্ছে। দেশে চিকিৎসা খরচ বহন করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোয় রোগীরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। কিছুদিন পর পর গণমাধ্যমে অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে চলমান ভঙ্গুর অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় এশিয়ার সবচেয়ে কম খরচ হয় বাংলাদেশে। বিষয়টি হতাশাজনক। এ ব্যয় স্বল্প আয়ের দেশের তুলনায়ও কম। কিন্তু তার তুলনায় প্রাইভেটভাবে স্বাস্থ্য খাতেই ভালো পরিমাণে অগ্রগতি হয়েছে। তবে সে কারণে চিকিৎসা খরচের ৬৭ শতাংশের বেশি ব্যক্তির পকেট থেকে যাচ্ছে।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আমরা যথেষ্ট উন্নতি করেছি। তবে আমাদের অনেক অব্যবস্থাপনাও রয়েছে। অনেক দেশ জিডিপির ২ থেকে ৩ শতাংশ খরচ ব্যয় করে। আমাদের ১ শতাংশেরও কম। তার পরও আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এগিয়েছে। যেটি ইতিবাচক।
সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সির (সিডা) স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের মাতৃ ও শিশুমৃত্যু কমেছে। কিন্তু স্বাস্থ্যে যে বৈষম্য বাড়ছে, সেটি খুবই দুঃখজনক। এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে, অনেক মানুষ স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে গিয়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে।
সিপিডির ফেলো ও বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রওনক জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, সিডার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. জহিরুল ইসলাম, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু।