আমি
দ্বিতীয়
সফলতার
যে
গল্প
বলব
তা
আরো
মজার।
সে
ছিল
১৫-১৬
বছরের
ছেলে
কাইয়ুম—
আকারে
বেঁটে
মোটাতাজা।
যতদূর
মনে
পড়ে,
তার
বাড়ি
ছিল
কুমিল্লা।
সে
ছিল
১
নম্বর
হলের
‘সিক
বয়’।
তার
কাজ
ছিল
ছাত্ররা
কেউ
অসুস্থ
হলে
তার
সেবাযত্ন
করা;
ওষুধ,
খাবার,
পানি
ইত্যাদি
এনে
দেয়া।
সেও
অল্পদিনের
মধ্যে
তার
চাকরির
সঙ্গে
সঙ্গে
শুরু
করল
ব্যবসা—হলের
রান্নাঘরের
লাকড়ি
সরবরাহ
করা।
জ্বালানি
কাঠের
ব্যবসা
করতে
করতে
কয়েক
বছরের
মধ্যে
সেও
হয়ে
গেল
লাখপতি।
তারপর
সিক
বয়ের
চাকরি
ছেড়ে
চলে
গেল
অন্য
ব্যবসায়।
আজ
কাইয়ুম
নিশ্চয়ই
কোটিপতি,
হয়তোবা
আরো
বড়
ধনী
হয়ে
গেছে,
যা
আমি
চিন্তাও
করতে
পারছি
না।
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের
একজন
স্কুলশিক্ষকের
সন্তান
হলেও
ব্যবসা-বাণিজ্য
করে
টাকা
কামাই
করার
কথা
কোনো
দিন
চিন্তাও
করিনি।
ছোটবেলা
থেকেই
আমার
লক্ষ্য
ছিল
লেখাপড়া
শেষ
করে
সিএসএস
পরীক্ষা
দেব
এবং
কেন্দ্রীয়
সরকারের
অধীনে
চাকরি
করব।
এ
স্বপ্ন
যতটা
না
আমার
ছিল,
তার
চেয়ে
অনেক
বেশি
ছিল
আমার
বড়
ভাইয়ের।
দেশ
স্বাধীন
হওয়ার
পর
আমার
জীবনের
এ
খায়েস
আর
রইল
না।
পরিবর্তিত
পরিস্থিতিতে
ঠিক
করলাম
মাস্টার্স
শেষ
করে
বিদেশে
গিয়ে
পিএইচডি
করব
এবং
শিক্ষকতায়ই
জীবনটা
কাটিয়ে
দেব।
এ পরিকল্পনা
অনুযায়ী
১৯৭৮
সালের
জুলাই-আগস্টের
দিকে
আমি
বিশ্ববিদ্যালয়ের
অর্থনীতি
বিভাগে
একজন
প্রভাষক
হিসেবে
যোগ
দিই।
আমাকে
এ
সুযোগ
দিয়েছিলেন
তত্কালীন
বিভাগীয়
প্রধান
অধ্যাপক
কায়সার
হুসেইন।
এজন্য
তার
কাছে
আমি
চিরকৃতজ্ঞ।
১৯৯৮-৯৯
সালে
গ্রীষ্মকালীন
ছুটিতে
আমি
পরপর
দুবার
ঢাকায়
ছিলাম
এবং
দারুল
ইহসান
বিশ্ববিদ্যালয়ে
একটা
করে
কোর্স
পড়িয়েছিলাম।
তখন
কায়সার
স্যার
ছিলেন
ওই
বিশ্ববিদ্যালয়ের
ইনস্টিটিউট
অব
বিজনেস
স্টাডিজের
পরিচালক।
সেই
সময়
টের
পেয়েছিলাম
দুই
দশক
পরও
আমার
প্রতি
স্যারের
স্নেহ-মমতায়
একটুও
ভাটা
পড়েনি।
দুপুরে
খাওয়ার
সময়
প্রায়ই
তিনি
বাসা
থেকে
নিজের
জন্য
ফালি
ফালি
করে
কেটে
আনা
আপেল
আমার
সঙ্গে
শেয়ার
করতেন
এবং
বলতেন,
‘ওয়াহিদ,
খাও—An apple
a day keeps the doctor away.’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে
ছাত্র
ও
শিক্ষক
থাকাকালীন
আমি
আরো
অনেকের
সহূদয়
আনুকূল্য
পেয়েছি।
এ
রকম
আরেকজন
মানুষের
কথা
এখানে
বলতে
চাই।
তিনি
ছিলেন
‘রাষ্ট্র
ও
সরকার’
বিভাগের
প্রধান
এবং
১
নম্বর
হলের
প্রভোস্ট
ড.
আজিজুল
হক
স্যার।
শিক্ষক
হিসেবে
যোগ
দেয়ার
পর
আজিজ
স্যার
আমাকে
তার
হলের
অ্যাসিস্ট্যান্ট
হাউজ
টিউটরের
কাজ
দিয়েছিলেন।
এতে
আমার
বেশকিছু
আর্থিক
সাহায্য
হয়েছিল।
এই
স্যারের
কাছেও
আমি
ঋণী।
চাকরি
পাওয়ার
সঙ্গে
সঙ্গে
বিশ্ববিদ্যালয়
ক্যাম্পাসে
আমার
আবাসনের
সমস্যাটা
প্রকট
হয়ে
দেখা
দেয়নি,
কারণ
তার
কিছুদিন
আগে
থেকেই
আমি
তত্কালীন
২
নম্বর
হলে
নারায়ণগঞ্জের
অনুজপ্রতিম
এআরএম
মাহমুদুল
হাসানের
রুমে
থাকতাম।
সে
তার
রুমটি
আমাকে
ছেড়ে
দিয়ে
অন্য
রুম
আরেকজনের
সঙ্গে
শেয়ার
করত।
এমন
সৌজন্য
বোধ
কি
দুনিয়ার
আর
কোথাও
আছে!
আমার
প্রতি
মাহমুদের
এ
সহূয়তার
প্রতিদান
এ
জীবনে
দিতে
পারব
বলে
মনে
হয়
না।
যেহেতু আমি
অবিবাহিত
ছিলাম,
তাই
সৌভাগ্যক্রমে
অল্প
দিনের
মধ্যেই
ক্যাম্পাসে
আরো
দুজন
অবিবাহিত
শিক্ষকের
সঙ্গে
‘ডি’
টাইপ
কোয়ার্টারে
একটি
মেসের
সদস্য
হওয়ার
সুযোগ
পেয়ে
গেলাম।
ওই
মেসে
শুরুতে
আরেকজন
বিবাহিত
সদস্যও
ছিলেন,
তার
নাম
ছিল
সানোয়ার
আলী।
কয়েক
মাস
পর
সানোয়ার
ভাইয়ের
পরিবার
তার
সঙ্গে
এসে
যোগ
দেয়ায়
তিনি
মেস
ছেড়ে
আলাদা
সংসার
পাতলেন।
মেসে
আমাকে
একটি
থাকার
ঘর
দেয়া
হয়েছিল।
১
নম্বর
হল
প্রশাসনের
সঙ্গে
যুক্ত
থাকায়
ঘুমানোর
জন্য
সৌজন্যমূলক
একটি
খাটও
পেয়েছিলাম।
খাওয়া-দাওয়ার
ব্যবস্থা
ছিল
উল্টো
দিকের
বাসায়,
যেখানে
থাকতেন
ইংরেজি
বিভাগের
আমার
দুই
সহকর্মী
ও
মেসমেট।
একজনের
নাম
খালিকুজ্জামান
ইলিয়াস
এবং
অন্যজন
ছিলেন
মোহাম্মদ
রফিকুল
ইসলাম।
তারা
দুজনও
উত্তরবঙ্গের
মানুষ
এবং
আমার
এক-দুই
বছরের
বয়োজ্যেষ্ঠ।
তখন আমি
অর্থনীতি
বিভাগে
মাত্র
দুটো
কোর্স
পড়াতাম।
নিজের
কোনো
লেখাপড়া
নেই,
সংসার
নেই,
ভাবনাচিন্তাও
নেই।
‘তাইরে
নাইরে’
জীবন,
প্রচুর
অবসর
সময়—দিনে
বিভাগে
আড্ডা,
রাতে
ক্লাবে
গিয়ে
চা
খাওয়া,
স্যারদের
খেলা
দেখা,
মাঝে
মাঝে
ব্রিজের
টেবিলে
‘ডামি’
পার্টনার
হওয়া
এবং
বাসায়
গেলে
সানোয়ার
ভাইয়ের
‘টু-ইন-ওয়ান’-এ
গান
ও
বিবিসির
খবর
এবং
সংবাদ
বিশ্লেষণ
শোনা।
সেই
সোনালি
দিনগুলোয়
এ
ছাড়া
আমার
আর
কোনো
কাজই
ছিল
না।
রফিক ভাই
তার
ঘরে
বই-ম্যাগাজিন
পড়তেন,
ইলিয়াস
ভাই
তখন
গালিভারস ট্রাভেলসের অনুবাদ
নিয়ে
ভীষণ
ব্যস্ত।
তার
টেবিলের
সামনের
চেয়ারে
গিয়ে
বসলে
আমাকে
সময়
দিতেন,
একটু-আধটু
গল্প
করতেন।
তবে
তাকে
আমি
বেশি
বিরক্ত
করতাম
না।
তিনি
তার
কাজে
খুব
নিবেদিতপ্রাণ
ছিলেন।
আর
এজন্যই
পরবর্তীকালে
ইলিয়াস
ভাই
অনুবাদ
সাহিত্যে
জাতীয়
পুরস্কার
পেলেন।
তার
আরেকটি
পরিচয়
আছে।
তিনি
স্বনামধন্য
কথাসাহিত্যিক
ও
ঔপন্যাসিক
আখতারুজ্জামান
ইলিয়াসের
অনুজ।
রফিক ভাইয়ের
সঙ্গে
প্রায়ই
আমি
ক্যাম্পাসে
হাঁটাহাঁটি
করতাম,
মাঝেমধ্যে
লন
টেনিসও
খেলেছি।
কদাচিৎ
তার
সঙ্গে
বসে
গল্পগুজবও
হতো।
কোনো
এক
রোববার
ছুটির
দিন
বাইরে
ভীষণ
বৃষ্টি
হচ্ছে।
ওইদিন
তার
ঘরে
গিয়ে
দেখি
তিনি
বিছানায়
শুয়ে
শুয়ে
একটি
ইংরেজি
ম্যাগাজিন
পড়ছেন।
আমি
বললাম,
রফিক
ভাই,
কী
পড়েন।
‘ওয়াহিদ,
চেয়ার
টেনে
আমার
পাশে
এসে
বসো’—বললেন
অগ্রজতুল্য
রফিক
ভাই।
সেদিন
তিনি
আমাকে
একটি
অসাধারণ
গল্প
শুনিয়েছিলেন।
গল্পটি
ছিল
ইংরেজি
সাহিত্যের
একজন
সফল
ও
সার্থক
কবির
ব্যর্থ
বিবাহিত
জীবনের
করুণ
কাহিনী।
গল্প
যখন
শেষ
হয়
তখন
পাঠক
ও
শ্রোতা
আমাদের
দুজনেরই
চোখের
পাতা
ভেজা
ছিল।
এ
গল্পের
কেন্দ্রীয়
চরিত্র
আর
কেউ
নন,
বিংশ
শতাব্দীর
প্রথমার্ধের
মার্কিন
কবি
‘সিলভিয়া
প্লাথ’,
যিনি
মাত্র
৩০
বছর
বয়সে
দুটি
শিশুসন্তান
রেখে
জ্বলন্ত
ওভেনের
ভেতর
মাথাটা
সঁপে
দিয়ে
আত্মহত্যা
করেছিলেন।
শত
চেষ্টা
করেও
জীবনের
উপহাস
থেকে
যার
মুক্তি
মেলেনি,
মৃত্যুর
২০
বছর
পর
মরণোত্তর
‘পুলিত্জার’
পুরস্কারের
মাধ্যমে
মৃত্যুই
তাকে
মহিমান্বিত
করে
গেল।
দুঃখে
ভরা
সিলভিয়া
প্লাথের
পূর্ণ
জীবন
কাহিনী
কারো
জানার
ইচ্ছা
থাকলে
পড়ে
দেখতে
পারেন।
ইন্টারনেটে
কবির
জীবনীসহ
তার
প্রায়
সব
লেখাই
পাওয়া
যায়।
আজকের
এ
স্মৃতিকথা
সুন্দরভাবে
এখানেই
শেষ
হয়ে
যেতে
পারত
কিন্তু
আমার
যে
আরো
কিছু
না-বলা
কথা
বাকি
রয়ে
গেছে।
আপনারা
শুনবেন
না?
বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক
হিসেবে
আমার
শেষ
দিনের
কাহিনীটি
না
বললেই
নয়।
১৯৭৯ সালের
আগস্টের
শেষ
দিক।
এক
বছরের
ছুটি
নিয়ে
উচ্চশিক্ষার
জন্য
কানাডা
যাব।
একদিকে
ভিসা
নিয়েছি,
আরেকদিকে
বিয়ের
কাজটাও
সেরে
ফেলেছি।
এরই
মধ্যে
বড়
ভাই
নিউইয়র্ক
থেকে
টিকিট
পাঠিয়েছেন,
সব
ঠিকঠাক।
রওনা
দেয়ার
আগের
দিন
কিছু
জরুরি
কাজে
ক্যাম্পাসে
এসে
নেমেছি
প্রান্তিক
গেটে।
হেঁটে
আসার
পথে
বাঁ-দিকে
কাঁঠাল
গাছের
তলায়
দেখতে
পেলাম
‘ফজলু-রাবেয়া’
গভীর
প্রেমালাপে
মশগুল।
ফজলু
ছিল
পরিসংখ্যানের
ছাত্র
এবং
রাবেয়া
পড়ত
রসায়নশাস্ত্র
বিভাগে।
তারা
একই
ব্যাচের
না
আগে-পরের
ছিল,
তা
আমার
খেয়াল
নেই।
রাবেয়া
প্রাণচাঞ্চল্যে
ভরপুর
একটি
চটপটে
মেয়ে।
সে
যেমন
ছিল
সুন্দরী
তেমনি
বুদ্ধিদীপ্ত
ছিল
তার
চোখ
দুটো।
লেখাপড়ায়
কেমন
ছিল
জানি
না,
তবে
খেলাধুলায়
সে
খুব
পারঙ্গম
ছিল,
প্রতিদ্বন্দ্বীদের
অতিসহজেই
ধুলায়
মিশিয়ে
দিতে
পারত।
আর
প্রেমে
কেমন
ছিল
সেটা
ফজলু
জানে,
ভালো
করেই
জানে!
সে
সময়ে
ক্যাম্পাসে
ফজলু-রাবেয়ার
প্রেম
একটি
বহুল
আলোচিত
বিষয়
ছিল।
অনেক
বছর
পরে
যখন
জানলাম
রাবেয়া
ফজলুকে
ছেড়ে
এক
ইঞ্জিনিয়ারকে
বিয়ে
করেছে,
তখন
মনে
পড়ল
বহু
শোনা
রবি
ঠাকুরের
এই
গানটি—
‘...সখী,
ভালোবাসা
কারে
কয়?
সে কি
কেবলই
যাতনাময়
সে কি
কেবলই
চোখের
জল
সে কি
কেবলই
দুখের
শ্বাস
লোকে
তবে
করে
কী
সুখের
তরে
এমন দুখের
আশ...’
তারপর অর্থনীতি
বিভাগে
গিয়ে
স্যারদের
সঙ্গে
দেখা
করে
বেরিয়েছি
ভিসি
অফিসে
যাব,
যাওয়ার
পথে
দেখি
আমতলায়
কী
একটা
অনুষ্ঠান
হচ্ছে,
দর্শক-শ্রোতা
হাতেগোনা
কয়েকজন
মাত্র।
আরেকজন
পরিসংখ্যানের
ছাত্র,
শের
খান
গান
গাইছে—
‘চৈত্র
পবনে
মম
চিত্তবনে
বাণীমঞ্জরী সঞ্চলিতা
ওগো ললিতা,
ওগো
ললিতা...।’
এমন প্রেমময়,
মায়াময়
ও
ছায়াময়
ক্যাম্পাস
ছেড়ে
কি
কারো
বরফের
দেশে
যেতে
ইচ্ছে
করে?
তবু
যেতে
হবে,
পেছনে
ফেরার
কোনো
উপায়
নেই!
এখন
আমার
একজীবনের
সঙ্গে
যে
আরেকটা
জীবন
জড়িয়ে
গেছে!
ভিসির অফিসে
এসে
একটু
বিব্রতকর
অবস্থায়
পড়লাম
বৈকি!
স্যারের
পিএস
গফুর
সাহেবের
রুমে
ওয়েটিং
এরিয়ায়
বসা
এক
ভদ্রমহিলাকে
দেখে
চিনে
ফেললাম।
তিনি
তার
মেয়েকে
নিয়ে
এসেছেন
চাকরির
ইন্টারভিউ
দেয়াতে।
ততক্ষণে
বুঝে
গেলাম
ইংরেজি
বিভাগে
লেকচারার
পদে
প্রার্থীদের
ইন্টারভিউ
চলছে।
আমিও
ভিসি
সাহেবের
সঙ্গে
দেখা
করার
জন্য
বসে
আছি।
কিছুক্ষণ
পর
ওই
পদপ্রার্থী
ভিসির
অফিস
থেকে
বেরিয়ে
এলেন।
তাকে
এবার
দেখলাম
অন্যখানে,
অন্য
অবয়বে;
যিনি
মাত্র
দু-তিন
সপ্তাহ
আগে
আমার
ইন্টারভিউ
নিয়েছিলেন
তারই
পিত্রালয়ে
নিজের
হবু
স্বামী
হিসেবে।
না
জানার
মধ্য
দিয়েই
আমি
ওই
ইন্টারভিউর
ফল
জেনেছিলাম।
এর
অর্থ
কী,
নিশ্চয়ই
বুঝতে
পারছেন।
তবে
ওই
দিনকার
তার
ইন্টারভিউতে
তিনি
সফল
হয়েছিলেন
কিনা
স্বভাবতই
তা
জানার
আমার
আর
কোনো
আগ্রহ
রইল
না।
ইন্টারভিউ শেষে
তারা
(মা-মেয়ে)
ঢাকা
ফিরে
যাবেন।
আমিও
উপাচার্য
জিল্লুর
রহমান
সিদ্দিকী
স্যারের
সঙ্গে
দেখা
করে
বেরিয়েছি।
আমারও
এবার
ঢাকায়
শ্বশুরালয়ে
ফেরার
পালা।
পরদিন
কানাডার
উদ্দেশে
রওনা
দেব।
বাসায়
এখনো
বেশ
কাজ
বাকি
রয়ে
গেছে।
তাড়াতাড়ি
ফিরতে
হবে।
ভদ্রমহিলা
বিচক্ষণ,
বিব্রতকর
পরিস্থিতি
একটু
সহজ
করার
লক্ষ্যে
তিনি
বললেন,
‘ওয়াহিদ,
চলো
আমাদের
সঙ্গে,
আমরা
গাড়ি
নিয়ে
এসেছি,
তোমাকে
নামিয়ে
দিয়ে
যাব।’
আমি
রাজি
হয়ে
গেলাম।
সেদিনের
সেই
রাইডের
কথাটা
কৃতজ্ঞতাভরেই
আমি
আজও
স্মরণ
করি।
এভাবে বিভিন্ন
অভিজ্ঞতার
ভেতর
দিয়ে
জীবনের
শ্রেষ্ঠ
একটা
সময়
পার
করে
এসেছি
আমার
প্রিয়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ওই
সাত
বছরে
জাবি
ক্যাম্পাসে
ঘটে
যাওয়া
যত
ঘটনা
ও
অঘটনের
সাক্ষী
হয়ে
আছি,
তার
খুঁটিনাটি
বয়ান
দিতে
গেলে
অনায়াসে
২০০
পৃষ্ঠার
একটা
বই
লেখা
হয়ে
যাবে।
সময়
ও
সুযোগ
পেলে
লিখতেও
পারি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
এমন
একটি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,
যার
প্রতিটি
ধূলিকণা
আমার
পরিচিত।
ওই
ক্যাম্পাসের
পথে
পথে
খুঁজলে
এখনো
পাবেন
আমার
চঞ্চল
পায়ের
চিহ্ন।
লাল
ইটের
দেয়ালে
দেয়ালে
পরখ
করুন,
ভেসে
উঠবে
আমার
হাতের
ছাপ।
কৃষ্ণচূড়া
আর
শাল
গাছের
ডালে
ডালে
দেখতে
পাবেন
আমার
হাতের
ছোঁয়া।
বাতাসে
কান
পাতলে
শুনবেন
আমার
ক্ষীণ
কণ্ঠস্বর,
আর
শুঁকলে
পাবেন
শ্বাসের
গন্ধ।
নিবিড়ভাবে
তাকালে
কাঁঠালের
ঝরা
হলুদ
পাতায়
অরুণ
আলোয়
জেগে
উঠতে
পারে
আমার
সেই
সময়কার
তরুণ
মুখচ্ছবি।
ওই ক্যাম্পাসের
নির্মল
খোলা
হাওয়া,
সবুজ
ঘাসের
বিস্তীর্ণ
ময়দান,
গাছের
পাতার
নড়াচড়া,
হ্রদের
পানিতে
ওঠা
ছোট
ছোট
ঢেউ,
গাছে
গাছে
পাখির
কুজন,
বনে
বনে
মৌমাছি
আর
প্রজাপতির
ওড়াউড়ি,
এলোমেলো
বিক্ষিপ্তভাবে
হাঁটাহাঁটি
করা
ছাত্র-ছাত্রী,
কাঁঠালতলায়
জোড়ায়
জোড়ায়
প্রেমিক-প্রেমিকার
চুপচাপ
আলাপন,
সন্ধ্যায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের
বুক
চিরে
মেঠোপথে
রাখালের
ধুলা
উড়িয়ে
ঘরে
ফেরার
দৃশ্য,
রাতে
ওই
দূরে
বটগাছের
দিক
থেকে
বাতাসে
ভেসে
আসা
বাঁশির
সুর—
‘আমায়
এত
রাতে
কেনে
ডাক
দিলি,
প্রাণ কোকিলা
রে...।’
বাঁশির আওয়াজ
থেমে
গেলে
শুরু
হতো
থেকে
থেকে
শিয়ালের
ডাক।
এ
সবকিছুই
আমাকে
টানে;
বিদেশ-বিভুঁইয়ে
এখনো
টানে,
ভীষণভাবে
টানে!
জীবনের যে
সুন্দর
সময়টা
পার
করে
এসেছি
প্রকৃতির
কোলে—ঘাস,
গাছ,
লতাপাতা,
পাখি
আর পানির
মাঝে,
নিরিবিলি
ওই
জায়গাটায়;
সেই
দিনগুলোর
মধুর
মধুর
স্মৃতি
এবং
গভীর
স্মৃতিকাতর
অনুভূতি
এতই
তীক্ষ
ও
তীব্র
যে
এখন
যেখানেই
থাকি
না
কেন,
এসবের
স্মৃতি
রোমন্থন
করে
বাকি
জীবনটা
সুখেই
কাটিয়ে
দিতে
পারব
বলে
মনে
করি।
পারব
তো?
(শেষ)
আবু এন এম ওয়াহিদ: অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি; এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ