ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট ক্রমেই জটিল আকার ধারণ করছে। ফলে এ সংকট আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার সম্ভাবনার পাল্লাও দিয়ে বাড়ছে। এ সংকটের কারণে এরই মধ্যে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ১১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বাড়ার শঙ্কা জোরালো হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় গত শুক্রবার বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার প্রধান সব পুঁজিবাজারের সূচক পয়েন্ট হারিয়েছে।
গত শুক্রবার এশিয়ার অন্যতম প্রধান পুঁজিবাজার জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ৫৯২ পয়েন্ট হারিয়েছে। এ সময় চীনের সাংহাই সূচক ৩৩, ভারতের বিএসই সেনসেক্সে ৭৬৯ ও ভিয়েতনামের হ্যাং সেং সূচক ৫৬২ পয়েন্ট কমেছে। পাশাপাশি হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের পুঁজিবাজারও পয়েন্ট হারিয়েছে।
ইউরোপের পুঁজিবাজারে যুক্তরাজ্যের এফটিএসই ১০০ সূচক গত শুক্রবার ২৫২ পয়েন্ট কমেছে। জার্মানির ব্লুচিপ সূচক ডিএএক্স ৬০৪ পয়েন্ট এবং ফ্রান্সের সিএসি ৪০ সূচক ৩১৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। স্পেন, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, সুইডেন, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, তুরস্ক ও নেদারল্যান্ডসের পুঁজিবাজারেও দরপতন হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের পুঁজিবাজার তুলনামূলক স্থিতিশীল দেখা গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পুঁজিবাজার পয়েন্ট হারালেও এ সময় কুয়েত, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন ও ওমানের পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক ১৮০, এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৩৫ এবং নাসডাক সূচক ২২৪ পয়েন্ট হারিয়েছে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও ভেনেজুয়েলার পুঁজিবাজারও এ সময়ে নিম্নমুখী ছিল। তবে কানাডার পুঁজিবাজারের সূচকগুলো ছিল ঊর্ধ্বমুখী।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর প্রভাবে নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায় বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে। ব্যতিক্রম ছিল না দেশের পুঁজিবাজারও। অবশ্য এর একদিন পরেই মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে আলোচনার সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে বৈশ্বিক পুঁজিবাজার আবারো ঘুরে দাঁড়ায়। যদিও এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে দেশের পুঁজিবাজারে। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দুদিনের সাপ্তাহিক বন্ধ শেষে ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর প্রথম দিনেই ১৬৩ পয়েন্ট হারায় ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স।
গত সপ্তাহে সার্বিক নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এ সময়ে ডিএসইএক্স ১৪৩ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ কমে ৬ হাজার ৬৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে লেনদেন ছিল ৩ হাজার ৯৮৭ কোটি টাকা।