ধস কাটিয়ে উত্থানে ফিরেছে পুঁজিবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত সপ্তাহের শেষ চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস বড় পতন হলেও গতকাল সেই অবস্থান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। আগের দুই কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭২ পয়েন্ট হারালেও গতকাল ৬৩ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে সূচকটি। তবে এদিন লেনদেনের পরিমাণ আগের কার্যদিবস থেকে প্রায় ২০০ কোটি টাকা কমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) এদিন একই ধারায় লেনদেন শেষ হয়েছে।

গত ২৪ ২৭ ফেব্রুয়ারির পতনের কারণ হিসেবে বাজার বিশ্লেষকরা ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট এবং মার্জিন ঋণ হিসাবে ঋণাত্মক ইকুইটি সমন্বয়ে সাম্প্রতিক সময়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন। অর্থনীতিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য প্রভাব না থাকলেও মনস্তাত্ত্বিকভাবে এটি বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করছে বলে তাদের দাবি। এছাড়া ঋণাত্মক ইকুইটি সমন্বয়ের বিষয়টিও নেচিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন তারা।

তবে বাজার বিশ্লেষকদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা দেখছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা। গতকাল ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটি মার্কেটের (বিএএসএম) যৌথ উদ্যোগে পুঁজিবাজারে মুদ্রানীতি রাজস্ব নীতির প্রভাব শীর্ষক এক কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিএসইসি কমিশনার অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, গত দুদিনে সূচক কমার পেছনে ইউক্রেন-রাশিয়া ইস্যু কিংবা ঋণাত্মক ইকুইটির কোনো যোগসাজশ আছে বলে আমাদের মনে হয় না। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ইস্যুতে সুযোগসন্ধানীরা ফায়দা নেয়ার জন্য কিছুটা ভূমিকা রাখতে পারে। আর ঋণাত্মক ইকুইটি নিয়ে গণমাধ্যমে যে খবর প্রচারিত হয়েছে তা পুরোপুরি সঠিক না। ঋণাত্মক ইকুইটি সমন্বয়ে সপ্তমবারের মতো সময় বাড়ানো হয়েছে। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

এদিকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল লেনদেন শুরুর মাত্র মিনিট পরই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়, যা ১১টা ২৭ মিনিটে ৮৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে দিন শেষে ৬৩ পয়েন্ট যোগ হয়ে সূচকটির অবস্থান দাঁড়ায় ৬৭৩৯। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ এদিন ১৪ পয়েন্ট এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস আট পয়েন্ট বৃদ্ধি নিয়ে দিন শেষ হয়। সূচক দুটির বর্তমান অবস্থান যথাক্রমে ২৪৮২ পয়েন্ট ১৪৫৩।

ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৭৭টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৩১৪টির, অন্যদিকে কমেছে ৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭টি সিকিউরিটিজের বাজারমূল্য। তবে এদিন স্টক এক্সচেঞ্জটিতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ১৮৬ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার কমে ৭৩০ কোটি লাখ ৯৭ হাজার টাকা হয়েছে। আগের কার্যদিবসে ৯১৬ কোটি ২৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছিল।

অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৮০ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৭৮৮ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। আর সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই এদিন দশমিক ১৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ৬৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৫টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২১০টির, কমেছে ৬৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৮টির বাজারদর। সিএসইতে মোট ২৫ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪২ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩ কোটি ৫৩ লাখ ২১ হাজার ১৩৫ টাকার সিকিউরিটিজ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন