চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি রোগীদের সেবা প্রদানের জন্য সরকারিভাবে দুটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। কিন্তু ছয় মাস ধরে চালকের গাফিলতিতে অ্যাম্বুলেন্স দুটি তালাবদ্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা পাচ্ছেন না অ্যাম্বুলেন্স সেবা। এতে প্রতিনিয়ত সেবা নিতে আসা রোগীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। ফলে বাধ্য হয়ে চট্টগ্রামে রেফার করা রোগীদের এ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে স্বজনদের।
সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স দুই কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। একটি চলাচলের উপযোগী দেখা গেলেও আরেকটির একেবারেই বিধ্বস্ত অবস্থা। সরকারি এ দুই অ্যাম্বুলেন্সের কার্যকারিতা না থাকার সুযোগে হাসপাতালের গেটের বাইরে তিনটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। হাসপাতালে আসা রোগীদের অভিযোগ, কেউ জরুরি প্রয়োজনেও সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সেবা পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিতে হচ্ছে রোগীর স্বজনকে।
সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজন ভুক্তভোগী এমরান হোসাইন অভিযোগ করে জানান, আমার ভাতিজিকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে যাওয়ার জন্য হাসপাতালে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে আমার ভাতিজিকে নিয়ে যেতে হচ্ছে। আমাদের আগে রোগী বাঁচাতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক কর্মকর্তা চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তারা বলেন, আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তার মধ্যে একটি নতুন, আরেকটি পুরনো। চালক রয়েছেন একজন। এ হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের চালক কারো কোনো কথা শোনেন না। নিজের ইচ্ছেমতো চলেন। কেউ যদি তাকে জরুরি রোগী নিতে প্রেসার সৃষ্টি করে তখন চালক কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিভিন্ন অনিয়মের কারণে তাকে এ হাসপাতাল থেকে পটিয়া উপজেলায় বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি আবারো এ হাসপাতালে বদলি হয়ে এসে নিয়মনীতির কোনো তোয়াক্কা করছেন না। অথচ অতীতের চালকদের প্রতি মাসে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রেফার করা ১০৫ জন পর্যন্ত জরুরি রোগী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু বর্তমান চালক ৫ আগস্ট
যোগদান করেছেন। সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ থেকে কোনো রোগী নিচ্ছে না বর্তমান চালক। ফলে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু জাহিদ মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে বলেও তিনি জানান।