জাহাঙ্গীরনগর
বিশ্ববিদ্যালয়ের
লাইব্রেরিকে
ঘিরেও
আমার
অনেক
স্মৃতি
আছে।
তার
মধ্যে
দু-চারটি
আজ
আপনাদের
সঙ্গে
ভাগাভাগি
করতে
পারি।
যা
বলব
তার
প্রায়
সবই
পাঠাগারের
দুই
বড়
কর্তার
সান্নিধ্যে
আসার
ফল।
লাব্রেরিয়ান
সাহেবের
নাম
ছিল
আবুল
ফজল
ফজলুল
মজিদ।
আমেরিকাফেরত
মজিদ
স্যার
ছিলেন
আসামের
অন্তর্গত
কাছাড়
জেলার
লোক।
তিনি
ছিলেন
একজন
চিরকুমার
এবং
অত্যন্ত
অমায়িক
ভদ্রলোক।
তার
ডেপুটি
ছিলেন
চট্টগ্রামের
এবিএম
সাইফুল্লাহ।
লাইব্রেরিতে
বসে
আমি
পড়াশোনা
খুব
একটা
করতাম
না,
বরং
স্ট্যাকরুমে
ঘোরাঘুরি
করা,
বই
দেখা
এবং
বিদেশী
ম্যাগাজিনের
পাতা
উল্টানোই
ছিল
আমার
কাজ।
হরহামেশা
আশপাশে
দেখতেন
বলেই
হয়তোবা
তারা
দুজনই
আমাকে
বেশ
স্নেহ
করতেন।
একদিন
আমি
মজিদ
স্যারের
অফিসে
বসে
আছি।
এমন
সময়
তার
এক
অধস্তন
কর্মচারী
এক
অনুষ্ঠানের
দাওয়াতপত্র
দেখাচ্ছেন।
স্যার
চিঠিখানা
ডান
হাতে
চোখের
সামনে
তুলে
ধরেই
বললেন,
“শুরুতেই
ভুল
বানান,
সম্বোধনে
‘সুধি’
দীর্ঘ
ইকার
নয়,
হ্রস্ব
ইকার
হবে।”
এর কয়েক
বছর
পর
আরেকদিনের
ঘটনা।
আমি
তখন
অর্থনীতি
বিভাগের
একজন
তরুণ
প্রভাষক।
সন্ধ্যার
পরে
স্যারের
সঙ্গে
আমিও
বিশ্ববিদ্যালয়
ক্লাবে
গিয়ে
ঢুকেছি।
বসতে
না বসতে
দেখলাম
টিভি
চলছে,
গান
হচ্ছে,
কিন্তু
কেউ
না
কেউ
টিভিটাকে
বাকরুদ্ধ
(মিউট) করে
রেখেছেন।
আমি
একটু
বিরক্ত
হয়ে
বললাম—এ
কি,
গান
গাচ্ছে
অথচ
কিছুই
শোনা
যাচ্ছে
না।
স্যার
আঁতকে
উঠে
আমাকে
প্রশ্ন
করলেন,
“ওয়াহিদ,
তুমি
কী
বলছ—‘গান
গাচ্ছে’
না,
‘গান
গাইছে’?”এর
পর
থেকে
এ
ভুল
আমি
আর
করি
না।
যখনই
কারো
মুখে
শুনি,
‘গান
গাচ্ছে’
তখনই
মজিদ
স্যারের
কথা
মনে
পড়ে,
তার
চেহারাটাও
চোখের
সামনে
ভাসে।
সাইফুল্লাহ স্যারের
বাংলায়
পাণ্ডিত্য
কতখানি
ছিল
তা
আমার
জানার
সুযোগ
হয়নি,
তবে
তিনি
চমত্কার
ইংরেজি
বলতেন।
তার
কাছ
থেকে
আমি
কথ্য
ইংরেজি
কিছুটা
হলেও
রপ্ত
করেছি।
ওই
স্যারের
সঙ্গেও
আমার
অনেক
মজার
মজার
অভিজ্ঞতা
ছিল,
কিন্তু
বেশির
ভাগই
আজ
ভুলে
গেছি।
বলার
মতো
একটি
ঘটনাই
এখন
মনে
পড়ছে।
আমি
একদিন
এক
ইংরেজি
ম্যাগাজিন
পড়তে
গিয়ে
একটি
যুগল
শব্দ
পেলাম—‘Night-soil.’
শব্দটির
মানে
জানি
না।
বোকার
মতো
প্রশ্ন
করে
সাইফুল্লাহ
স্যারকে
বিব্রত
করে
ফেললাম।
তিনি
সরাসরি
আমার
প্রশ্নের
উত্তর
না
দিয়ে
ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে
বোঝানোর
চেষ্টা
করছেন—চীনের
কমিউনিস্ট
বিপ্লবের
কথা
বলছেন,
প্রতিদিন
সকালবেলা
জনগণের
কাছে
মাও
সে
তুংয়ের
চাহিদার
বয়ান
দিচ্ছেন
ইত্যাদি।
স্যারের
কথা
শেষ
হওয়ার
আগেই
আমি
বুঝে
গেলাম
এবং
আমার
প্রশ্নের
উত্তর
দিতে
গিয়ে
কেন
তিনি
ঘুরপাক
খাচ্ছেন
তাও
সমঝে
নিতে
আমার
কোনো
অসুবিধা
হয়নি।
এ
বোঝাবুঝিতে
আমি
আত্মতৃপ্ত
হয়ে
একটু
নড়েচড়ে
বসলাম।
ভাবলাম,
বোঝানোর
আগেই
বুঝে
গেছি।
বাহ!
তার
মানে
আমি
বোকা
নই,
আমার
অনেক
বুদ্ধি
আছে!
৫০
বছর
পর
জীবনের
চড়াই-উতরাই
পেরিয়ে
এসে
আজ
দেখছি
আমার
সেই
দিনের
সব
হিসাবনিকাশ
‘ষোলো
আনাই
মিছে’।
বিদ্যাবুদ্ধির
পরীক্ষায়
পাঁচবার
হারলে
আমি
বড়জোর
একবার
জিতি।
এ
মুরোদ
নিয়ে
আর
যা-ই
হোক
বড়াই
করা
চলে
না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
লাইব্রেরিতে
আমার
পরের
অভিজ্ঞতাটি
সম্পূর্ণ
ভিন্ন
আঙ্গিকের।
তখন
আমি
প্রথম
বর্ষের
ছাত্র।
একদিন
ভীষণ
ভ্যাপসা
গরমের
দুপুরবেলা
লাইব্রেরির
পাঠকক্ষে
বসে
সত্যি
সত্যি
খুব
সিরিয়াসলি
পড়ার
চেষ্টা
করছি,
কিন্তু
কিছুই
বুঝতে
পারছি
না।
এমন
সময়
পরিসংখ্যান
বিভাগের
নতুন
শিক্ষক
মকবুল
আহমদ
স্যার
আমার
সামনের
চেয়ারে
বসে
বললেন,
তুমি
কী
পড়ছ?
স্যার
তখন
আমাকে
ব্যক্তিগতভাবে
চিনতেন
না,
আমার
নামও
জানতেন
না,
আমি
তার
কোনো
ক্লাসও
করিনি।
স্যারের
প্রশ্নের
উত্তরে
আমি
বললাম—স্যার,
আমি Henderson ও Quandt-এর
বইটি
পড়ছি।
এখান
থেকে
আমাকে
একটু
Slutsky-Equationটা
বুঝতে
সাহায্য
করবেন?
তিনি
আগে
নিজে
পড়লেন,
তারপর
বিভিন্নভাবে
আমাকে
বোঝানোর
চেষ্টা
করলেন,
অনেক
সময়
দিলেন
কিন্তু
আমার
মাথায়
কিছুই
ঢুকল
না।
অগত্যা
না
বুঝে
আমি
মুখস্থ
করে
ফেললাম।
পরীক্ষায়
ফলাফল
ভালোই
হয়েছিল,
কিন্তু
ঘাটতি
যা
ছিল
তা
তো
আর
পূরণ
হওয়ার
নয়।
হবে
কী
করে,
Inferior
good ও Giffen good-এর
কথা
না
হয়
বাদই
দিলাম,
যে
ছেলেটি
Indifference
curve ও Budget line ব্যবহার
করে
Income ও
Substitution effects আলাদা
করতে
জানে
না,
সে
‘Slutsky’
বুঝবে
কী
করে।
এ
তো
বললাম
মাইক্রোইকোনমিকসের
কথা।
ম্যাক্রোতেও
আমার
হালহকিকত
এর
চেয়ে
ভালো
কিছু
ছিল
না।
Equilibrium
condition ও National income identity-র
মধ্যে
ফারাক
কী
এবং
কেন
Intermediate
goods জিডিপির হিসাবে
এসে
যোগ
হয়
না—এসব
ধারণা
স্পষ্ট
হয়েছে
পিএইচডি
থিসিস
লেখার
সময়,
তার
আগে
নয়।
আজ ৫০
বছর
পর
এই
বেহালের
একটি
অন্যতম
কারণ
আমি
শনাক্ত
করতে
পেরেছি
বলে
মনে
হয়।
আমি
সঠিক
সময়ে
সঠিক
পাঠ্যবই
সঠিক
তরিকায়
পড়িনি।
স্নাতক
প্রথম
বর্ষে
কোনো
অবস্থাতেই
আমার
James
Henderson ও Richard Quandt-এর ‘Microeconomic Theory - A
Mathematical Approach’ বইটি
পড়ার
ও
বোঝার
দুঃসাহস
দেখানো
ঠিক
হয়নি;
বরং
আগাগোড়া
এবং
কেবল
একটা
বই-ই
পড়া
উচিত
ছিল
এবং
সেটা
হতে
পারত
Paul
Samuelson-এর প্রথম
পাঠ
‘Economics.’ এ
বইটি
তখন
দেশে
পাওয়া
যেত
এবং
যত
দূর
মনে
পড়ে,
আমাদের
লাইব্রেরিতেই
তার
দু-একটি
কপি
ছিল।
কারণ
আমি
বইটি
দেখেছি,
নাড়াচাড়া
করেছি,
পাতাও
উল্টিয়েছি,
কিন্তু
পড়িনি।
অথচ
যে
কেতাব
বোঝার
সাধ্য
ছিল
না
(Henderson-Quandt-এর
‘Microeconomic
Theory...’),
সেটা
আমার
ইংল্যান্ড
প্রবাসী
এক
মামাকে
লিখে
এক
কপি
আনিয়েছিলাম
এবং
পড়ার
ব্যর্থ
চেষ্টা
করে
যা
শিখেছিলাম,
তার
চেয়ে
বেশি
বিভ্রান্ত
হয়েছিলাম।
সেই
ভুল
বোঝাবুঝি
থেকে
মুক্তি
মিলেছে
কিনা,
সে
ব্যাপারে
আমি
আজও
নিশ্চিত
নই।
Henderson-Quandt-এর
কথা
যখন
উঠলই
তখন
একটি
মজার
গল্প
না
বলে
পারছি
না।
নব্বইয়ের
দশকের
গোড়ার
দিকের
কথা।
তখন
আমি
হয়তো
ইলিনয়তে
ছিলাম
অথবা
টেনেসিতে
চলে
এসেছি।
ওই
সময়
গ্রীষ্মকালীন
গবেষণা
প্রকল্প
হিসেবে
একটি
লিখিত
প্রস্তাব
জমা
দিয়েছিলাম
হাঙ্গেরির
বুদাপেস্ট
ইউনিভার্সিটি
অব
টেকনোলজি
অ্যান্ড
ইকোনমিকসে
(বিইউটিই)।
আমার
দরখাস্তে
আমি
বলেছিলাম,
যদি
তারা
আমার
গবেষণা
প্রস্তাব
গ্রহণ
করে
তাহলে
আমি
সম্পূরক
ফান্ডিংয়ের
জন্য
‘ফোর্ড
ফাউন্ডেশন’
ও
‘মেলন ফাউন্ডেশনে’-এ
চেষ্টা
করে
দেখব।
অনেক
দিন
অপেক্ষা
করার
পর
আমি
বিষয়টি
ভুলেই গিয়েছি। এমন
সময়
একদিন
আচমকা
হাঙ্গেরি
থেকে
এক
চিঠি
এসে
হাজির।
খাম
খুলে
দেখি
চিঠিটি
লিখেছেন
Richard
Quandt। তার
সেদিনের
ভাষা
যেটুকু
আমার
মনে
আছে
এর
সারসংক্ষেপ
আমার
মতো
করে
লিখলে
এ
রকম
দাঁড়াবে—‘আমি
আমেরিকার
মেলন
ফাউন্ডেশনের
সিনিয়র
অ্যাডভাইজর,
তুমি
বিইউটিই-তে
যে
প্রস্তাব
পাঠিয়েছ,
তাতে
মেলন
ফাউন্ডেশন
কোনো
টাকা
দেবে
না,
দেয়ার
কোনো
সম্ভাবনাও
নেই।’
আমি
চিঠি
পড়ে
যেন
আসমান
থেকে
জমিনে
ধপাস
করে
পড়ে
গেলাম।
কোথায়
নিউইয়র্কের
মেলন
ফাউন্ডেশন
আর
কোথায়
হাঙ্গেরির
বিইউটিই।
Henderson-এর
সঙ্গে
‘Microeconomics’
বইয়ের
সহলেখক
Richard
Quandt
বুদাপেস্ট
গেছেন
কী
করতে
এবং
আমার
গবেষণা
প্রস্তাবই-বা
তিনি
পেলেন
কীভাবে।
আজ
এ
লেখা
লিখতে
গিয়ে
আরেকটু
পরখ
করে
দেখি
প্রফেসর
Quandt-এর
জন্ম
এবং
বেড়ে
ওঠা
হাঙ্গেরির
ঐতিহাসিক
শহর
বুদাপেস্টেই,
তাই
এখন
বুঝলাম
তিনি
সেই
সময়
জন্মমাটিতে
নিশ্চয়ই
কোনো
ভিজিটিং
পজিশনে
ছিলেন।
এ
তাত্ত্বিক
অর্থশাস্ত্রবিদ
২০২১
সালে
মারা
গেছেন
৯১
বছর
বয়সে।
আফসোস,
তার
ওই
মূল্যবান
চিঠিটি
আমি
সময়মতো
যত্ন
করে
তুলে
রাখিনি।
এ রকম
আরেকটি
চিঠি
হারিয়ে
আমি
এখনো
অনুশোচনায়
ভুগি।
এর
কাছাকাছি
সময়ে
আমি
অন্য
একটি
ব্যক্তিগত
চিঠি
পেয়েছিলাম
নোবেল
বিজয়ী
পাকিস্তানি
প্রকৃতিবিজ্ঞানী
(Physicist) প্রফেসর
আব্দুস
সালামের
কাছ
থেকে।
তখন
আমি
ইস্টার্ন
ইলিনয়
ইউনিভার্সিটিতে
পড়াই।
হঠাৎ
করে
‘আহমদিয়া’
সম্প্রদায়ের
ওপর
আমার
গভীর
আগ্রহ
তৈরি
হয়।
তাদের
বই-পুস্তক
পড়তে
পড়তে
একদিন
কিছু
প্রশ্নসহ
এই
বিখ্যাত
বিজ্ঞানীর
কাছে
তার
ইতালির
ঠিকানায়
একটি
পত্র
পাঠিয়েছিলাম
(আপনারা অনেকে
হয়তো
জানেন,
তিনি
নিজে
একজন
আহমদিয়া
ছিলেন)।
যথাসময়েই
চিঠিটির
উত্তর
এসেছিল।
তিনি
তার
নিজের
কিছু
লেখার
সূত্র
ধরিয়ে
দিয়ে
বলেছিলেন,
‘আমার
শরীর
খারাপ,
আমি
তোমার সঙ্গে
এ
ব্যাপারে
আর
কোনো
চিঠি
চালাচালি
করতে
পারব
না।’
দুর্ভাগ্য
আমার,
অধ্যাপক
সালামের
নিজ
হাতে
সই
করা
সেই
চিঠিটাও
আমি
সামলে
রাখতে
পারিনি।
তরুণ বয়সে
আমি
দরকারি
ও
গুরুত্বপূর্ণ
কাগজপত্র
সংরক্ষণের
ব্যাপারে
যেমন
অগোছালো
ছিলাম
তেমনি
পরীক্ষা
প্রস্তুতির
বেলাও
ছিলাম
আনাড়ি
ও
অদক্ষ। সুষ্ঠুভাবে
সম্পূর্ণ
তৈরি
হয়ে
আমি
কোনো
সময়ই
পরীক্ষার
হলে
গিয়ে
হাজির
হতে
পারিনি।
তাই
যেকোনো
পরীক্ষার
ব্যাপারেই
আমার
ভয়ভীতি
ছিল
অতিমাত্রায়
বেশি।
এজন্য
পরীক্ষা
এলেই
আমি
দারুণভাবে
সন্ত্রস্ত
ও
বিচলিত
হয়ে
পড়তাম
এবং
একটা
অজানা
আতঙ্ক
আমাকে
তাড়া
করে
বেড়াত।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে
থাকতে
স্নাতক
সম্মান
প্রথম
বর্ষে
‘মানি
অ্যান্ড
ব্যাংকিং’
ক্লাসের
টিউটোরিয়াল
পরীক্ষা
পেছাতে
না
পেরে
আমরা
সব
সহপাঠী
মিলে
ঠিক
করেছিলাম
পরীক্ষার
দিন
কেউই
ক্লাসে
যাব
না।
এ
ব্যাপারে
গোটা
ক্লাসের
একমত
হতে
কোনো
অসুবিধা
হয়নি,
সময়ও
লাগেনি।
মাহেন্দ্রক্ষণে
পরীক্ষা
বয়কটে
সফল
হয়ে
আমরা
বেশ
ফুরফুরে
মেজাজে
ক্লাসরুম বিল্ডিংয়ে
ঘোরাঘুরি
করছিলাম,
আর
দূর
থেকে
দেখছিলাম
স্যার
কী
করেন।
শ্রেণীকক্ষে
কাউকে
না
পেয়ে
তিনি
করিডোরে
এসে
আমাদের
খোঁজাখুঁজি
করছিলেন।
মানি
অ্যান্ড
ব্যাংকিং
পড়াতেন
রবীন্দ্রসংগীত
শিল্পী
শ্রদ্ধেয়
ইকবাল
আহমেদ।
ওই
সময়
স্যারের
চেহারায়
রাগ
ও
ক্ষোভের
চেয়ে
অসহায়ত্বই
ফুটে
উঠেছিল
ঢের
বেশি।
সেদিনকার কথা
মনে
পড়লে
আজও
আমার
ভীষণ
খারাপ
লাগে,
মৃদু
অপরাধবোধ
আমাকে
চেপে
ধরে
কষ্ট
দেয়।
ওইদিনের
আনন্দ,
অনুভূতি
ও
পাপবোধমাখা
স্মৃতি
আমার
গোটা
শিক্ষকজীবনে
জমা
হয়ে
আছে
একটা
অমূল্য
সম্বল
হিসেবে!
যখনই
ছেলেমেয়েরা
আমার
কাছে
পরীক্ষা
পেছানোর
আবদার
নিয়ে
আসে—হোক
যৌক্তিক
কি
অযৌক্তিক—আমার
রাগ
হয়
না,
বিরক্তিও
আসে
না;
অসুবিধা
তো
নয়ই।
আমি
সহজেই
রাজি
হয়ে
যাই।
এত
সহজে
দাবি
আদায়,
ছাত্র-ছাত্রীরা
ভাবতেই
পারে
না!
মাঝে
মাঝে
আবদারকারীরাই
অবাক
হয়ে
যায়,
বুঝতে
পারে
না,
এখানে
আমার
এত
দুর্বলতা
কেন!
আমিও
‘গোপন
কথাটি
রেখেছি
গোপনে’।
জীবন
তো
প্রায়
পুরোটাই
পার
করে
দিলাম।
ক্লাসে
কোনো
দিন
মুখ
খুলে
বলিনি
জাহাঙ্গীরনগরে
সেদিনকার
একযোগে
ক্লাস
ও
পরীক্ষা
কামাইয়ের
কাহিনীটি।
এই ইকবাল
স্যারের
সঙ্গে
আমার
আরেকটি
মজার
স্মৃতি
আছে।
এবার
বলছি
সেদিনের
কাহিনী।
আমরা
প্রথম
বর্ষে
থাকতেই
স্যার
পিএইচডি
করতে
ইংল্যান্ডের
কেমব্রিজ
বিশ্ববিদ্যালয়ে
চলে
গেলেন।
দু-তিন
বছর
পর
হঠাৎ
একদিন
দেখি
তিনি
বেড়াতে
এসেছেন
আমাদের
বিভাগে।
স্যার
তার
পুরনো
অফিসে
বসে
অন্যান্য
শিক্ষকের
সঙ্গে
গল্প
করছেন।
এক
ফাঁকে
স্যারের
সঙ্গে
দেখা
করতে
আমিও
অফিসে
ঢুকে
পড়লাম।
সালাম
করে
তার
সামনে
গিয়ে
বললাম,
স্যার
কেমন
আছেন,
আমাকে
চিনতে
পারছেন?
ইকবাল
স্যার
আমার
চোখে
চোখ
রেখে
জবাব
দিলেন,
‘কেন
চিনব
না,
তোমার
কথা
আমার
ভালোই
মনে
আছে।’
তখনই
আমি
স্যারকে
একটি
প্রশ্নের
মুখোমুখি
দাঁড়
করিয়ে
দিলাম।
বললাম,
স্যার,
বলুন
তো
আমার
নাম
কী?
বুঝলাম,
তিনি
আমার
এ
রকম
সওয়ালের
জন্য
একেবারেই
তৈরি
ছিলেন
না।
একটু
দম
ধরে
উত্তর
দিলেন,
‘তোমার
নাম
হয়
ওহাব,
নয়তো
আব্বাস।’
আমি
একটু
মুচকি
হেসে
বললাম,
স্যার,
আমি
ওহাবও
নই, আব্বাসও
নই,
আমার
নাম
ওয়াহিদ।
মনে
হলো,
ক্লাসে
স্যারের
প্রশ্নের
উত্তর
দিতে
না
পারলে
আমি
যতটা
সংকোচবোধ
করতাম,
তার
চেয়ে
অনেক
বেশি
লজ্জা
পেলেন
আমার
প্রিয়
শিক্ষক
ইকবাল
আহমেদ।
স্যারের
করুণ
চেহারা
দেখে
আমার
ভীষণ
খারাপ
লেগেছিল,
খুব
আফসোস
হয়েছিল—তাকে
কেন
এমন
বিব্রতকর
প্রশ্নটি
করতে
গেলাম।
আবু এন
এম ওয়াহিদ: অধ্যাপক,
অর্থনীতি,
টেনেসি
স্টেট
ইউনিভার্সিটি,
এডিটর,
জার্নাল
অব
ডেভেলপিং
এরিয়াজ