ডিসেম্বরে চীনের শিল্প খাতের মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিডের বিপর্যয় কাটিয়ে আগেভাগেই পুনরুদ্ধার হয় চীনা অর্থনীতি। ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। তবে গত বছরের মাঝামাঝিতে গতি হারায় দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে দুর্বল চাহিদা দেশটির শিল্প খাতের মুনাফায় শ্লথগতি এনেছে। দেশটিতে পুনরায় কভিডের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তা ব্যয় ক্ষতিগ্রস্ত এবং রিয়েল এস্টেট বাজারের মন্দা আরো গভীর রফতানি ধীর হয়ে যাচ্ছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের শিল্প খাতের মুনাফা প্রবৃদ্ধির হার ছিল দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। পরিস্থিতিতে দুর্বল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার জন্য পিপলস ব্যাংক অব চায়নার (পিবিওসি) প্রতি শক্তিশালী পদক্ষেপের প্রত্যাশা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (এনবিএস) অনুসারে, ফ্যাক্টরি-গেট মূল্যস্ফীতি কমে যাওয়ায় ডিসেম্বরে শিল্প খাতের মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ বেড়েছে। বাড়ার হার ২০২০ সালের এপ্রিলের পর সবচেয়ে কম। নিয়ে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো শিল্প মুনাফায় এক অংকের প্রবৃদ্ধি হলো। খাতের মুনাফা গত নভেম্বরে শতাংশ অক্টোবরে ২৪ দশমিক শতাংশ বেড়েছিল।

সব মিলিয়ে ২০২১ সালে চীনের শিল্প খাতের মুনাফা লাখ ৭০ হাজার কোটি ইয়েনে ( লাখ ৩৭ হাজার কোটি ডলার) পৌঁছেছে। মুনাফার পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ৩৪ দশমিক শতাংশ বেশি। কভিডের সংক্রমণ মোকাবেলায় আরোপ করা লকডাউনের মধ্যে ২০২০ সালে দেশটির শিল্প মুনাফা দশমিক শতাংশ বেড়েছিল। গত বছর খাতের মুনাফা বাড়ার বার্ষিক হার ২০১১ সালে এনবিএস নিয়মিতভাবে ডাটা প্রকাশ শুরুর পর সর্বোচ্চ।

তবে চলতি বছর শিল্প মুনাফার প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। জাংইউয়েন ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ ওয়াং জুন বলেন, ডিসেম্বরের পরিসংখ্যান একটি দুর্বল বছরের দিকে ইংগিত করে। চলতি বছরের কয়েক মাসে শিল্প খাতের মুনাফা ২০২১ সালে উচ্চ ভিত্তির কারণে কমেও যেতে পারে।

এনবিএসের পরিসংখ্যানে মুনাফা করতে লড়াই করা বিপুলসংখ্যক ছোট সংস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। মূল কার্যক্রম থেকে বার্ষিক দুই কোটির বেশি আয় করা সংস্থাগুলোকে পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

অবস্থায় চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতি শক্তিশালী পদক্ষেপের দাবি জোরালো হচ্ছে বলে জানান ওয়াং জুন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য সীমাবদ্ধতার কারণগুলো তৈরি হচ্ছে। আগামী মাসে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়াতে যাচ্ছে। ফলে চীনের জন্য নীতি আরো সহজ করার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে অথনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিতের কাজ করছে পিবিওসি। অপ্রত্যাশিতভাবে ব্যাংকটি ২০২০ সালের এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো মধ্যমেয়াদি ঋণে সুদের হার এবং বেঞ্চমার্ক সুদের হার কমিয়েছে।

এনবিএসের একজন জ্যেষ্ঠ পরিসংখ্যানবিদ ঝু হং নভেম্বর ডিসেম্বরে শিল্প খাতের মুনাফা প্রবৃদ্ধিতে তীব্র মন্দার কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে, উৎপাদন উচ্চসংখ্যক লোকসানি সংস্থাগুলো অপারেশনাল চাপের মুখোমুখি হয়েছে। এটি উদ্বেগের কারণ। তিনি বলেন, পরবর্তী ধাপে আমরা কর ফি কমানোর পাশাপাশি কাঁচামাল সরবরাহ দাম স্থিতিশীল করার জন্য ব্যবস্থা নেব। এসব পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠানগুলোর সমস্যা মোকাবেলায় সহায়তা করবে।

গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনা অর্থনীতি শতাংশ বেড়েছে। বাড়ার হারও দেড় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত সপ্তাহে সরকারের মন্ত্রিসভার একজন উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছর অর্থনীতি দশমিক শতাংশ বাড়তে চলেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন