ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ : টাইগ্রেতে ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

বণিক বার্তা অনলাইন

ইথিওপিয়ার গৃহযুদ্ধে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা টাইগ্রেতে ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অপুষ্টি, ক্ষুধা, সংক্রামক-অসংক্রামক রোগের শিকার হয়ে মৃত্যুর এসব ঘটনা ঘটে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) খবরে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইথিওপিয় সরকারি বাহিনীর অবরোধের কারণে ব্যাপক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে টাইগ্রে অঞ্চলে। গত বছরের জুনে এ অবরোধ দেয়া হয়। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত করা চার মাসের জরিপ থেকে এ মৃত্যুর পরিসংখ্যান বের করেছে এপি।

টাইগ্রের স্বাস্থ্য ব্যুরো ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবরের পর্যন্ত টাইগ্রেতে ৫ হাজার ৪২১ জন মানুষের মৃত্যু হয়। এ চার মাসে প্রায় ১ হাজার ৫০০ মানুষ অপুষ্টিতে মারা গেছেন। এরমধ্যে ৩৫০ জনেরও বেশি ছোট শিশু রয়েছে। এর সবগুলো মৃত্যুই অবরোধ সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

টাইগ্রের স্বাস্থ্য ব্যুরোর প্রধান হ্যাগোস গোডেফে গত বছরের শেষের দিকে এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে উদ্বেগজনকভাবে মৃত্যু হার বাড়ার কথা বলেন। তিনি জানান, ওষুধ শেষ বা এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে বেশিরভাগ মৃত্যু ঘটেছে। সহজে প্রতিরোধযোগ্য জলাতঙ্কের মতো রোগগুলোর চিকিৎসা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মৃত্যুর কারণগুলো অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এত মৃত্যু তার জীবনে দেখা সবচেয়ে খারাপ সময়গুলোর মধ্যে একটি বলেও মন্তব্য করেন গোডেফে।

স্বাস্থ্য ব্যুরো ও অন্যান্য সংস্থাগুলো বলছে, যোদ্ধাদের কারণে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ভেঙে পড়েছে। অপুষ্টি, সংক্রামক-অসংক্রামক রোগই এত মৃত্যুর কারণ।

গোডেফে বলেন, যুদ্ধের আগে টাইগ্রেতে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা তীব্র অপুষ্টিতে থাকলেও এ হার ছিল ২ শতাংশের কম। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর এটি ৭ শতাংশের উপরে উঠে যায়।

গত জুনে এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে টাইগ্রে বাহিনী। এরপর ইথিওপিয়ার সরকার টাইগ্রেতে খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসা সরবরাহ, নগদ অর্থ ও জ্বালানীর প্রায় সমস্ত দিক বন্ধ করে দেয়। অঞ্চলটিতে প্রয়োজনীয় সরবরাহের তুলনায় ১৫ শতাংশেরও কম সহায়তা প্রবেশ করছে, যা ইথিওপিয়ার সরকারের বাস্তব মানবিক অবরোধ বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।

২০২০ সালের নভেম্বরে টাইগ্রে ও ইথিওপিয়ান বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধ এখনো চলমান রয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, যুদ্ধে সবপক্ষই যুদ্ধাপরাধ করছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন