বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে নৈরাশ্যবাদীদের সব ভ্রান্ত ধারণাকে অমূলক প্রমাণ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। গতকাল জাতীয় সংসদের ১৬তম অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের (মানিকগঞ্জ-) এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কথা বলেন সংসদ নেতা। স্পিকার . শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

টাঙ্গাইল- আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলামের (টিটু) অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পরই তার সরকার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিনামূল্যে টিকা প্রদানকে অগ্রাধিকার দেয় এবং টিকা আবিষ্কার ব্যবহারের অনুমতি প্রদানের আগেই টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়। ফলে দেশব্যাপী গত বছরের ফেব্রুয়ারি বিনামূল্যে কভিড টিকাদানের কার্যক্রম শুরু হয় এবং অদ্যাবধি তা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশব্যাপী টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত কোটি ৯১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং কোটি ৭০ লাখ ২০ হাজার ৮৩৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজসহ মোট ১৪ কোটি ৬১ লাখ ৮৪ হাজার ৮১২ জনকে কভিড-১৯ টিকা দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের মতো দেশের কভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকারও চলমান কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় বুস্টার ডোজ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়ে ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপ, বাংলাদেশের সুপারিশ অনুযায়ী এবং করোনাভাইরাস টিকাদান কার্যক্রম বাস্তবায়ন-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির অনুমোদনক্রমে দেশব্যাপী গত ২৮ ডিসেম্বর বুস্টার ডোজ প্রদান শুরু হয়েছে।

বর্তমানে দেশে ষাটোর্ধ্ব জনগোষ্ঠী, সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী বিদেশগামী কর্মীদের বুস্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে। ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত লাখ ৪১ হাজার ২৬৫ জনকে বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, কভিড-১৯ টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের পর যাদের ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরই বুস্টার ডোজ দেয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হওয়ার পর তার সরকার বৈশ্বিক বাণিজ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর বৈশ্বিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় রফতানি বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার প্রেফারেন্সিয়াল মার্কেট অ্যাকসেস অ্যান্ড ট্রেড এগ্রিমেন্ট বিষয়ে কৌশলপত্র এবং সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কার্যক্রম গ্রহণ।

লক্ষ্যে চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ), মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) সম্পাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ১০টি দেশ তিনটি জোটের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীন, মালয়েশিয়া এবং আশিয়ান অর্থনৈতিক জোট ইউরেশিয়া অর্থনৈতিক জোট। এছাড়া তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকা, মরক্কো, মরিশাস, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, সিয়েরা লিয়ন, কেনিয়া জিসিসিভুক্ত দেশের সঙ্গে পিটিএ/এফটিএ/সিইপিএ নেগোসিয়েশন কার্যক্রম পরিচালনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন