নীলফামারীতে ৪৮ দিনের মাথায় আবারো রেল ক্রসিংয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকাল ৭টার দিকে একটি অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় চার অটোরিকশা যাত্রী নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই উত্তরা ইপিজেডের নারী শ্রমিক। আহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ও দুজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি চিলাহাটী অভিমুখে যাচ্ছিল। এ সময় অটোরিকশাটি আটজন যাত্রী নিয়ে নীলফামারীর দারোয়ানী রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন একটি অরক্ষিত রেল ক্রসিং পার হচ্ছিল। চারদিক ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় অটোরিকশাচালক ট্রেনটি দেখতে পাননি। এ সময় ট্রেনটি ধাক্কা দিয়ে অটোরিকশাটিকে বেশ কিছুদূর হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার পর যাত্রীসহ রেল লাইন থেকে প্রায় ২০ ফুট দূরে ছিটকে ফেলে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সদর উপজেলার সোনারায় ধনীপাড়া এলাকার আশরাফ আলীর স্ত্রী সেফালী বেগম (৪২)। এ ছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান একই এলাকার মোশারফ আলীর স্ত্রী রোমানা বেগম (২৫), আলতাফ
হোসেনের স্ত্রী মিনা পারভীন (২২) ও বেলাল হোসেনের স্ত্রী সাহেরা বেগম (৩২)।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. কাজী আব্দুল মোমিন জানান, হাসপাতালে আসা আটজন রোগীর মধ্যে সাহেরা বেগম ও রোমানা বেগম হাসপাতালে আনার পথে মারা যান। ভর্তি পাঁচজনের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে মিনা পারভীন মারা যান। নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সোনারায় এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে অহিদুল ইসলাম (২৮), নজরুল
ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা (২৭), অটোবাইক
চালক আপন (২৮) এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সায়েদ আলীর স্ত্রী কুলসুমা বেগম (৩০) ও গোলাম মোস্তফার স্ত্রী নাসরীন আক্তার (৩৫)।
নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ দুর্ঘটনার ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ের পিডব্লিউ সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে রেল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।
নিহতদের স্বজনদের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর সোনারায় ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের বউ বাজারে অরক্ষিত রেল ক্রসিংয়ে একই পরিবারের তিন শিশুসহ চারজন নিহত হয়। সৈয়দপুর চিলাহাটী ৫২ কিলোমিটার রেলপথে ৩৬টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে তিনটি অবৈধ ও ২১টি অরক্ষিত। এসব রেল ক্রসিংয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
