পুলিশ সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি

জনগণকে দ্রুত সেবাদান পুলিশের প্রধান দায়িত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, জনগণকে দ্রুততম সময়ে পুলিশি সেবাপ্রদান পুলিশের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজীকরণে পুলিশ কর্মকর্তাদের আরো তত্পর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। সাধারণ মানুষ বিপদে পড়েই আইনি সেবা পেতে পুলিশের কাছে আসে। আপনারা এসব বিপদাপন্ন মানুষের সমস্যা অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনবেন, তাদের আন্তরিকতার সঙ্গে আইনি সেবা দিতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করবেন না।

পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং এবং বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে আরো নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে, তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব মানবিক পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আপনাদের আন্তরিকভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়িয়ে এগুলোকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার জন্য আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের পর্যায়ে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন বিদেশী পুলিশ কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে এসে প্রশিক্ষণ গ্রহণে আগ্রহী হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গবেষণা, উদ্ভাবন এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আত্তীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন নতুন গবেষণা উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশকে সমৃদ্ধ হতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ পুলিশে একটি থিংক ট্যাংক থাকা প্রয়োজন। থিংক ট্যাংক বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম তদন্তে বৈজ্ঞানিক কৌশলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি তথা নিয়োগ, পদোন্নতি, পদায়ন, প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কার্যক্রমে উত্কর্ষ সাধনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

সাইবার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, বিকাশমান প্রযুক্তির বর্তমান বিশ্বে অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাইবার অপরাধ অতি দ্রুত বাড়ছে। সাইবার অপরাধীরা দেশীয়, আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক এবং বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে ধরনের অপরাধ করছে, যা দমন করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

জঙ্গি দমন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, জঙ্গি দমন বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রধান সাফল্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

মাদককে একটি বড় সামাজিক ব্যাধি হিসেবে আখ্যায়িত করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের তরুণ সমাজের একটি অংশ মাদকসংক্রান্ত অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কিছু অসাধু কর্মচারীরাও অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রায়ই গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ হয়, যা খুবই অনভিপ্রেত দুঃখজনক। যুবসমাজকে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। পুলিশকে এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নিয়ে আরো বেশি সক্রিয় তত্পর হতে হবে। প্রয়োজনে শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন প্রান্তে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবরা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক . বেনজীর আহমেদ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন